প্রতিষ্ঠার ১১৪ বছরেও জাতীয় করণ হয়নি বিজ্ঞানী পিসি রায়ের আর,কে,বি,কে হরিশ্চন্দ্র কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজ

0
420

শেখ দীন মাহমুদ,পাইকগাছা(খুলনা):
বিশ্ব বরেণ্য বিজ্ঞানী আচার্য স্যার প্রফুল্ল চন্দ্র রায়(পিসি রায়ের) প্রতিষ্ঠিত আর,কে,বি,কে হরিশ্চন্দ্র কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজটি আজ নানা সমস্যায় জর্জরিত। প্রতিষ্ঠার ১১৪ বছরেও জাতীয়করণের আওতায় না আসায় সরকারের সকল সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত রয়েছে বিজ্ঞানীর নিজ হাতে গড়া বিদ্যাপীঠটি। অবহেলিত জনপদের বঞ্চিত মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন তথা আলোকিত মানুষ গড়তে ১৯০৩ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও অদ্যবধি তার ভাল থাকার খবর রাখেনি কেউ। স্বাধীনতা পরবর্তী বারবার সরকারের পট পরিবর্তনেও প্রতিষ্ঠানটি রয়ে গেছে সেই তিমিরেই।
জানাযায়,১১৪ বছর পূর্বে ১৯০৩ সালে বিশ্ব বরেণ্য বিজ্ঞানী ও জ্ঞান তাপস পিসি রায় নিজ জন্মস্থান পাইকগাছার রাড়–লীতে কপোতাক্ষ নদীর তীরে ৮ একর জমির উপর তার পিতা হরিশ্চন্দ্রের নামে আর,কে,বি,কে হরিশ্চন্দ্র ইনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠা করেন। সাধারণ মানুষের জ্ঞানার্জনে তৎকালীণ সময়ে জনপদে আর বিশেষ কোন প্রতিষ্ঠান না থাকায় হরিশ চন্দ্র ইনস্টিটিউশনই ছিল একমাত্র ভরসা। ১৯৯৫ সালে স্কুল পর্যায় থেকে কলেজিয়েট পর্যায়ে উন্নিত করা হয়। যা ১৯৯৯ সালে এমপিও ভুক্ত হয়। প্রতিষ্ঠানের পৃথক ৩টি ভবন রয়েছে,দ্বিতীয় তলার পুরাতন ভবনে রয়েছে ১২টি কক্ষ,সম্প্রসারিত ভবনে রয়েছে ৬টি কক্ষ ও পৃথক অপর ভবনে রয়েছে আরো ৫টি কক্ষ। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে মাধ্যমিক পর্যায়ে ১০ জন,কলেজ পর্যায়ে ২২ জন শিক্ষকসহ ৪৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। বিদ্যাপীঠটিতে বর্তমানে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৪৫০ ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ৭৫০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে।
এর আগে দেশের বিভিন্ন বরেণ ব্যক্তিরাও ছিলেন এবিদ্যালয়ের ছাত্র। প্রয়াত সাবেক স্পীকার শেখ রাজ্জাক আলী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড.মশিউর রহমানের শ্বশুর রুহুল আমিন মোল্লা,ড.শ্যামল কুমার ঘোষ ও হাই কোটের অবসর প্রাপ্ত বিচারপতি কামরুল ইসলাম সহ অসংখ্য ব্যক্তিরা এ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। সুন্দরবনের কোল ঘেঁষা উপকূলীয় অবহেলিত জনপদের এ বিদ্যালয়টি শিক্ষা বিস্তারে আলোক বর্তিকা হিসেবে গতপ্রায় ১১৫ বছর বিশেষ ভূমিকা রাখলেও প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে এখন পর্যন্ত কেউ বিশেষ কোন ভূমিকা রাখেনি। ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী দাশ জানায়,বিজ্ঞানী পিসি রায়ের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী হিসেবে সে গর্বিত। এইচএসসি’র পরীক্ষার্থী অন্তরা দাশের প্রতিক্রিয়া অনুরুপ। তবে জনপদের প্রাচীণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এখন পর্যন্ত জাতীয় করণের আওতায় না আসায় খানিকটা হতাশ সে। তার দাবি,অচীরেই বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হোক।
বিদ্যাপীঠটির অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র ঘোষ বলেন, তৎকালিন সময়ে জনপদে বিশেষ কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিলনা। ১শ বছরেরও অধিক সময় ধরে প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসলেও প্রতিষ্ঠানটি আজও অবহেলিত। সরকার ইতোমধ্যে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও বেগম রোকেয়ার নামে বিশ্ববিদ্যালয় করেছেন। তার দাবি,বিশ্ব বরেণ্য বিজ্ঞানী পিসি রায়ের নিজের হাতে গড়া ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণসহ বিজ্ঞানীর নামে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হোক। ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ সহ প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এ্যাডঃ শেখ মোঃ নুরুল হক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন,প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও এমপি তনয় আলহাজ্ব শেখ মনিরুল ইসলাম।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here