বগুড়া ভাসু বিহার খননে মিলল পাল আমলের নিদর্শন

0
327

 

রিপন দাস, বগুড়া ঃ বগুড়ায় প্রত্নতাত্ত্বিক খননে পাওয়া গেছে ইটে তৈরি অবকাঠামোর পাশাপাশি নানা ধরণের নিদর্শন। ভাসু বিহারে পাওয়া এ অবকাঠামোগুলো প্রায় হাজার বছরের পুরোনো। তবে অনেকের ধারণা এটি পাল আমলের অবকাঠামোগুলোর সাথে বেশ কিছু মিল পাওয়া গেছে। এই প্রত্মস্থলে খননের ফলে পরবর্তী গুপ্তযুগের দুটি আয়তক্ষেত্রাকার বৌদ্ধবিহার এবং একটি প্রায় ক্রুশাকৃতি মন্দির আবিষ্কার করা হয়।

গত অক্টোবর মাসের ১৬ তারিখ থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাত সদস্যের একটি দল খনন শুরু করে ভাসু বিহার সাইটে সংরক্ষিত এলাকায়। মাটির বর্তমান স্তরের কয়েক ফুট নিচে পাওয়া যায় কম পক্ষে হাজার বছরের পুরোনো সব নিদর্শন। খনন কাজ চলবে আগামী ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। এখানে প্রথম খনন কাজ শুরু হয় ১৯৭৩ থেকে ৭৪ সালে।

খনন দলের সদস্য সহকারি কাষ্টোডিয়ান মো: যায়েদ জানান, মাটি অল্প একটু খননের পর আমরা ইটের কাঠামো আবিস্কার করেছি। এখানে ইটের যে কাঠামো দেখতে পাচ্ছি সেটা পাল আমলে। এছাড়াও অবকাঠমোগুলোর নিচে বিভিন্ন ফলক ও মেঝে দেখতে পাওয়া গেছে। যা সবই পাল আমলের সম সাময়িক।

দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ এ প্রত্মতাত্ত্বিক সাইটে বিভিন্ন সময়ে খননে পাওয়া যায় সম সাময়িক নিদর্শনের পাশাপাশি ব্রঞ্জের তৈরী মূর্তি। এ ছাড়াও পাওয়া যায় মাটির নানা ধরণের পাত্র ও পোড়া মাটির ফলক।

প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ মুজিবুর রহমান জানান, এবারের খননে ভাসু বিহারে প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে। ইটের তৈরী স্তুপ আর চারিদিকে রয়েছে মেঝে। এছাড়াও আরেকটি স্তুপের নিদর্শন এখনো সম্পন্œ আকারে দেখতে পাওয়া যায়নি। খনন কাজ নিয়মিত চলছে। আমরা ধারণা করছি আরো বিভিন্ন নিদর্শন পাওয়া যেতে পারে। পোড়া মাটির বল, অর্নামেন্টাল ব্রিকসহ বৌদ্ধের নানা ধরণের নির্দশন ভোঙ্গর অবস্থায় পাওয়া গেছে।

খনন আরো চালিয়ে গেলে গুরুত্বপূর্ণ আরো সব নিদর্শনের পাশপাশি মিলবে ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সন্ধান।

এ বিষয়ে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের প্রত্মতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক মোছাঃ নাহিদ সুলতানা জানান, প্রত্মতাত্ত্বিক খননে স্থাপত্য কাঠামো পাওয়া গেছে। সেগুলো বৌদ্ধ স্তুপ বলে ধারণা করা হচ্ছে। খনন করা বৌদ্ধ বিহার ও মন্দিরসহ আরো নানা ধরণের স্থাপত্য সম্পর্কে ধারণা করা হচ্ছে। পরিকল্পনা আছে ভাসু বিহার পর্যায়ক্রমে খনন করবো এবং পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দিবো।

মহাস্থানগড় থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে এই ভাসু বিহার অবিস্থত। চীনের পরিব্রাজক হিউয়েন সাং ৬৩৮ থেকে ৬৪৫ খ্রিঃ পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশ ভ্রমনের সময় ভাসু বিহারে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেখতে পান। সে সময় প্রায় এ বিহারে ৭০০ বৌদ্ধ ভিক্ষু ছিল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here