বখে যাওয়া সন্তানকে ফেরাতে পারে নামাজ

0
799

খবর৭১ঃসন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় বিদ্যাপীঠ পরিবার। পিতা-মাতা হলেন সন্তানের সবচেয়ে বড় শিক্ষক। সন্তানের বড় কোনো সাফল্যে যেমন পিতা-মাতার মুখ উজ্জ্বল হয় তেমনই সন্তানের অপকর্মের জন্য অনেক পিতা-মাতাকে জেলজুলুম নির্যাতনও সহ্য করতে হয়। যে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পিতা-মাতা আত্মীয়স্বজনেরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছিলেন। তারাই আবার সন্তানের বেড়ে উঠার সময়কালে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন। আজকাল আশপাশের পরিবেশে, বন্ধুবান্ধব, প্রযুক্তির অপপ্রয়োগ ও অপসংস্কৃতির আগ্রাসনে অনেক ছেলেমেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের কেউ কেউ বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক অসামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। এ ক্ষেত্রে নামাজই একমাত্র বখে যাওয়া সন্তানের নৈতিক মূল্যবোধের পরিবর্তন এনে দিতে পারে। কারণ নামাজ আত্মার বিকাশ ঘটায়। নামাজ মানুষের বোধশক্তিকে জাগ্রত করে দেয়। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিঃসন্দেহে সালাত অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সূরা আনকাবুত : ৪৫)।

সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ায় নামাজের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নামাজ মানুষকে মমতা শিক্ষা দেয়। নামাজ সব ধরনের বদ অভ্যাস থেকে দূরে রাখে। নামাজ ভালো মানুষ হওয়ায় উৎসাহিত করে। নামাজ মানুষকে বিনয়ী হতে শেখায়। নামাজ শৃঙ্খলা শিক্ষা দেয়। যেসব ছেলেমেয়েরা নামাজ পড়ে, তাদের খাওয়া-দাওয়া, চলাফেরা, পড়াশোনা ও ঘুমানোর মধ্যে এক ধরনের শৃঙ্খলা থাকে। তাই সন্তানের ভবিষ্যৎ সাফল্যের জন্য দুশ্চিন্তা না করে শৈশব থেকে নামাজের আদেশ দিতে হবে। হজরত ইবরাহিম (আ.) তার সন্তানরা যেন নামাজি হয়। সে জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার রব! আমাকে সালাত কায়েমকারী বানান এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও, হে আমার রব, আর আমার দোয়া কবুল করুন।’ (সূরা ইবরাহিম : ৪০)। শৈশব থেকে নামাজের প্রতি আদেশ দিতে হাদিস শরিফেও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

হজরত আমর ইবনে শুয়াইব (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন, তোমরা তোমাদের সন্তানদের সালাতের জন্য নির্দেশ দাও, যখন তারা সাত বছরে পৌঁছে। আর দশ বছর হলে তাকে প্রয়োজনে প্রহার করো, আর তাদের মাঝে বিছানা পৃথক করে দাও। (আবু দাউদ : ৪৯৫)। নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব এতটাই বেশি যা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব তেলাওয়াত করে, সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে দান করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে যা কখনও ধ্বংস হবে না।’ (সূরা ফাতির : ২৯)। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন, কোনো ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় যতবার মসজিদে যাতায়াত করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে ততবার মেহমানদারির ব্যবস্থা করে রাখেন। (বুখারি : ৬২৯)।

সন্তানের বখে যাওয়া রুখতে হলে অবশ্যই নামাজের আদেশ দিতে হবে। কারণ যে নামাজ পড়বে তাকে অবশ্যই পাক-সাফ থাকতে হবে। তাকে নিয়মিত অজু গোসল করতে হবে। পোশাক পরিচ্ছেদ পরিষ্কার রাখতে হবে। নামাজ আদায় করতে গেলে সময়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হয়। ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হয়। ভোরে ঘুম থেকে উঠলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে। সুতরাং নামাজ একজন মানুষের জীবনের গতিপথ পরিবর্তন করে দেয়। সন্তান নামাজি হলে তার ভবিষ্যৎ যথারীতি উজ্জ্বল হয়ে যায়। আল্লাহ আমাদের সন্তানদের নামাজি হওয়ার তৌফিক দান করুক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here