নারী ধর্ষণ: মাঠে নামছে ঐক্যফ্রন্ট, ৩০ এপ্রিল শাহবাগে জমায়েত

0
219

খবর৭১ঃ দেশজুড়ে নারীর ওপর সহিংসতা-নির্যাতন বাড়ছেই। বিচারহীনতার সংস্কৃতি নিপীড়কদের আরও বেশি করে উস্কে দিচ্ছে। ফলে পথে-কর্মস্থলে এমনকি বাসাবাড়িতেও নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে নারীরা। এ অবস্থায় নারী ধর্ষণ ও নিপীড়নের প্রতিবাদে জনগণকে সক্রিয় করতে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেন।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে মতিঝিলের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শেষে এমন ঘোষণা দেন ড. কামাল হোসেন।

এসময় তিনি সংবাদিকদের বলেন, ‘গোটা দেশে নারী ধর্ষণ মহামারি আকার ধারণ করেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি খুবই দৃশ্যমান। আমরা মনে করি যে, নারী ধর্ষণ ও নারীর ওপর নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনকে আরও জোরদার করতে হবে। আইনের শাসন, নারীদের অধিকার রক্ষা করার জন্য জনগণকে সক্রিয়ভাবে মাঠে নামতে হবে।’

এ প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা ঐক্যমত্যে পৌঁছেছি যে, এ অবস্থার বিরুদ্ধে সক্রিয় ও সম্মিলিতভাবে মাঠে নামব। কারণ মানুষ চায় সভ্যতা ফিরে আসুক, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হোক। আমরা এ লক্ষ্যে আজকের বৈঠকে কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা মনে করি ঐক্যবদ্ধ একটা উদ্যোগ নিয়ে দেশের মানুষের অধিকার রক্ষা করা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা এখন জরুরি হয়েছে পড়েছে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘যারা মানুষের বিরুদ্ধে, নাগরিকদের অধিকারের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছে তাদের ব্যাপারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা লক্ষ্য করছি। অথচ যারা আইনভঙ্গ করছে তাদের ব্যাপারে তারা নিষ্ক্রিয়। তারা বিভিন্ন ধরনের অ্যাকশনের যাচ্ছে। যারা মানবাধিকারের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে, পুলিশ তাদের ব্যাপারে তৎপরতা দেখাচ্ছে।’

পরে ঐক্যফ্রন্টের আরেক শীর্ষ নেতা জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিসহ সকল নারীর ওপর ধর্ষণ-নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে আগামী ৩০ এপ্রিল ঢাকায় জমায়েতের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ‘নুসরাত হত্যাসহ নারী ও শিশু ধর্ষন-নির্যাতন বন্ধের দাবিতে আগামী ৩০ এপ্রিল আমরা ঢাকার শাহবাগে বিকেল ৪টায় জমায়েত করবো। এছাড়া গণশুনানির অংশ হিসেবে আমরা নোয়াখালী ও রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলা শহরে যাবো। নোয়াখালী ও রাজশাহী দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হবে। এর দিনক্ষণ আমরা পরে জানাবো।’

একইসঙ্গে রমজানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ঢাকায় একটি নাগরিক সমাবেশ করবে বলেও জানান রব।

বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে রব বলেন, ‘আজকে হয়রানিমূলক মামলায় বেগম জিয়াকে কারাগারে রেখে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। আমরা ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নিঃশর্তভাবে তাঁর মুক্তি চাই।’

বেগম জিয়া ছাড়াও বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবাইকে মুক্তি দিতে হবে, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন করে সকল মিথ্যা মামলায় হয়রানি ও গায়েবি মামলা দায়ের বন্ধ করতে হবে এবং গ্রেফতারকৃতদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাদের জামিনে মুক্তি দিতে হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে কেউ সংসদে শপথ নেবে না। আমাদের এই সিদ্ধান্ত অব্যাহত আছে।’

এরইমধ্যে ঐক্যফ্রন্টের দুই নির্বাচিত সাংসদের শপথগ্রহণ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যারা শপথ নিয়েছে তাদেরকে দলের পক্ষে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

ড. কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকে রব ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, ইকবাল সিদ্দিকী, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, আলতাফ হোসেন, মফিজুল ইসলাম খান কামাল, আবু সাইয়িদ, রেজা কিবরিয়া, আমসা আমিন, জগলুল হায়দার আফ্রিক, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here