ডামুড্যায় সাংবাদিক আহমেদ ফয়সালের দাফন সম্পন্ন

0
366

শরীয়তপুর প্রতিনিধি:
নেপালের কাঠমান্ডু ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন দূর্ঘটনায় নিহত বৈশাখী টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার, সাংবাদিক আহমেদ ফয়সালের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ মার্চ ২০১৮ ইং) সকাল সাড়ে ১০টায় শরীয়তপুরের ডামুড্যা পৌরসভার দক্ষিন ডামুড্যায় সরদার গার্ডেনের আঙ্গিনায় (পারিবারিক কবরস্থানে) আহমেদ ফয়সালের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এর পূর্বে সকাল ১০টায় ডামুড্যা পূর্ব মাদারীপুর ডিগ্রী কলেজের মাঠে ফয়সালের শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে সকাল ১০টায় ডামুড্যা পূর্ব-মাদারীপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে ফয়সালের জানাজার সম্পন্ন হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, আহমেদ ফয়সালের মামা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর বেপারী, বাবা সামসুদ্দিন সরদার, ভাই সাইফুল ইসলাম, রাকিব সরদার, মামা কায়কোবাদ বেপারী, বিল্লাল বেপারী, বৈশাখী টেলিভিশনের পক্ষে দিপু সরোয়ার, ডামুড্যা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর মাঝি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজী আক্তার, পৌরসভার মেয়র হুমায়ুন কবির বাচ্চু ছৈয়াল, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক পিন্টু, শরীয়তপুর জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আজাদ খান (ভিপি শামীম), উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাস্টার কামাল উদ্দিন আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক বাবলু সিকদার, সাবেক উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন মাদবর প্রমূখ। এর আগে কলেজ মাঠে সাংবাদিক ফয়সালকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান উপজেলা প্রশাসন, প্রেসক্লাব, ঢাকাস্থ শরীয়তপুর সাংবাদিক সমিতি, সহ বিভিন্ন সংগঠন। এরপর জানাজা শেষে তাকে নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়।
সোমবার রাত ৩টার সময় ফয়সালের মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স ডামুড্যার নিজ বাড়ি সরদার গার্ডেনে এসে পৌঁছায়। খবর পেয়ে শত শত মানুষ তার বাড়িতে ভিড় জমায়। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ।
গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডু ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস ২১১। এতে নিহত হন ৪৯ জন। নিহত ২৬ জন বাংলাদেশির মধ্যে সাংবাদিক ফয়সাল একজন। পরে সোমবার সকালে নেপালের বাংলাদেশ দূতাবাসে নিহতদের প্রথম জানাজা শেষে বিকেল ৪টা ০৫ মিনিটে সাংবাদিক ফয়সালসহ ২৩ জনের মরদেহবাহী বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বিশে প্লেন ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে মরদেহগুলো দ্বিতীয় জানাজার জন্য আর্মি স্টেডিয়ামে নেওয়া হয়। সেখানে ৫টা ২৫ মিনিটে দ্বিতীয় জানাজা এবং বাদ এশা প্রেস ক্লাবে তৃতীয় জানাজা শেষে ফয়সালের মরদেহ নিয়ে শরীয়তপুরের উদ্দেশে রওনা হন তার স্বজনরা। রাত ৩টার সময় শরীয়তপুরের ডামুড্যা নিজ বাড়িতে পৌঁছে ফয়সালের মরদেহ।
শরীয়তপুরের ডামুড্যা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সামসুদ্দিন সরদারের ছেলে আহমেদ ফয়সাল (২৮)। ৫ ভাই বোনের মধ্যে ফয়সাল ছিলেন দ্বিতীয় এবং ভাইদের মধ্যে সবার বড়। ফয়সাল রাজধানীর ধানমন্ডির ১৫ নম্বরে বড়বোন শিউলি আক্তারের বাসায় থাকতেন এবং বৈশাখী টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সে ঢাকাস্থ শরীয়তপুর সাংবাদিক সমিতির ক্রীড়া সম্পাদক সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠণের সাথে জড়িত ছিল। অফিস থেকে ৫ দিনের ছুটি নিয়ে কাউকে কিছু না বলেই নেপালে বেড়াতে গিয়ে প্লেন দূর্ঘটনায় নিহত হন ফয়সাল। ২০০৪ সালে ডামুড্যা মুসলিম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করার পর ঢাকায় তিতুমীর কলেজ থেকে এইচএসসি এবং স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্স সম্পন্ন করে। প্রায় ৫ বছর যাবৎ সাংবাদিকতা করছিল।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here