ঢাকা যেন টাইম বোমায় পরিণত না হয়: র‍্যাব ডিজি

0
229

খবর৭১ঃ রাজধানীর পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে র‍্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘অসতর্কতার কারণে পুরান ঢাকার দাহ্য কেমিক্যাল গোডাউনগুলো একসময় টাইম বোমা ছিল। চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের পর সরকারের নির্দেশে সমস্ত কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণ করে অন্যত্র নেয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের বলবো- ক্যামিকেল সরিয়ে আপনারা সতর্কভাবে রাখবেন। অসতর্কতার জন্য যেন পুরো ঢাকা টাইম বোমায় পরিণত না হয়।’

শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা কনভেনশন হলে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘টাস্কফোর্সের অভিযানের পর পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা ক্যামিকেল সরিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় নিয়ে রাখছেন বলে আমার কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। অভিযানের ভয়ে কেউ নিজ বাসায় আবার কেউ তার আত্মীয়ের বাসায় রাখছেন। আগে পুরান ঢাকা ছিল টাইম বোম। এখন সারা ঢাকা যেন টাইম বোমায় পরিণত না হয় এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকার মানুষ এতদিন টাইম বোমার ওপরে বসবাস করছেন। চুড়িহাট্টার ঘটনায় যারা মারা গেছেন তারাও টাইম বোমার পাশে বসবাস করতেন। আমরা তৃতীয় আর একটি ঘটনা চাই না। আমরা আর একটি মানুষের মৃত্যুও দেখতে চাই না।’

দ্রুততম সময়ের মধ্যে এর সমাধান করার তাগিদ দিয়ে র‍্যাব ডিজি বলেন, ‘কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণ করার জন্য দেড়শ’ কোটি টাকার যে প্রজেক্টের কথা বলা হচ্ছে। তা সম্পন্ন হতে সময় লাগবে দুই বছর। কিন্তু আমাদের হাতে এত সময় নেই। আমরা চাই দুই মাসের মধ্যে এর সমাধান হোক। এজন্য ব্যবসায়ীদের প্রথাগত চিন্তার বাইরে গিয়ে কাজ করতে হবে। এজন্য সাহস থাকতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আফসোস করছি নদী শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এটাও তো ঠিক যে নদী শুকিয়ে যাওয়ায় জমি পাচ্ছি। সেটা বন্দোবস্ত করুন। ম্যাচ ফ্যাক্টরির জমি ভাড়া নেন। একশ-দেড়শ একর নেন। ব্যবসায়ী ভাইদের বিপাকে ফেলা আমাদের কাজ না। তাদের ব্যবসার জন্য নিরাপদ জোন করা সম্ভব। কিন্তু এই পুরান ঢাকা আমাদের ছাড়তে হবে।’

র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম বাজেট বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন ৭৩৫ কোটি টাকা। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বাজেট ঘোষণা করেছেন ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এটা আরও বাড়বে। সুতরাং আমাদের চিন্তার প্রসার আনতে হবে। আমরা সামনে ৩০তম অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ দেশ হবো।’

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে একাধিক ইকোনোমিক জোন গড়ে উঠেছে। অনেক ব্যবসায়ী তাদের নিজ উদ্যোগে তা গড়ে তুলেছেন। এমন ইকোনোমিক জোন গড়তে আপনারাও পারেন।’

মেয়াদ উত্তীর্ণ কেমিক্যালের বিষয়ে র‍্যাব ডিজি বলেন, ‘আপনারা টাকা দিয়ে পণ্য কিনে আনেন, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল কিছু লিখিত দিতে হবে। উৎপাদনের মেয়াদ, কোম্পানি নাম, সব কিছুই। টাকা দিয়ে কেন আপনারা মেয়াদ উত্তীর্ণ জিনিস কিনবেন? আপনারা মেয়াদ উত্তীর্ণ কেমিক্যাল রাখলে সেটা মেনে নেওয়া যাবে না।’

পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকা থেকে কেমিক্যাল, প্লাস্টিক ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ দাহ্য পদার্থের কারখানা ও গোডাউন অপসারণের লক্ষ্যে বিশেষ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে র‍্যাব-১০।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here