যুক্তফ্রন্ট জাতীয় সরকার গঠন করবে: বি. চৌধুরী

0
362

খবর ৭১: একাদশ নির্বাচনের পরে পাঁচ বছরের জন্য জাতীয় সরকার চায় বিকল্পধারার নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট। বিকল্পধারা আয়োজিত ইফতার মাহফিল পূর্ব বক্তব্যে দলটির সভাপতি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এ দাবি জানান। তিনি বলেন, যুক্তফ্রন্ট সৎ নেতৃত্বের মাধ্যমে তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির একটি মঞ্চ। যা অন্য ২টি রাজনৈতিক শক্তিকে ভারসাম্যের মধ্যে রাখতে পারবে। জনগণ ভোট দিলে যুুক্তফ্রন্ট জাতীয় নির্বাচনের পর একটি জাতীয় সরকার গঠনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নির্বাচনের পরে দেশের মানুষকে শান্তি ও নিরাপত্তা দেয়া এবং দেশের অগ্রগতির জন্যে আমরা আগামী ৫ বছরের জন্যে একটি জাতীয় সরকার চাই।
তাহলে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা, অগ্নিসংযোগসহ কোন ধরনের অন্যায়-অত্যাচার-অবিচার হবে না। কতগুলো ম্যাচুরড ব্রেইন (পরিপক্ক মস্তিস্ক) একত্রিত করলে হয়তো আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ পাবো। যুক্তফ্রন্ট গঠনের কারণ তুলে ধরে ফ্রন্টের আহবায়ক বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা নিউক্লিয়াস গঠন করেছি, যুক্তফ্রন্ট গঠন করেছি। তার মাধ্যমে আমরা একটা নেতৃত্ব দিতে চাই। যে নেতৃত্বে চরিত্র থাকবে, সততা থাকবে এবং কথা বলার দাম থাকবে। তিনি বলেন, আমরা আজকে শক্তির উত্থান চেয়েছি। সে শক্তির মাধ্যমে আমরা সমস্ত রাজনৈতিক দল বিশেষ করে সরকারি দলকে সাবধান করে দিতে পারবো- দেশের ভবিষ্যৎ শুধুমাত্র জনগণের হাতে চলে যাবে, আপনারা কিছুই করতে পারবেন না। ঢাকায় ২০ ভাগ ভোটারের বসবাস হলেও বিরোধী দলকে সভা সমাবেশ করতে দেয়া হয় না। বিরোধী দলকে সমাবেশ করতে না দেয়া ও হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে সেটা কোনোভাবে সহ্য করা যায় না। বি. চৌধুরী বলেন, মামলা করে রাজনীতিকদের হয়রানি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, রুল অব লÑ আছে কী? নির্বাচনী প্রক্রিয়া কিভাবে ট্যাম্পার করে দেখিয়ে দিয়েছেন। ২০১৪ সালে দেখেছি, এবার খুলনায় দেখলাম। এভাবে চলতে পারে না, দেশের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। বি. চৌধুরী বলেন, এ থেকে উত্তরণের অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। আমরা এটা আদায় করবো। সংসদ ভেঙে দিতে হবে ১০০ দিন আগে। আমরা আর নির্বাচনের তামাশা দেখতে চাই না। সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে নির্বাচনে। সাহসী নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জাতির সামনে আজকে যে সংকট সেই সংকট কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়। এই সংকট আজকে পুরো দেশের, পুরো জাতির। এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে হলে ভয়াবহ স্বৈরাচার যারা আমাদের সমগ্র অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছেÑ তাদের পরাজিত করতে হবে। তাদের যদি পরাজিত করতে হয় তাহলে ছোট-খাটো সমস্যাগুলো দূর করে আমাদেরকে একটা ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সে ঐক্যের মধ্যদিয়েই আমরা এই ভয়াবহ শক্তিকে পরাজিত করতে পারবো। তিনি বলেন, জনগনের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো। জনগণ আশান্বিত হবে এবং জনগণের যে প্রত্যাশা সত্যিকার অর্থে একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবো। কারাবন্দি খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকেই দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন আবার আপীল বিভাগে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে, স্থগিত করে দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর পর থেকেই এই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কারাগারে তাকে আটকিয়ে রাখার জন্যই এই ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া নিঃসন্দেহে এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোভাগের নেতা। আমি এ ফোরাম থেকে আবারও তার মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সর্বশেষ এই কয়দিন ১১১ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এটা সত্যি সত্যি একটা মৃত্যুর মিছিল বলতে পারেন। সেই মিছিল চলছে, থামছে না। আমরা অনেক অনুনয়-বিনয় ও প্রতিবাদ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনার এমপিকে যদি প্রমাণ ছাড়া গ্রেপ্তার করা না যায়, তাহলে এদের নামে অভিযোগ আছে তারও কোনো প্রমাণ নেই। তাহলে এদের গুলি করে মারবেন কেনো? মান্না বলেন, সরকার বলছেন তারা যুদ্ধ করছেন। নিরস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর এরকম প্রকাশ্য ঘোষণা বাংলাদেশই নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম। আমরা যারা এখানে আছেন তারা এই হত্যার নিন্দা করি। তিনি বলেন, আমি প্রথমে মির্জা আলমগীরের সঙ্গে একমত পোষন করে বলতে চাই- কবরেরও ঘুম ভাঙে জীবনের দাবি আজ যতই বিরাট। জীবন রক্ষার জন্যে, জীবন বাঁচাবার জন্যে সমস্ত মানুষকে এক হতে হবে এটা ঠিক। বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশে করে তিনি বলেন, ফখরুল ভাইÑ কথা কিন্তু আমাদের অনেক আছে। কারণ এই যে লড়াই করবো একদিন একটা ভোট হবে, ভোটের পরে জিতে ব্যাপক ভোট পেয়ে আপনারা সরকার গঠন করবেন। তখন আর আমাদের চিনবেন না যদি এমন হয়? মান্না বলেন, আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা ভালো নয়। আপনাকে কষ্ট দেবার জন্য বলছি না, অহেতুক খোঁচাও দিচ্ছি না। শুধু এটিই বলছি, এটা বিবেচনায় রাখবেন। একই সঙ্গে লড়াই করতে চাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি কোনো শর্তছাড়া বেগম জিয়ার মুক্তি দেয়া উচিৎ। সরকার যদি অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন চায়। আর অংশগ্রহনমূলক নির্বাচনের কোনো বিকল্পও নেই। এর বিকল্প যা কিছু হবে তা দেশের সর্বনাশ ঢেকে আনবে। গুলশান-২ এর অল কমিউনিটি ক্লাবে বাংলাদেশ বিকল্পধারার ইফতারে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল ও যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার ওমর ফারুক বক্তব্য দেন।
খবর ৭১/ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here