বিশ্বে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা অনেক বেড়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

0
388

খবর৭১: বর্তমান বিশ্বে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের উসকানি দেয়ার ঘটনা দুর্ভাগ্যবশত অনেক বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

তিনি বলেন, ‘মানুষের বিশ্বাসে যেভাবে আঘাত হানা হচ্ছে, বর্তমান সমাজ তার সাক্ষী বহন করছে। কটূক্তি ও বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রীয় নীতির কারণে পৃথিবীতে আজ অনেক ক্ষুদ্র জাতিসত্তা হুমকির মুখে রয়েছে। তাই এখন অন্তর্ভুক্তি, সহিষ্ণু ও সহাবস্থান সমাজ গঠনের দিকে মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন। সামাজিক-রাজনৈতিক সহাবস্থানের মূলেই ধর্মীয় স্বাধীনতা বসবাস করে।

শুক্রবার সকালে ‘বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ এবং সহিষ্ণু সমাজ গঠন: ধর্মীয় এবং সামাজিক নেতাদের করণীয়’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এসব কথা বলেন। রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

‘সেভ অ্যান্ড সার্ভ’ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে কর্মশালায় জাতিসংঘ মহাসচিবের গণহত্যা প্রতিরোধবিষয়ক দফতরের বিশেষ প্রতিনিধি অ্যাডাডমা ডিং, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পোসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার হামলার ঘটনায় দেখা গেছে, ধর্মীয় চরমপন্থীরা ধর্মের নামে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। তখন থেকে বলা হচ্ছে, ধর্মই দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে। প্রকৃত অর্থে চরমপন্থীরা ও সন্ত্রাসীরা ধর্মীয় লেবাসে তাদের মনোবাসনা চরিতার্থ করে। ইসলাম শান্তির ধর্ম, অথচ ইসলাম এখন বাজে টার্গেটে পরিণত হয়েছে।

আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ধর্মের ইতিবাচক যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে গুরুত্ব হারাচ্ছে। অথচ সমাজ থেকে চরমপন্থা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ধর্মীয় নেতৃত্বের বিকল্প নেই।

পাকিস্তানিরা আমাদের জাতিগত পরিচয়, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সংস্কৃতি ও চিন্তার ওপর আঘাত হেনেছিল বলেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সহিষ্ণু ও শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করা সমাজের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা আমরা অনেকের থেকে খুব ভালো জানি। সামাজিক-রাজনৈতিক সহাবস্থানের মূলেই ধর্মীয় স্বাধীনতা বসবাস করে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ধর্মীয় স্বাধীনতা, সহিষ্ণুতায় বিশ্বাসী এবং ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের মতবাদ হচ্ছে ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার। ঈদ, পূজা, বৌদ্ধ পূর্ণিমা ও ক্রিসমাসসহ সব ধর্মের চর্চা ও উৎসব বাংলাদেশে হয়, যা পৃথিবীতে বিরল। বাংলাদেশের মানুষ সব ধর্মের উৎসবই পালন করে এবং সরকারি ছুটি ভোগ করে।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো বলেন, ধর্মীয় নেতারা শুধু সাম্প্রদায়িক সম্প্রতিই নয়, এসডিজি অর্জনে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে শান্তিপূর্ণভাবে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর ধনীতম রাষ্ট্র নয়, কিন্তু তারা বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আশ্রয় দিয়ে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here