প্রধান বিচারপতিহীন ২ মাস হতে চললো

0
302

খবর৭১: প্রায় দুই মাস হতে চললো দেশের প্রধান বিচারপতির অফিসটি শূন্য। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি নজিরবিহীন ঘটনা। এর আগে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহের জন্য পদটি খালি ছিল। তা-ও অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর প্রথমবার যখন সামরিক শাসন জারি করা হয়, সেই সময়ে প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্বে আসেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এএসএম সায়েম।

১৯৭৫ সালের ৫ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। তখন ১৩ দিনের জন্য খালি ছিল প্রধান বিচারপতির পদটি। পরে ১৮ নভেম্বর নতুন প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন সৈয়দ এবি মাহমুদ হোসেন।

দ্বিতীয়বার ১৩ দিনের জন্য প্রধান বিচারপতির পদটি খালি হয় এরশাদের শাসনামলে ১৯৯০ সালে। সারা দেশে তখন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে। ১ জানুয়ারি অবসরে যান প্রধান বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরী। ১৪ জানুয়ারি এই পদে নিয়োগ দেয়া হয় শাহাবুদ্দিন আহমেদকে।

সর্বোচ্চ আদালতের তথ্যমতে, এর বাইরে ১৯৭২ সাল থেকে প্রধান বিচারপতির পদটি বড়জোর একদিনের জন্য খালি ছিল।

দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে গত বছরের ১০ নভেম্বর বিদেশে থাকা অবস্থায় পদত্যাগ করেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ক্ষমতাসীন দলের তীব্র সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেন তিনি।

গত বছরের ৩ অক্টোবর ‘স্বাস্থ্যগত কারণ’ দেখিয়ে ছুটিতে যান সুরেন্দ্র কুমার। ১৩ অক্টোবর দেশ ছাড়েন। ৩ অক্টোবরই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিয়াকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি।

সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়াও বিচার বিভাগের রীতি।

দেশের আইন বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনাকে নজিরবিহীন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাদের মতে, রাষ্ট্রের তিন বিভাগের একটিতে নেতৃত্ব দেন প্রধান বিচারপতি। দীর্ঘদিন এই পদটি খালি থাকা উচিত নয়।

সম্প্রতি প্রখ্যাত আইন বিশেষজ্ঞ শাহদীন মালিক বলেন, ‘এর ফলাফল দাঁড়িয়েছে, আমরা এখন প্রধান বিচারপতিবিহীন একটি দেশ। এটা স্পষ্টতই দেশের প্রধান প্রতিষ্ঠান, গণতান্ত্রিক রীতি ও আইনের শাসনের প্রতি আমাদের অশ্রদ্ধা ও অসম্মানকে নির্দেশ করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘যে কেউ আশ্চর্য হবে, কেন এই পদটি খালি রাখা হয়েছে। এটা কি বিচার বিভাগের ওপর কর্তৃত্ব ধরে রাখার আরেকটি উপায়?’

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী খুরশিদ আলম বলেন, যদিও আবদুল ওয়াহহাব মিয়া প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করছেন, তবে পদটি শূন্য থাকা উচিত না।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here