খবর৭১ঃসোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন অন্যতম অভিযুক্তরা। ঘটনার পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও এসব অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হওয়া পুলিশের অবহেলার কারণ বলে মনে করেছেন নুসরাতের স্বজন ও ফেনীর সচেতন মহল।
বুধবার (১০ এপ্রিল) রাতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর মুকছুদ আলম, অধ্যক্ষ সিরাজউদৌলার অন্যতম সহযোগী নুর উদ্দিনসহ পাঁচ আসামি এখনও গ্রেফতার হয়নি। তারা গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নুসরাতের পরিবার, সহপাঠী ও স্থানীয়রা ।
এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন সোনাগাজীর পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের ওই মাদ্রাসার ছাত্র শাহাদাত হোসেন শামীম, জাবেদ হোসেন, ও হাফেজ আবদুল কাদের।
ঘটনার অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২৭ মার্চ নুসরাতকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদৌলা গ্রেফতারের পরদিনও সোনাগাজী পৌর শহরে কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মুকছুদুল আলমের ইন্ধনে একটি বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে এজাহারভুক্ত নুর উদ্দিন, শামীম, জাবেদ, হাফেজ কাদের সেখানে উপস্থিত হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজউদৌলার নামে দায়ের করা মামলা তুলে নেওয়ার দাবি জানান। মামলা তুলে নিয়ে মুক্তি না দিলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও হুমকি দেন তারা।
এরপর তারা ওই মামলার বাদী ও নির্যাতিতা নুসরাতের মা ও বড় ভাইকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে হুঁমকি-ধমকি দেন। গত ৮ এপ্রিল নুসরাতকে হত্যাচেষ্টায় দায়ে করা মামলার এজাহারে এমনটাই উল্লেখ করেন মামলার বাদী ও নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান।
পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনার পর থেকে এসব অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও পুলিশ তাদের আটক করেনি। পরে নাম উল্লেখ করে মামলা দায়েরের পর থেকে তারা আত্মগোপনে রয়েছেন।
এদিকে ফেনীর পুলিশ সুপার (এসপি) জাহাঙ্গীর আলম সরকার সাংবাদিকদের বলেন, মাদ্রাসাছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। ইতোমধ্যে মামলার প্রধান আসামিসহ নয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকাশে-অপ্রকাশ্যে সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
এজাহারভুক্ত বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান এসপি জাহাঙ্গীর।
এ ঘটনায় গ্রেফতার অধ্যক্ষ সিরাজউদৌলাকে সাতদিনের ও ওই মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আবছার এবং নুসরাতের সহপাঠী আরিফুল, নুর, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ও শাহিদুল ইসলামকে পাঁচদিন করে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া অধ্যক্ষ সিরাজউদৌলার ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি ও জোবায়ের আহম্মেদকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড চাইলে আদালত বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) শুনানির দিন ধার্য করে আসামিদের কারাগারে পাঠান।