ডিআইজি মিজানসহ তার ভাই ভাগ্নেকে খুঁজছে দুদক

0
384
দুর্নীতিতে সহযোগিতার অভিযোগে ডিআইজি মিজানের ভাগ্নে কারাগারে
সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমান

খবর৭১ঃ চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমান, তার ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগ্নে পুলিশের এসআই মাহমুদুল হাসানকে খুঁজছে দুদকের একাধিক টিম। মামলা হওয়ার পর থেকে তারা ‘গা ঢাকা’ দিয়েছেন। বিশেষ করে বুধবার ডিআইজি মিজানকে সাময়িক বরখাস্তের পর তিনি একেবারেই লাপাত্তা।

মিজানকে গ্রেফতার করার জন্য আদালতের কোনো ওয়ারেন্ট দরকার নেই বলে জানান দুদকের প্রধান আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। তিনি বলেন, দুদক আইনে ক্ষমতার অপব্যহার, ঘুষ লেনদেন, অবৈধ সম্পদ ও মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় যে কোনো আসামিকে পাওয়া মাত্র গ্রেফতারের সুযোগ রয়েছে।

তার সন্ধানে দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়।

সূত্র জানায়, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত নারী কেলেঙ্কারি ও ক্ষমতার অপব্যবহার সংক্রান্ত পুলিশ সদর দফতরের তদন্ত টিমের রিপোর্ট দুদকের কাছে পৌঁছেছে। এদিকে, ডিআইজি মিজানুর রহমান ও দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ফরেনসিক রিপোর্টে প্রমাণিত হওয়ায় তারা এখন অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছেন।

তাদের দু’জনের বিদেশ গমনের ওপরই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দুদক থেকে মঙ্গলবার পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শকের বরাবর যে চিঠি পাঠানো হয় তা বুধবার কার্যকর হয়েছে বলে জানা গেছে।

ডিআইজি মিজানের পর সর্বশেষ এনামুল বাছিরের বিদেশ গমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এনামুল বাছিরের ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার কথা জানিয়ে তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এতে সই করেন অনুসন্ধান টিমের প্রধান দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্ল্যা।

‘এনামুল বাছির দেশত্যাগ করতে পারেন’- এমন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে দেয়া চিঠিতে তিনি বলেন, ‘ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির (খন্দকার এনামুল বাছির) ঘুষ লেনদেন ও মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের সত্যতা দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বক্তব্য গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। ইতিমধ্যে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য তার বরাবর নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।

এদিকে, ঘুষের ঘটনায় ১ জুলাই ডিআইজি মিজান ও দুদক পরিচালক এনামুল বাছিরকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে দুদক টিম। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২৪ জুন তলব করা হয়। এ ছাড়া এটিএন নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার ইমরান হোসেন সুমনের সঙ্গে কথা বলেছে দুদক টিম।

বুধবার দুদক কার্যালয়ে সুমন হাজির হলে দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্ল্যা তার সঙ্গে প্রায় ২ ঘণ্টা কথা বলেন। তিনিই প্রথম ডিআইজি মিজান ও পরিচালক বাছিরের ঘুষ লেনদেনসংক্রান্ত অডিও রিপোর্ট নিয়ে রিপোর্ট করেছিলেন।

তবে এদিন বাংলা ট্রিবিউনের রিপোর্টার দীপু সারোয়ারকে দুদকে আসতে বলা হলেও চিঠির ভাষা নিয়ে আপত্তি তুলে তিনি দুদকে হাজির হননি। এর আগে ২৪ জুন দুদক ডিআইজি মিজানের ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করে।

মামলায় তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না ওরফে রত্না রহমান, ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগ্নে পুলিশের এসআই মাহমুদুল হাসানকে আসামি করা হয়। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ৩ কোটি ৭ লাখ ৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

২০০৪ সালের দুদক আইনের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা, ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং আইনের ৪(২) ধারা ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি দুদকের ঢাকা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ে রেকর্ড করা হয়। দুদকের সংশোধিত বিধি গেজেট হওয়ার পর ওটাই ছিল নিজস্ব কার্যালয়ে প্রথম মামলা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here