বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে রায় বুধবার

0
606

খবর৭১: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আপিল আবেদনের ওপর মঙ্গলবার (১৫ মে) আপিল বিভাগের রায় ঘোষণার দিন নির্ধারিত ছিল। তবে দুপুর ১২টায় শুনানির পর রায়ের জন্য আগামীকাল বুধবার নির্ধারণ করে দেয়া হয়।

মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এদিন সকালে পুনরায় শুনানির অনুমতি চান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। একইসঙ্গে এ বিষয়ে শুনানির জন্য দুপুর ১২টায় সময় নির্ধারণ করে আপিল বিভাগ।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে সময় চেয়ে আবেদন ও এর শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এ সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার খন্দকার মাহবুব হোসেন।

খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য বিচারপতিরা সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে এজলাসে প্রবেশ করেন। এক পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতকে বলেন, মামলাটি আগামীকাল শুনানির জন্য রাখা হোক। এ বিষয়ে আবারও শুনানি করতে চাই। ওইদিন (গত ৯ মে) হইচই, হট্টগোলের কারণে শুনানি করতে পারিনি।

প্রধান বিচারপতি বলেন, এখনই করুন। আমরা রায়ের তারিখ ঠিক করেছি। এখন আর হয় না। জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, শুনানির জন্য আমার প্রস্তুতির প্রয়োজন। আপনারা বহু মামলায় এভাবে সময় দিয়েছেন।

আপিল বিভাগ বলেন, তা হয় কিভাবে? জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, রায়ের পূর্ব মুহূর্তে এমন শুনানির অনেক উদাহরণই তো রয়েছে। আগামীকাল এ অবস্থাতেই থাকুক।

এরপর আপিল বিভাগের বিচারপতিগণ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন। আলোচনা শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের এক ব্রাদার ভেরী সিক। আগামীকাল তিনি আসতে পারবেন না। আপনি এ মামলার নথিপত্র নিয়ে ১১টা ৩০ মিনিটে আসুন।

তবে এরপরও মাহবুবে আলম শুনানির জন্য ১২টায় সময় নির্ধারণের আবেদন জানালে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ৮ ও ৯ মে দুটি আপিল আবেদনের উপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেছিলেন আপিল বিভাগ। সে অনুযায়ী মামলাটি রায়ের জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় এসেছে।

শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তাকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রাখার আর্জি জানান। অপরদিকে হাইকোর্টের আদেশ বাতিল চায় দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ। তারা দ্রুত হাইকোর্টে এই মামলার মূল আপিল শুনানি করার কথাও আদালতকে জানান।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশিবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামানের আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। রায়ে তারেক রহমানসহ বাকিদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেদিন থেকেই খালেদা জিয়া নাজিম উদ্দিন রোডের পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন।

এই মামলায় খালেদা জিয়া হাইকোর্টে আপিল করলে গত ১২ মার্চ হাইকোর্ট চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান। পরদিন ১৩ মার্চ জামিন স্থগিত চেয়ে চেম্বার বিচারপতি আদালতে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক। ওইদিন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর জামিন আদেশ স্থগিত না করে আবেদন দুটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।

এরপর ১৪ মার্চ হাইকোর্টের দেয়া চার মাসের জামিন আদেশ ১৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। ওই সময়ের মধ্যে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত আপিলের আবেদন (লিভ টু আপিল) করার নির্দেশ দেয়া হয়। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, লিভ টু আপিল দায়ের করে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ।

পরে ১৯ মার্চ আপিল বিভাগ দুটি আপিলই শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। আপিল নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত জামিনও স্থগিত করেন সর্বোচ্চ আদালত। গত ৯ মে সেই আপিল শুনানি শেষে রায়ের জন্য ১৫ মে দিন ধার্য করা হয়।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here