দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির বয়ন শিল্পীর,স্থপতি বাবুই পাখির, অট্টালিকা!

0
773

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: হারিয়ে যাচ্ছে নড়াইলের সেই বাবুই পাখির, নিজ হাতে তৈরি অট্টালিকা মোর কাঁচা ঘর! বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে ঘরে থেকে কর শিল্পের, আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে তুমি কত কষ্ট পাও রোধ, বৃষ্টির,।” বাবুই কহে, “সন্দেহ কি তাই ? কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায। পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা, নিজ হাতে মোর কাঁচা ঘর, খাসা।” কবি রজনীকান্ত সেনের বহুল পঠিত এই অমর কবিতাটি ৩য় শ্রেণির বাংলা বইয়ে পাঠ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত। আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান,
শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তকের কবিতা পড়েই এখনকার শিক্ষার্থীরা বাবুই শিল্পের অলৌকিক কথা জানতে পারছে। এখন আর চোখে পরেনা বাবুই পাখি ও তার নিজের তৈরী দৃষ্টিনন্দন সেই ছোট্ট বাসা তৈরির নৈসর্গিক দৃশ্য। আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান,
হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির বয়ন শিল্পী, স্থপতি এবং সামাজিক বন্ধনের কারিগর বাবুই পাখি ও তার বাসা। খড়, তালপাতা, ঝাউ ও কাশবনের লতাপাতা দিয়ে বাবুই পাখি উঁচু তালগাছে বাসা বাঁধে। সেই বাসা দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়েও তাদের বাসা পরে যেতনা। বাবুই পাখির শক্ত বুননের এ বাসাটি শিল্পের এক অনন্য সৃষ্টি যা টেনেও ছেঁড়া সম্ভব নয়।
একসময় বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামা লে সারি সারি উঁচু তালগাছে বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা দেখা যেত। এখন তা আর সচরাচর চোখে পড়ে না। কালের বিবর্তনে ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে সেই দৃষ্টি ভোলানো পাখিটিকেও তার নিজের তৈরি বাসা যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে আরও ফুটিয়ে তুলত, তা আজ আমরা হারাতে বসেছি। আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান,
বাবুই পাখি বাসা তৈরির পর সঙ্গী খুঁজতে যায় অন্য বাসায়। সঙ্গী পছন্দ হলে স্ত্রী বাবুইকে সাথী বানানোর জন্য নানাভাবে ভাব-ভালবাসা নিবেদন করে এরা। বাসা তৈরির কাজ অর্ধেক হলে কাঙ্ক্ষিত স্ত্রী বাবুইকে সে বাসা দেখায়। বাসা পছন্দ হলে কেবল সম্পর্ক গড়ে।
স্ত্রী বাবুই পাখির বাসা পছন্দ হলে বাকী কাজ শেষ করতে পুরুষ বাবুই পাখির সময় লাগে চারদিন। স্ত্রী বাবুই পাখির প্রেরণা পেয়ে পুরুষ বাবুই মনের আনন্দে শিল্পসম্মত ও নিপুণভাবে বিরামহীন কাজ করে বাসা তৈরির কাজ শেষ করে।
প্রেমিক বাবুই যত প্রেমই দেখাক না কেন, প্রেমিকা ডিম দেয়ার সাথে সাথেই প্রেমিক বাবুই আবার খুঁজতে থাকে অন্য সঙ্গী। পুরুষ বাবুই এক মৌসুমে ছয়টি বাসা তৈরি করতে পারে। ক্ষেতের ধান পাকার সময় হলো বাবুই পাখির প্রজনন মৌসুম। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হবার পরপরই বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য স্ত্রী বাবুই ক্ষেত থেকে দুধ ধান সংগ্রহ করে। আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান,
বর্তমানে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে গ্রামা ল থেকে হারিয়ে যেতে বসছে প্রকৃতির এক অপরূপে সৃষ্টি বাবুই পাখি। প্রকৃতির বয়ন শিল্পী, স্থপতি ও সামাজিক বন্ধনের কারিগর নামে সমধিক পরিচিত বাবুই পাখি ও তার অপরূপ শিল্পসম্মত বাসা এখন আর চোখে পরেনা।
প্রকৃতির বিরুদ্ধে মানুষের আগ্রাসী কার্য্যকলাপের বিরুপ প্রভাবেই আজ বাবুই পাখি ও তার বাসা হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে দেশের কিছু কিছু জায়গায় এখনো চোখে পড়ে বাবুই পাখির বাসা।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here