বাবা মায়ের সেবায় ইসলাম

0
839

খবর ৭১: আমার যাদের মাধ্যমে এই পৃথিবীতে আগমন করেছি তারাই হলেন পিতা -মাতা। এ পৃথিবীর বুকে পিতা-মাতার সম্মান ও মর্যাদা নিঃসন্দেহে শীর্ষস্থানীয়। মহান আল্লাহ সমগ্র বিশ্ববাসীর একমাত্র উপাস্য ও অভিভাবক। আর পিতা-মাতা হ’ল শুধু তার সন্তানদের ইহকালীন জীবনের সাময়িক অভিভাবক। সুতরাং সন্তানদের কাজ হল, মহান ¯্রষ্টা ও পালনকর্তা আল্লাহ তা‘আলার যাবতীয় হুকুমের সাথে পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করা ও তাদের মান্য করা। সন্তান জন্মের পর বাল্য, শৈশব বা কৈশোর পর্যন্ত পিতা-মাতার তত্ত্বাবধানেই থাকে এবং সম্পূর্ণ অনুগত থাকে। অতঃপর যৌবনে ও সংসার জীবনের কোন কোন ক্ষেত্রে পিতা-মাতার সঙ্গে তার সন্তানদের মতভিন্নতা দেখা দিতে পারে, এটা স্বাভাবিক। সেজন্য মহাজ্ঞানী আল্লাহ তা‘আলা পিতা-মাতার সঙ্গে তার সন্তানদের বাল্য জীবনের ভালবাসার ন্যায়ই সারা জীবন তা মযবূত ও বহাল রাখার আদেশ দিয়েছেন।

মহান আল্লাহ বলেন,আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার জননী তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্ট সহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার দুধ ছাড়াতে লেগেছে ত্রিশ মাস। অবশেষে সে যখন শক্তি-সামর্থ্যরে বয়সে ও চল্লিশ বছরে পৌঁছেছে, তখন বলতে লাগল, হে আমার পালনকর্তা! আমাকে সামর্থ্য দাও, যাতে আমি তোমার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে পারি, যা তুমি দান করেছ আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং যাতে আমি তোমার পসন্দনীয় সৎকাজ করি। আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ কর, আমি তোমারই অভিমুখী হ’লাম এবং আমি আজ্ঞাবহদের অন্যতম’ (আহক্বাফ ১৫)। অন্যত্র মহান আল্লাহ এরশাদ করেন,আপনার রব নির্দেশ দিলেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না, আর তাদের সাথে শিষ্টাচারপূর্ণ কথা বল। অনুকম্পায় তাদের প্রতি বিনয়াবনত থেকো এবং বল, হে পালনকর্তা! তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন। তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মনে যা আছে তা ভাল করেই জানেন। যদি তোমরা সৎ হও, তিনি মনোযোগীদের প্রতি ক্ষমাশীল’ (বনী ইসরাঈল ২৩- ২৫)

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন : যে ব্যক্তি তার পিতা – মাতা উভয়কে পেলো, এবং তাদের খিদমত করতে পারলো না, সে ধ্বস হয়ে যাক।( সহীহ মুসলিম, হাদীস নং :৬২৭৯) প্রতিটি সন্তানের উচিত অন্তত সাপ্তাহে একবার পিতা-মাতার কবর যিয়ারত করা, এবং তাদের জন্য কিছু দান – সদকাহ করে, মাগফিরাতের দু ‘আ করা।

বনু সালিমা গোএের এক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞাসা করলো, ইয়া রাসূলুল্লাহ সা. আমার পিতা -মাতা ইন্তেকালের পরও কি তাদের সাথে উওম ব্যবহার করার কিছু অবশিষ্ট আছে? তখন নবী কারীম সা. বললেন হ্যাঁ : ১. তাদের জন্য দুআ করা ২. তাদের গুনাহের জন্য ক্ষমা ইস্তেগফার পড়া। ৩. তাদের শরীয়ত সম্মত অসিয়ত গুলো আদায় করা। ৪. তাদের আত্মীয়দের সাথে সু-সম্পর্ক রাখা। ৫. তাদের বন্ধুদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। এগুলো তোমার পিতা-মাতা মৃত্যুর পর তাদের সাথে উওম আচরনের শমিল (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, মিশকাত, পৃ: নং ৪২০)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here