খবর৭১:যুদ্ধকালীন বা সংকটে দেশের সব আধাসামরিক ও সহায়ক বাহিনী সশস্ত্র বাহিনীর কর্তৃত্বে অপারেশনাল কমান্ডে থাকবে। কোন প্রেক্ষাপটে সংকটকাল বা ক্রান্তিকাল হিসেবে ধরা হবে, তা ঠিক করবেন সরকারপ্রধান।
এসব বিধান যুক্ত করে জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতিমালা-২০১৮-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ নীতিমালা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
সচিব জানান, সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধকালীন মোতায়েন কিভাবে হবে, সামরিক ও অসামরিক সম্পর্ক কী হবে, সশস্ত্র বাহিনী ও নাগরিকদের মধ্যে কী সম্পর্ক বজায় থাকবে, প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বা সশস্ত্র বাহিনীর মূল সক্ষমতা কী হবে—এসব বিষয়ে নীতিমালায় বিস্তারিত বলা আছে। নিরাপত্তাবিষয়ক জাতীয় কমিটি ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি কিভাবে হবে, তাও এ নীতিমালায় বলা আছে।
মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, অনুমোদিত নীতিমালায় গণমাধ্যমের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছে। গণমাধ্যম ও সামরিক সম্পর্ক অত্যন্ত সংবেদনশীল। কারণ এ দুটি প্রতিষ্ঠান জাতীয় সক্ষমতার উপাদান।
উভয় প্রতিষ্ঠানই নিজ নিজ অবস্থান থেকে জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় ভূমিকা পালন করে।
নীতিমালায় এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, সচেতন নাগরিক সশস্ত্র বাহিনীর ভালো বন্ধু। জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত অনুমোদিত তথ্য দায়িত্বশীল প্রচারণায় গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সুতরাং বন্ধুপ্রতিম গণমাধ্যম-সামরিক সম্পর্ক অপরিহার্য।
প্রতিরক্ষা নীতিমালায় বলা হয়েছে, যুদ্ধকালীন সামরিক বাহিনীর অপারেশনাল কমান্ডে থাকবেন আধা-সামরিক ও সহায়ক বাহিনীর সদস্যরা। অর্থাৎ বিজিবি, কোস্ট গার্ড, বিএনসিসি, পুলিশসহ অন্যান্য প্রতিরক্ষা বাহিনী সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল কমান্ডে থাকবে।
বর্তমানে নিরাপত্তাবিষয়ক জাতীয় কমিটির প্রধান হলেন প্রধানমন্ত্রী। অনুমোদিত নীতিমালায়ও একই বিধান রাখা হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি পরিচালিত হবে। বরাবরই এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এখনকার মতোই সংসদ কর্তৃক গঠন করা হবে।
সচিব জানান, বাংলাদেশের সংবিধানে উদ্ধৃত মূল্যবোধসংবলিত রাষ্ট্রের মৌলিক উদ্দেশ্য ও আদর্শিক রূপরেখা গঠন করে, যা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বৈদেশিক নীতি এবং সার্বিক জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে মূল ভিত্তি প্রদান করে।
নীতিমালার শেষাংশে বলা হয়েছে, রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ৭ মার্চ ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবাইকে প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল—এ উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার ডাক দিয়ে জনসাধারণকে নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এই ধারা অব্যাহত আছে।
খবর৭১/জি: