উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুটির দক্ষিণ পাশে অধিকাংশ পাটাতনের কাঠ ভেঙে পড়েছে। যা অবশিষ্ট আছে তার অবস্থাও খুব নাজুক। কাঠ ভেঙে পড়ায় সেতুর বিভিন্ন স্থানে ফাঁকা স্থান তৈরি হয়েছে। সেতু পার হওয়ার সময় একটু বেখেয়াল হলেই এ ফাঁক দিয়ে নদীতে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে। মরিচা ধরে সেতুর লোহার খুুঁটি ও ফ্রেমের অবস্থাও নড়বড়ে হয়ে উঠেছে। সেতুতে ওঠানামার স্থানের মাটি দেবে গেছে। এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ সেতুটি দিয়ে চলাচল করছে। আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান, নড়াইলের নবগঙ্গা নদীর উত্তর পাড়ে চোরখালী এবং দক্ষিণ পাড়ে কচুবাড়িয়া গ্রামের অবস্থান। দুই গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে নদীর ওপর লোহার কাঠামো এবং কাঠের পাটাতনের তৈরি একটি সেতু রয়েছে। পুরনো ও জরাজীর্ণ এ সেতু এরই মধ্যে পাটাতন ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও এ সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। ওই সেতুর পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন চোরখালী গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা কওসার শেখ, ব্যবসায়ী সাহিদুর রহমান, বাচ্চু মোল্লা ও কৃষক গোলাম সরোয়ার। তারা জানান, নবগঙ্গার দুই পাড়ে জয়পুর, চোরখালী, গোফাডাঙ্গা, ধোপাদহ, বাহিরপাড়া, নারানদিয়া, পুরুলিয়া, কচুবাড়িয়া ও রামপুরা গ্রামের অবস্থান। এ সেতু দিয়েই এসব গ্রামের বাসিন্দারা নড়াইলের লোহাগড়া ও নড়াইল সদরে যাতায়াত করেন। সেতুটির দক্ষিণ পাড়ে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী এড়েন্দা বাজার। সেতুটি পার হয়ে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা কাশিপুর এসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, লক্ষ্মীপাশা মহিলা ডিগ্রি কলেজ, লক্ষ্মীপাশা আদর্শ বিদ্যালয় ও নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে যাওয়া-আসা করে। একসময় সেতুটি দিয়ে মোটরসাইকেল, ভ্যান, টেম্পো, অটোরিকশা, নছিমন চলাচল করত। কিন্তু পাটাতন ভেঙে যাওয়ায় এখন এসব যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এ কারণে হেঁটেই সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, নব্বইয়ের দশকে সেতুটি লোহাগড়া বাজার এলাকায় ছিল। পরে সেখানে পাকা সেতু নির্মাণ করা হলে সেতুটি সরিয়ে চোরখালী ও কচুবাড়িয়া গ্রামের মধ্যবর্তী নবগঙ্গা নদীর ওপর স্থাপন করা হয়। এটি প্রায় ৩০০ ফুট দীর্ঘ। লোহাগড়া পৌর এলাকাসহ উপজেলার অন্তত নয়টি গ্রামের বাসিন্দারা এ সেতু ব্যবহার করে। দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সেতুটি মেরামত করা হয়নি। তারা জানান, সম্প্রতি সেতুটি পার হতে গিয়ে দুজন নদীতে পড়ে যান। এর মধ্যে একজন মাথায় আঘাত পেয়েছেন। প্রায়ই এ ধরনের ছোট-বড় দূর্ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে লোহাগড়া পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম, আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, সেতুটির বেহাল দশায় ওই এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তিতে আছে। সেতুটির ৪৫ ফুট অংশ খুব খারাপ। সেতুটি মেরামতে পৌরসভার পক্ষ থেকে পরিকল্পনা ও হিসাব তৈরির কাজ চলছে।