তনু হত্যার তিন বছর

0
411

খবর ৭১ঃ ঘুরেফিরে একই কথা ‘সময় লাগবে’। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে তিন-তিনটি বছর। আর কত সময় লাগবে, তাও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সংশ্নিষ্টরা। অভিযোগপত্র প্রদান বা আসামি শনাক্তের প্রশ্নেও কোনো সঠিক উত্তর নেই কারও কাছে।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অনার্স পড়ূয়া সোহাগী জাহান তনু (২১) হত্যার তিন বছর আজ বুধবার। ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে একটি বাসায় প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হন তনু। পরে তার স্বজনরা খোঁজাখুঁজির পর রাত ১০টার দিকে বাসার অদূরে একটি ঝোপে তার লাশ পান। পরদিন তার বাবা সেনানিবাস বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর ওই বছরের ১ এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্ত পায় সিআইডি। কুমিল্লার বিশেষ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহমেদ দীর্ঘ সময় ধরে এ মামলার তদন্ত কাজ করছেন।

এ ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। এখন আর আগের মতো গণহারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না। সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তিদের আগে যাচাই-বাছাই করে ও আগের জিজ্ঞাসাবাদের আলোকে তবেই আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

২০১৭ সালের মে মাসে সিআইডি জানিয়েছিল, ডিএনএ পরীক্ষায় তনুর অন্তর্বাসে তিনজনের শুক্রাণু পাওয়া যায়। তাদের পরিচয় শনাক্তে চলছে ডিএনএর নমুনা মেলানোর কাজ। এই মেলানোর কাজই চলছে দুই বছরের মতো সময় ধরে। এ পর্যন্ত কতজন সন্দেহভাজনের ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হয়েছে, তাদের মধ্যে সামরিক-বেসামরিক কতজন, তা বলতে নারাজ সিআইডি। তবে তদন্ত কর্মকর্তার দাবি, ডিএনএ প্রোফাইলিং ও ম্যাচিং একই সঙ্গে চলছে। মিলে গেলেই একটা ফলাফল আসবে তদন্তে, যা এখনও সম্ভব হয়নি।

কখন খুন করা হয়েছে, খুনের উদ্দেশ্য, কারণ জানা গেছে কি-না, ধর্ষক বা ধর্ষণকারীরাই কি খুনি, না অন্য কেউ- তা ‘তদন্তে’র বেড়াজালেই রয়ে গেছে। আগে খুন করা হয়েছে, নাকি খুনের পর লাশ ঝোপে ফেলে যাওয়া হয়েছে, পরিস্কার করে কিছুই বলছে না সিআইডি। তবে কোনো প্রকার চাপ বা বাধা নেই বলে দাবি করেছেন পুলিশ কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন আহমেদ।

খুনের ঘটনা ঘটেছে সংরক্ষিত এলাকার কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে, তাই সহজেই খুনিকে ধরে ফেলা যাবে, এমন আশায় বুক বেঁধেছিলেন তনুর বাবা-মা। সার্জেন্ট জাহিদ ও তার স্ত্রী এবং সিপাহি জাহিদের সংশ্নিষ্টতার কথা বরাবরই অভিযোগ করে আসছিলেন তার মা। ওই সেনাসদস্যের বাসায় বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়াতেন তনু। ঘটনার দিন সার্জেন্ট জাহিদের বাসায় প্রাইভেট পড়ানো শেষে বেরিয়েই তিনি নিখোঁজ হন। তারপর তার লাশ মেলে বাড়ির পাশের ঝোপে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here