নানা সংকটে ব্যাহত হচ্ছে সুন্দরবন রক্ষা কার্যক্রম

0
282

শেখ দীন মাহমুদ,পাইকগাছা(খুলনা)প্রতিনিধি:
আধুনিক নৌযান থেকে শুরু করে পর্যাপ্ত জনবলসহ নানা সংকটে এক প্রকার খুড়িয়ে চলছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন রক্ষা কর্যক্রম। ৬ হাজার ১৭ ব:কিঃমিঃ সুন্দরবনের ৭৬ টি ক্যাম্পের মাত্র ১৭৮ জন বনরক্ষী দিয়ে চলছে এর রক্ষাণাবেক্ষণ। আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত এসব বনরক্ষীদের নেই রেশনিং ও ঝুঁকিভাতা,সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নিয়ে বনের গহীনে অবস্থানরতরা ভোগ করতে পারেননা সরকারি ছুটিগুলো। নানা সংকট ও সমস্যায় কারো মৃত্যু হলেও তাদের পরিবারকে দেয়া হয়না কোন বেতন-ভাতা। এমন শত সংকট ও প্রতিকূলতায় মারাত্নকভাবে ব্যাহত হচ্ছে সুন্দরবন রক্ষা কার্যক্রম।
বন বিভাগ জানায়,৬ হাজার ১৭ কিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনের স্থলভাগের পরিমাণ ৪ হাজার ১৪৩ বর্গকিলোমিটার। আর জলভাগের পরিমাণ ২ হাজার ৮৭৪ বর্গ কিঃমিঃ। পূর্ব ও পশ্চিম এ দু’ভাগে বিভক্ত সুন্দরবন বনবিভাগে মোট ৪টি রেঞ্জ রয়েছে। সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে শতাধিক খাল ও নদী প্রবাহিত। এ সকল খাল-নদী পরিদর্শনে ৭৬টি ক্যাম্প থাকলেও সব মিলিয়ে বন প্রহরী রয়েছেন মাত্র ১৭৮ জন। বিস্তীর্ণ সুন্দরবনের নিরাপত্তায় নিরস্ত্র অল্প সংখ্যক বন রক্ষীদের দিয়ে পাহারা কার্যক্রম তাই মারাতœকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সূত্র জানায়,পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সুন্দরবন অংশে কর্মরতদের ঝুঁকি ভাতা দেয়া হয় ২ লাখ টাকা। সুন্দরবনের পশ্চিম বনবিভাগ খুলনা রেঞ্জের ভোমরখালী টহল ফাঁড়ির জনৈক বনকর্মী বলেন, বনের ভেতর নিয়মিত টহলের জন্য তাদের কোনো আধুনিক নৌযান নেই। এক ফাঁড়ি থেকে অন্য ফাঁড়িতে দ্রুত কোনোভাবে পৌঁছানো যায় না। বনের ভেতর সব জায়গায় কাজ করেনা মোবাইল নেটওয়ার্ক।
তিনি আরো বলেন,নিয়মিত বনদস্যু,বাঘ ও কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে তাদের সুন্দরবনে কাজ করতে হয়। তারপরও ইচ্ছা থাকা স্বত্তেও নানা প্রতিকূলতায় অনেক কাজ তারা করতে পারেন না। এসময় দুঃখের সাথে তিনি আরো বলেন, দায়িত্ব পালনকালে ঝুঁকি ভাতা তো দূরের কথা, ভালো কাজেরও কোনো স্বীকৃতি পাননা তারা। অনুপ্রেরণার অভাবে কখনো কখনো তারা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন। ভুক্তভোগী বনকর্মীরা জানান,পুলিশ বিভাগের ন্যায় শতভাগ ফ্যামিলি রেশন,ঝুঁকি ভাতা,কর্মরত অবস্থায় নিহত পরিবারের জন্য এককালীন অনুদান এবং সুন্দরবনসহ অন্যান্য বন বিভাগের জন্য শতকরা ৩০ ভাগ দুর্গম ভাতা পাবার জন্য সংশ্লিষ্ট বন মন্ত্রণালয়ে এর আগে লিখিত আবেদন করা হলেও সাড়া না পাওয়ায় খানিকটা হলেও হতাশ তারা।
বাংলাদেশ বনপ্রহরী কল্যাণ সমিতির সুন্দরবন পশ্চিম আঞ্চলিক শাখার সভাপতি সৈয়দ অলিয়ার রহমান মিলন সাংবাদিকদের জানান,বন রক্ষীদের দাবিতে করা আবেদনটি বন মন্ত্রণালয় পার হয়ে লাল ফিতায় আটকে গেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে।
পশ্চিম সুন্দরবনের বিভগীয় বন কর্মকর্তা বলেন,বন বিভাগের স্টাফদের দাবির বিষয়টি বিভিন্ন সময় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here