ভেদরগঞ্জে শিক্ষিকার বেত্রাঘাতে পঞ্চম শ্রেনির ছাত্রী আহত।

0
209

 

শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জ প্রতিনিধি:
শরীয়তপুরে ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ২৮নং পাপড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আরজু আক্তারের বিরুদ্ধে লাবন্য আক্তার (১১) নামে পঞ্চম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে পিটিয়ে আহত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ৯মার্চ সোমবার দুপুর ১২টায় ক্লাশ চলাকালিন তাকে পিটিয়ে আহত করেন। ছাত্রীকে জরুরী চিকিৎসা দেয়ার জন্য ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পঞ্চম শ্রেণীর কতিপয় ছাত্রীরা বলেন, লাবন্য আক্তার খুব ভাল ছাত্রী। সে কখনোই বিদ্যালয় ফাঁকি দেয় না। প্রতিদিনের ন্যায় আজও বিদ্যালয়ে আসেছে। দুপুর সাড়ে ১২টার সময় সহকারী শিক্ষিকা আরজু আক্তার ক্লাশ নিতে আসেন। ঐ সময় লাবন্য আক্তারকে ক্লাশের পড়া জিজ্ঞেসা করা হয়। লাবন্য ক্লাশের পড়া না পাড়ায় সহকারী শিক্ষীকা আরজু আক্তার তাকে অমানবিক ভাবে বেত্রাঘাত করেন। পরে বিকেল ৪টার দিকে বিদ্যালয়ের দফতরী দুলাল লাবন্যকে আহত অবস্থায় বিদ্যালয়ের বেঞ্চে শুয়ে থাকতে দেখে পান। তখন লাবন্যর ভাই আফজাল হোসেনকে খবর দেন। তখন আফজাল হোসেন বিদ্যালয়ে এসে লাবন্যকে নিয়ে যান এবং তাকে চিকিৎসার জন্য ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

এ ব্যাপারে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ফার্মাসিষ্ট আতিক বলেন, রোগীর গায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। সেই মোতাবেক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করানোর পর বাকী চিকিৎসা দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে লাবন্যর মা এবং ছয়গাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার আলো বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার মেয়ে ক্লাশে পড়া পারেনি সেজন্য শিক্ষক মেরেছেন। ছাত্র ছাত্রীরা ক্লাশে পড়া না পারলে শিক্ষকরা শাসন করবেন এটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু সে শাসনের পরিমাণ যে এতোটাই কঠিন হবে তা বুঝতে পারিনি। আমি ওই শিক্ষকের বিচার দাবী করছি।

এ ব্যাপারে ২৮নং পাপরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আরজু আক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে গেলে তাকে বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়নি। তার মুঠো ফোনটিও বন্ধ রয়েছে।

এ ব্যাপারে ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়ার সাথে মুঠো ফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, আমি সংবাদটি পাওয়ার পর সাথে সাথে হাসপাতালে গিয়ে লাবন্য আক্তারের খোঁজ খবর নিয়েছি। মেয়েটিকে বেদম মেরেছে। শরীরে কাঁপুনি উঠে গিয়েছিলো। আমি মারাত্মক ভয় পেয়েছিলাম। আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলাম লাবন্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুরে নিয়ে যাবো। পরে সেটা আর করতে হয়নি। ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং আল্লাহ’র অশেষ রহমতে মেয়েটি রাত ১০টার দিকে সুস্থ্য হয়ে উঠেছে। আমি সোমবার রাতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ স্যারের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছি। তারা আমাকে ব্যাপারটি তদন্ত করতে বলেছেন। শিক্ষিকা আরজু আক্তারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমানিত হলে তাকে তাৎক্ষণিক ভাবে সাময়িক বরখাস্ত অথবা শাস্তিমূলক বদলী করার নির্দেশ দিয়েছেন। আমি আপনাদেরকে এ নিশ্চয়তা দিতে পারি, কোন সুপারিশ বা কোন তদবীর গ্রহণ করা হবে না। আমার প্রতি আস্থা রাখতে পারেন। আমি আজই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here