যে কারণে হয় ঘুম চিন্তা

0
292

খবর৭১ঃদুশ্চিন্তা শুধু জেগে থাকা অবস্থায় হয় যারা এমনটা মনে করেন তাদের ধারণা একেবারেই ভুল। কারণ ঘুমের মধ্যেও হতে পারে দুশ্চিন্তা, যা শরীরের জন্য মারাত্নক ক্ষতিকর। ভারতীয় মনোবিদ সঞ্জয় গর্গ ঘুম দুশ্চিন্তার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বলেন।

ঘুমের ধরন দুই প্রকার। ননরেম ও রেম স্লিপ।

ননরেম (নন র‍্যাপিড আই মুভমেন্ট) স্লিপঃ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হওয়ার আগে ধাপে ধাপে একজন এই পর্যায়ে যায়। প্রথমে হালকা ঘুম, তখন চোখ, হাত-পা নড়তে থাকে। তারপরের ধাপে ঘুম একটু গভীর হয়, হার্ট রেট ও শরীরের তাপমাত্রা কমতে থাকে। এরপর তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থা থেকে ঘুম গভীর হয়। এই অবস্থায় শারীরিক কাজকর্ম চলতে থাকে কিন্তু মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে না। এই ধরনের ঘুমের মধ্যে মাঝে মধ্যে হালকা স্বপ্ন দেখি আমরা। কিন্তু তা ঘুম থেকে ওঠার পর মনে থাকে না। এই ধরনের ঘুমের মধ্যে হালকা স্বপ্ন দেখলেও মনের মধ্যে কোনও দুশ্চিন্তা ঘুমন্ত অবস্থায় চলতে থাকে না। এটি ঘুমের স্বাভাবিক লক্ষণ।

রেম (র‍্যাপিড আই মুভমেন্ট) স্লিপঃ

এই ধরনের ঘুমের সমস্ত পর্যায়ে চোখ, হাত, পা বা শরীরের মুভমেন্ট অনেক বেশি থাকে। দেখা যায়, কেউ আবার ঘুমন্ত অবস্থায় হাঁটাচলাও শুরু করে। এই ধরনের ঘুমের ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক অত্যন্ত বেশি সক্রিয় থাকে। ঘুমের মধ্যে মাথায় সবরকম চিন্তা কিংবা দুশ্চিন্তা ঘুরতে থাকে, স্বপ্ন দেখার পর ঘুম ভাঙলে মনে সেই চিন্তা পুরোটাই থেকে যায়।

চিন্তার ঘুমে কী ধরনের বিপদ হয়

স্মৃতিশক্তি লঘুঃ ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, কোনও নতুন কিছু শেখার পর ভাল ঘুম অত্যন্ত জরুরি। ঘুমের মধ্যে মস্তিষ্ক ঠিক করে কোন স্মৃতিকে রাখবে আর কোনটা বাতিল করবে। যদি দুশ্চিন্তা, দুঃস্বপ্ন বেশি থাকে সেক্ষেত্রে কোনও জিনিস শিখতে বা বুঝতেও নানা সমস্যা দেখা দেয়।

গঠনমূলক চিন্তায় বাধাঃ সারাদিন যা ঘটনা ঘটে তা আমাদের মনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে। মনের মধ্যে কোন ঘটনা বেশি স্থান জুড়ে থাকবে আর কোনটা অল্প স্থান জুড়ে তা কিন্তু মস্তিষ্কই ঠিক করে। ঘুমিয়ে চিন্তার কারণে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব ঘটলে মস্তিষ্কের এই কর্মক্ষমতাও হ্রাস পেতে থাকে। তখন স্বভাবে উদাসীনতা প্রকাশ পায়। ফলে গঠনমূলক ভাবনাচিন্তা করার ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

ঘুম চিন্তার উৎসঃ এই ধরনের আধো ঘুমের পিছনে মূল দায়ী মানসিক নানা কারণ। ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন, ইউএসএ এই ব্যাপারে বিভিন্ন কারণ দেখিয়েছে।

চাপা উত্তেজনা (টেনশন)

পুরনো কোনো ঘটনা নিয়ে ভাবনা

ভবিষ্যতের চিন্তা

দায়িত্বের চাপ

কিভাবে রক্ষা পাবেন

প্রতিদিন যোগব্যায়াম করুন।

ধ্যান করলে অনেক লাভ হবে।

চা, কফি কখনো রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে খাওয়া যাবে না।

মদ্যপান বা ড্রাগ নেবেন না।

যে দুশ্চিন্তাগুলোর কারণে মনের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে, নিজেই তা কমাতে চেষ্টা করুন।

ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ৪৫ মিনিট আগে, টিভি, মোবাইল, ল্যাপটপ বন্ধ করে দিন।

রাতে ঘুম না এলে বেশিক্ষণ শুয়ে না থেকে উঠে পড়ুন, কোনও হালকা বিষয়ের উপর বই পড়ুন। বার বার ঘড়ি দেখবেন না।

সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে হতে থাকলে অবশ্যই সাইকিয়াট্রিস্ট বা স্লিপ স্পেশালিস্টের পরামর্শ নিন।
সূত্র সংবাদ প্রতিদিন
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here