মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত পাইকগাছার মেধাবী শিক্ষার্থী তিশার মৃত্যু

0
317

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি ঃ
মরণব্যাধি ক্যান্সারের সাথে দীর্ঘদিন সংগ্রাম করে সুস্থ্য হলেও শেষমেষ সামান্য অসুস্থ্যতার কাছে হার মেনে না ফেরার দেশে চলে যেতে হলো পাইকগাছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী নওসিন আক্তার তিশা (১৭)। উপজেলার লস্কর গ্রামের রেজাউল করিম গাজী ও শাহিনা বেগমের মেয়ে তিশা। দুই বোনের মধ্যে তিশা ছিলো ছোট। তিশা মেধাবী হওয়ায় লেখাপড়া নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন দেখতো সে। লেখাপড়া শিখে সে ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার কিংবা ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখতো। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তিশার সব স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেছে। যে স্বপ্ন ভবিষ্যতে আর কখনো পুরণ হবে না। মৃত্যু নামক সত্যের কাছে আত্মসমার্পন করতে হয়েছে মেধাবী এ শিক্ষার্থীর। তার বোন জামাই হযরত আলী জানান, তিশা অনেক মেধাবী ছিল। সে প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি’তে বৃত্তি লাভ করে। ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে তার অনেক বড় স্বপ্ন ছিলো। বাবা-মা, শিক্ষক, সহপাঠি সহ সকলের কাছে সে অনেক আদরের ছিলো। বছর খানেক আগে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার শরীরে মরণব্যাধি ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর এলাকার সকলের সহযোগিতায় চিকিৎসার জন্য তাকে ভারতের ব্যাঙ্গালরে নেওয়া হয়। সেখানে ১১ মাস চিকিৎসা শেষে সম্পূর্ণ সুস্থ্য হলে গত ১৮ সেপ্টেম্বর তাকে বাড়ীতে আনা হয়। বাড়ীতে আসার পর দেড়মাস সে সুস্থ্যই ছিলো। গত এক সপ্তাহ আগে প্রথমে তার দাঁতে ব্যথা অনুভব হয়, এরপর জ্বর আসতে থাকে। বিষয়টি ভারতের চিকিৎসককে অবহিত করলে তিনি কিছু পরীক্ষা-নিরিক্ষা করাতে বলেন। এরপর রিপোর্ট দেখে তিনি তিশাকে রক্ত দেওয়ার কথা বলেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা তাকে কয়েক ব্যাগ রক্ত দেই। ৩ দিন আগে তার পেটে ব্যথা শুরু হলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে কোন উন্নতি না হওয়ায় দুপুর ১টার দিকে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে সে সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যায়। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ চিকিৎসকরা সঠিক কিছু বলতে পারেনি। তবে মৃত্যুর আগে তার প্রেসার লো ছিল আর পেটে ব্যথা অনুভব করছিল। সোমবার সকাল ১০ টায় নিজ গ্রামের পাইকগাছা-লস্কর ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসা মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তিশার দাফন সম্পন্ন করা হয়। জানাযা’য় অংশ নিয়ে পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর সহ সর্বস্তরের মানুষ নির্বাক হয়ে যায়।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here