মারা গেছে আলোচিত সেই শিশুটি

0
295

খবর৭১ঃযুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মুখ হয়ে উঠেও জীবনের লড়াইটা শেষ পর্যন্ত হেরে গেল ইয়েমেনের শিশু আমাল হুসেন।

গত সপ্তাহে তাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো এক মার্কিন দৈনিক। এরপরই ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছিল তার ছবি। না-খেতে-পাওয়া, কঙ্কালসার চেহারার সাত বছরের আমাল এই ক’দিনে যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইয়েমেনের মুখ হয়ে উঠেছিল।

বৃহস্পতিবার তার পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, আসলাম শহরে এক শরণার্থী শিবিরে আমাল মারা গিয়েছে। এক সাক্ষাৎকারে আমালের মা মরিয়ম আলি বলেছেন, ‘আমার মন ভেঙে গিয়েছে। আমাল খুব হাসিখুশি ছিল। আমার অন্য বাচ্চাদের নিয়ে খুব চিন্তা হচ্ছে।’

দু’চোখে শূন্যতা, পাঁজর বার করা আমালের ছবি ফেসবুকে অন্তত ৪৩ হাজার বার শেয়ার করা হয়েছিল। ছবিটিকে ‘উলঙ্গ, তাই যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ ও অশালীন’ তকমা দিয়ে ব্লক করতে শুরু করেছিলো ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় তোলেন নেটিজেনরা। মর্মান্তিক একটি ছবিকে এ ভাবে ব্লক করে দিয়ে ইয়েমেনের বাস্তবকেই অস্বীকার করা হচ্ছে বলে সরব হন তারা। পরে অবশ্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ফেসবুক।

চূড়ান্ত অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা আমালকে সম্প্রতি ইয়েমেনে জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্বাস্থ্য শিবিরে আনা হয়েছিল। সেখানেই ওই ছবিটি তোলা হয়। আমালের চিকিৎসক জানান, ডায়েরিয়ায় ভুগছিল মেয়েটা। প্রতি দু’ঘণ্টা অন্তর দুধ খাওয়ানো হচ্ছিল। কিন্তু এতটাই অসুস্থ ছিল যে প্রতিবারই তা বমি করে দিচ্ছিল। তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু অর্থের অভাবে শরণার্থী শিবিরেই আমালকে ফিরিয়ে আনে পরিবার। সেখানেই মৃত্যু হয়েছে তার।

আমালের মৃত্যুতে ইয়েমেনের যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য সরাসরি আঙুল উঠছে সৌদির দিকেই। ইয়েমেনের এই দুরবস্থা আসলে সৌদির সঙ্গে ইরানের ছায়াযুদ্ধের ফল। ইরান সমর্থিত হুতি জঙ্গিদের ইয়েমেন থেকে হটাতে ক্রমাগত হামলা চালাচ্ছে সৌদি। তাতে আমেরিকার সমর্থনও রয়েছে।

সৌদির বিমান হামলা থেকে বাঁচতে তিন বছর আগে বাড়ি ছেড়েছিল আমালের পরিবার। জাতিসংঘের বলছে, ইয়েমেনে অন্তত ১৮ লক্ষ শিশু আমালের মতো অপুষ্টিতে ভুগছে।

এ পরিস্থিতি পাল্টাতে সৌদিকে অস্ত্র সরবরাহকারী যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতির ডাক দিয়েছে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তা কার্যকরী করতে হবে বলে জানিয়েছে তারা।

এ নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জিম ম্যাটিস বলেছেন, ‘করছি করব নয়, শান্তির জন্য এবার পদক্ষেপ নিতেই হবে।’

সূত্র: আনন্দবাজার
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here