খবর৭১:মালয়েশিয়ায় পাসপোর্ট জালিয়াতচক্রের ২৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। তাদের মধ্যে জালিয়াত চক্রের হোতা মোজাম্মেল হক (৫০) সহ ১৮ বাংলাদেশীও রয়েছেন। মোজাম্মেল হকের বাড়ি চট্টগ্রামে। ইমিগ্রেশনের দাবি এটি মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় পাসপোর্ট জালিয়াতির সিন্ডিকেট এটি।
মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা যায়, ৫ মার্চ (সোমবার) ক্লাং নামক স্থান থেকে তাদের আটক করা হয়। ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুকে সেরি মোস্তাফার আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সোমবার রাতে ক্লাং উপত্যকায় ১৮জন বাংলাদেশীকে পাসপোর্ট জালিয়াতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন মহিলাও রয়েছেন। তাদের সাথে ২ জন পাকিস্তানি, ৪ জন ইন্দোনেশিয়ান মহিলা, একজন ফিলিপাইন মহিলা এবং একজন স্থানীয় নাগরিককেও রয়েছেন।
মোস্তার আলী বলেন, গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে দুটি গাড়ি, সহস্রাধিক জাল পাসপোর্ট, ইমিগ্রেশন রাবার স্ট্যাম্প, বিদেশী ভিসা স্টিকার, চারটি কম্পিউটার, একটি প্রিন্টার এবং চারটি পেনড্রাইভ উদ্ধার করা হয়।
দাতুক সেরি মোস্তাফার আলী সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি বাংলাদেশের জাল পাসপোর্ট তৈরির পাশাপাশি মালয়েশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের পাসপোর্ট ও ভিসা জাল করে আসছে। কুয়ালালামপুরের শ্রী পেটেলিংয়ে ভাড়া বাসাতে পরিবার নিয়ে বসবাস করতো ৫০ বছর বয়সী মাস্টারমাইন্ড মোজাম্মেল হক। তিনি যে বাসায় থাকতেন তার পাশের বাসাতে থাকতো পরিবার। সেখানেও পাসপোর্ট তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া যায়। পরে তার পরিবারের সদস্যদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছে ইমিগ্রেশন বিভাগ।
মোজাম্মেল তার জালিয়াতি লুকানোর জন্য সে নামে মাত্র আরও বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেছে বলে জানান মোস্তাফার। সে ২০০৫ সালে ভ্রমণ ভিসায় পরিবার নিয়ে মালয়েশিয়ায় বেড়াতে আসে এবং জালিয়াতির মাধ্যমে এখানেই থেকে যায়।
মোস্তাফার আলী বলেন, ‘পাসপোর্ট তৈরির আগে সে মালয়েশিয়ায় সাধারণ বীমা, টেক্সটাইল, রেস্তোরাঁয় চুক্তিমূলক কাজ এবং তার অপরাধ ঢাকার জন্য সামাজিক কাজকর্ম চালু করে।’
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, সিন্ডিকেটটি নকল বাংলাদেশী শিক্ষা সার্টিফিকেট তৈরি করে বিভিন্ন কাজে যোগদানের জন্য বাংলাদেশীদের সহযোগিতা করে। এই সিন্ডিকেট বাংলাদেশী বা অন্যদেশের নাগরিকদের মালয়েশিয়ায় নিয়ে এসে জাল ভিসা তৈরি করে কানাডা, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ড, কোরিয়া, জাপানসহ আরও কয়েকটি দেশে তাদের পাঠানোর ব্যবস্থা করে।’
মোস্তাফার আলী বলেন, দুই মাস কড়া নজরদারির পর সোমবার এ অভিযান চালানো হয় এবং আমরা সফল হয়েছি। গত দুই বছর তারা খুব সক্রিয়ভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং লাখ লাখ রিঙ্গিত তারা আয় করেছে। আমরা এখনও তদন্ত অব্যাহত রেখেছি এই জন্য যে, এ ঘটনার সাথে আর কারা কারা জড়িত আছে এবং অন্য যেসব ব্যবস্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলো কিভাবে পরিচালিত হচ্ছে? আমরা পর্যায়ক্রমে সব খুঁজে বের করবো।’
খবর৭১/জি: