মিত্রদের ওপর আরো শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের

0
244

খবর৭১: বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটেছে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের। অন্যান্য দেশের নেতাদের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধ তুঙ্গে পৌঁছেছে। নতুন করে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন তিনি।

আগে থেকেই এবারের জি-৭ সম্মেলন নিয়ে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সদস্য দেশগুলো বৈঠকে বেশকিছু বিষয়ে আলোচনা করে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল মিত্রদেশগুলোর ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। তবে এ বিষয়ে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি।

ট্রাম্প কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিরুদ্ধে অসাধুতার অভিযোগ এনেছেন। নতুন করে ‘অটো’(মোটরগাড়ি) শিল্পের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন তিনি।

ট্রাম্প জি-৭ সদস্যদের যৌথ বিবৃতিতে যোগ না দেয়ার ঘোষণা দেয়ার পরই তা নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সম্মেলন ছেড়ে আগেভাগেই বেরিয়ে যান তিনি। এতে করে মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিষয়ক বিরোধ আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে।

ট্রাম্প পরে এক টুইটে জানান, আমাদের জি-৭ সম্মেলনের সময় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো খুবই বিনম্র ও অনিচ্ছুক আচরণ করেছে। আমি চলে আসার পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন যে, মার্কিন শুল্ক আরোপ অনেকটা অপমানজনক ও তিনি চাপ সহ্য করবেন না। খুবই দুর্বল ও অসৎ। আমাদের দুগ্ধজাত পণ্যের ওপর তাদের আরোপিত ২৭০ শতাংশ শুল্কের জবাবেই আমরা শুল্ক আরোপ করেছি।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো জানান, আগামী মাসে ট্রাম্পের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেবে কানাডা।

ট্রুডো বলেন, ‘আমরা কানাডীয়রা ভদ্র। আমরা যৌক্তিক। কিন্তু আমরা ধাক্কা সহ্য করবো না।’ উল্লেখ্য, সম্মেলনে আয়োজক কানাডা কয়েকদিন আগে মন্তব্য যে, প্রতিবেশী দেশটি ও ইউরোপের ওপর ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর যে আমদানি শুল্ক বসিয়েছে, তা ‘অবৈধ’। এই শুল্ক তুলে নেয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ নেই বলেই মনে হচ্ছে।

ট্রাম্পের টুইটের জবাবে ট্রুডোর কার্যালয় বলেছে, ‘আমরা এই সম্মেলনে যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেসবের দিকেই আমরা মনোনিবেশ করবো। প্রেসিডেন্টের (ট্রাম্প) সঙ্গে জনসম্মুখে বা ব্যক্তিগত আলোচনায় বলা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী (ট্রুডো) এমন কিছুই বলেননি।’

সম্মেলনে ট্রাম্প প্রথমে বিতর্কের শুরু করেন, রাশিয়াকে পুনরায় জি-৭ এর সদস্যদেশ হিসেবে গ্রহণ করে নেয়ার প্রস্তাব দিয়ে। কিন্তু অন্যান্য দেশ তার এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। কিন্তু ট্রাম্প তখন নেতাদের সঙ্গে কোন প্রকারের বিবাদের কথা অস্বীকার করেন। জানান, বাকি সদস্যদের সঙ্গে তার সম্পর্ক খুবই ভালো রয়েছে।

পরবর্তীতে যৌথ সম্মেলন থেকে তার প্রতিনিধিকে সরে আসার নির্দেশ দেন ট্রাম্প। সম্মেলনে বাকি নেতাদের সঙ্গে বেশকিছু বিষয়ে একমত হতে পারেননি ট্রাম্প। এর মধ্যে রয়েছে জলবায়ু বিষয়ক চুক্তি, ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি ও নাফটা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি।

তবে যৌথ বিবৃতিতে বিবাদের ছাপ পাওয়া যায়নি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি ও জাপান অবাধ, সুষ্ঠু ও সকল পক্ষের জন্য লাভজনক বাণিজ্যের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আমরা বাণিজ্যিক শুল্কের বাঁধা ও শুল্কবিহীন বাঁধা ও ঘাটতি কমানোর চেষ্টায় আছি। কিন্তু সম্মেলন থেকে আগে বিদায় নিয়ে উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকের জন্য সিঙ্গাপুরে যাবার সময় বিবৃতির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে টুইট করেন ট্রাম্প।

নাম না প্রকাশের শর্তে এক ইউরোপীয় কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বিবৃতির দেয়া বক্তব্য মেনে চলবো।’ ট্রাম্পের টুইটের আগে সম্মেলন নিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো বলেন, সম্মেলন সফল হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘সম্মেলনে আমাদের তর্ক সন্তোষজনক ছিল। এটা সাম্প্রতিক উত্তেজনা থামিয়ে দিয়েছে। এতে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান এক পাক্ষিক পদক্ষেপ ও অসহযোগিতা শেষে আলোচনার সুযোগ হয়েছে।’
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here