বাংলাদেশের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু মারা গেছেন

0
851

খবর৭১:বাংলাদেশের কিংবদন্তি ব্যান্ড সংগীত শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।

আজ সকালে নিজ বাসায় তাঁকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন একাধারে গায়ক, গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার, প্লে-ব্যাক শিল্পী। এলআরবি (লাভ রানস ব্লাইন্ড) ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট ও ভোকাল আইয়ুব বাচ্চু বাংলাদেশের ব্যান্ড জগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সম্মানিত ব্যক্তিত্বদের একজন।

আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

আউল-বাউল-লালনের এই বাংলার তরুণদের রক গানের স্বাদ চিনিয়েছেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে অন্যতম আইয়ুব বাচ্চু। ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি এই শিল্পী দীর্ঘ চার দশক ধরে সুরের আলো ছড়িয়েছেন। এছাড়া গিটারের ছয় তারেও জয় করেছেন উপমহাদেশ।

১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম শহরে জন্মগ্রহণ করেন আইয়ুব বাচ্চু। ছোটবেলা থেকেই গিটারের প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। তবে ব্যান্ডের সঙ্গে তাঁর যাত্রা শুরু ১৯৭৮ সালে ‘ফিলিংস’ ব্যান্ডের মাধ্যমে। তাঁর কণ্ঠ দেওয়া প্রথম গান ‘হারানো বিকেলের গল্প।’ এটির কথা লিখেছিলেন শহীদ মাহমুদ জঙ্গী। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালে তিনি ‘সোলস’ ব্যান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন। আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম অ্যালবাম ‘রক্তগোলাপ’ প্রকাশ হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। এই অ্যালবামটি তেমন একটা সাফল্য পায়নি।

আইয়ুব বাচ্চুর সফলতার শুরু তাঁর দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘ময়না’ (১৯৮৮) দিয়ে। এরপর ১৯৯১ সালে বাচ্চু ‘এলআরবি’ ব্যান্ড গঠন করেন। এই ব্যান্ডের সাথে তাঁর প্রথম ব্যান্ড অ্যালবাম ‘এলআরবি’ প্রকাশিত হয় ১৯৯২ সালে। এটি বাংলাদেশের প্রথম দ্বৈত অ্যালবাম। এই অ্যালবামের ‘শেষ চিঠি কেমন এমন চিঠি’, ‘ঘুম ভাঙ্গা শহরে’, ‘হকার’ গানগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।

১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে তাঁর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যান্ড অ্যালবাম ‘সুখ’ ও ‘তবুও’ বের হয়। ‘সুখ’ অ্যালবামের ‘সুখ’, ‘চলো বদলে যাই’, ‘রূপালি গিটার’, ‘গতকাল রাতে’ পুরো দেশে আলোড়ন তৈরি করে। এর মধ্যে ‘চলো বদলে যাই’ গানটি বাংলা সঙ্গীতের ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় গান। গানটির কথা লিখেছেন ও সুর করেছেন বাচ্চু নিজেই। ১৯৯৫ সালে তিনি বের করেন তৃতীয় একক অ্যালবাম ‘কষ্ট’। সর্বকালের সেরা একক অ্যালবামের একটি বলে অভিহিত করা হয় এটিকে। এই অ্যালবামের প্রায় সবগুলো গানই জনপ্রিয়তা পায়। বিশেষ করে ‘কষ্ট কাকে বলে’, ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘অবাক হৃদয়’, ও ‘আমিও মানুষ’। একই বছর তাঁর চতুর্থ ব্যান্ড অ্যালবাম ‘ঘুমন্ত শহরে’ প্রকাশিত হয়। সেটিও সাফল্য পায়। আইয়ুব বাচ্চুর সর্বশেষ তথা ১০ম অ্যালবাম ‘জীবনের গল্প’ প্রকাশ হয় ২০১৫ সালে।

আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া কিছু গান এখনো সমানভাবে জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘আমি বারো মাস তোমায় ভালোবাসি’, ‘সেই তুমি কেন এতো অচেনা হলে’, ‘এখন অনেক রাত’, ‘এক আকাশের তারা তুই’, ‘উড়াল দেবো আকাশে’ উল্লেখযোগ্য। শুধু অডিও গানে নয়, প্লেব্যাকেও তিনি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তাঁর গাওয়া প্রথম প্লেব্যাক ‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’ বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় গান। এছাড়া ‘আম্মাজান’ ছবির শিরোনাম গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।
খবর৭১/জি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here