নৌকার টিকিট পেলেন না যারা

0
258

খবর ৭১: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা ও ডাকসাইট সাংসদ দলের নির্বাচনী টিকিট নিশ্চিত করতে পারেননি। এর মধ্যে অন্যতম ঢাকার জাহাঙ্গীর কবির নানক। দলটির সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে শরীয়তপুর-১ আসন থেকে বিএম মোজাম্মেল হক ও মাদারিপুর-৩ আসনের এএফএম বাহাউদ্দিন নাসিম এই তালিকায় নেই।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এর আসনে নতুন মুখ ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাদেক খান। আর বিএম মোজাম্মেল হক ও এএফএম বাহাউদ্দিন নাসিম এর পরিবর্তে আসন দুটি থেকে যথাক্রমে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন অপু ও দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ মনোনয়ন পেতে চলেছেন।

আজ রবিবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এ চিঠি দেয়া শুরু হয়েছে। যারা নির্বাচনের টিকিট পেয়েছেন, তাদেরই এ চিঠি দেয়া হচ্ছে।

এই পর্যন্ত এমন ১৩ জন নেতার নাম পাওয়া গেছে যারা মনোনয়ন দৌড়ে থাকলেও চূড়ান্তভাবে দলের টিকেট পাননি। তবে এর বাইরেও আরও বেশ কয়েকজনের নাম থাকার কথা জানা গেলেও তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। তালিকা থেকে বাদ পড়া ১৩ জনই দশম জাতীয় সংসদের এমপি। এর মধ্যে আবার দুজন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে রয়েছেন।

এ পর্যন্ত সারা দেশের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩২টি আসনের জন্য আওয়ামী লীগ তার প্রার্থীর একটি খসড়া তালিকা চূড়ান্ত করেছে।

এবার বেশ কিছু আসনে নতুন মুখকে বেছে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। বেশ কিছু আসনে হেভিওয়েট নেতাও বাদ পড়েছেন। জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরাও মনোনয়ন পাননি। গাজীপুর-৩ আসনেও প্রার্থী বদল হয়েছে। এই আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ। এ আসনে দীর্ঘদিন ধরে এমপি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী রহমত আলী। বার্ধক্য জনিত কারণে তাকে বাদ দেয়া হয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়।

বাদ পড়েছেন টাঙ্গাইলের আলোচিত সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা। তার বদলে মনোনয়ন পেয়েছেন আতাউর রহমান খান। তিনি রানার বাবা।

কক্সবাজারের সমালোচিত এমপি আবদুর রহমান বদিও বাদ পড়েছেন। ওই আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন তার স্ত্রী শাহীন আক্তার চৌধুরী।

মনোনয়ন না পাওয়াদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি ঢাকা-১৩ আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। এ আসনে এবার নতুন মুখ হিসেবে সাদেক খানকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। সাদেক খান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

এবারের মনোনয়নের তালিকায় নেই ১১ জন এমপি। তারা হলেন- মাগুরা-১ আসনের এটিএম আব্দুল ওয়াহাব, রাজশাহী-৫ আসনের আব্দুল ওয়াদুদ দারা, যশোর-২ আসনের মনিরুল ইসলাম, ময়মনসিংহ-১১ আসনের মোহাম্মদ আমানুল্লাহ, টাঙ্গাইল-২ আসনের খন্দকার আসাউজ্জামান, টাঙ্গাইল-৩ আসনের আমানুর রহমান খান রানা, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সোহরাব উদ্দিন, মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের সুকুমার রঞ্জন ঘোষ, নেত্রকোনা-৩ আসনের ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু, শরীয়তপুর-২ আসনের কর্নেল (অব.) শাখাওয়াত আলী ও কক্সবাজার-৪ আসনের আব্দুর রহমান বদি।

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২ সাইফুজ্জামান শিখর মাগুরা-১ আসন থেকে ও সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে, আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল নেত্রকোনা-৩ আসন থেকে ও সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম শরীয়তপুর-২ আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন।

তবে জোটের শরিদের জন্য আওয়ামী লীগ যেসব আসন ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সেখানে কোনো প্রার্থী ঠিক না করলেও ঢাকা-১ আসনের জন্য দলের সভাপতি শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে বেছে নিয়েছেন। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সালমা ইসলাম বর্তমানে এই আসনের এমপি।

ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে দলটির বর্তমান ১৩ জন এমপি মনোনয়ন পেবেন। এসব আসনের মধ্যে জোটের শরিকদের ৩টি আসনের ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ঢাকা-৪ ও ৬ আসনে জাতীয় পার্টি ও ঢাকা-৮ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির এমপি রয়েছেন। আর ঢাকা-১৭, ১৮ ও ২০ আসনে কারা মনোনয়ন পেতে চলেছেন সেটি জানা সম্ভব হয়নি।

এর মধ্যে ঢাকা-১৭ আসনের এমপি বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের প্রধান আবুল কালাম আজাদ। এই দলটি ক্ষমতাসীন দলের জোটের মধ্যে নেই। এই আসন থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ প্রার্থী হতে চান। ঢাকা-১৮ ও ২০ আসনের বর্তমান এমপি যথাক্রমে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহারা খাতুন ও এমএ মালেক।

আওয়ামী লীগ বলছে, এটি চূড়ান্ত তালিকা নয়। আগামীকাল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সব আসনের আনুষ্ঠানিক প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here