জাবিতে কোটা সংষ্কার আন্দোলন পুলিশি হামলায় প্রক্টরসহ আহত শতাধিক

0
188

নাইমুল হাসান কৌশিক জাবি প্রতিনিধি:সরকারী চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশী হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বিক্ষোভ মিছিল ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের সময় পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। সোমবার (৯ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এ সংঘর্ষ চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত।এর আগে সকাল ৯টায় ‘সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, জাবি শাখা’র ব্যানারে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পৌনে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রবেশ করে। এ সময় যান চলাচল বন্ধ করে করে দেয় আন্দোলনকারীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ এ ধরণের স্লোগান দিতে থাকে। মহাসড়ক অবরোধের কারণে দু’পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম, শিক্ষক সমিতি ও জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদেরকে অবরোধ তুলে নিতে বলেন। তবে আন্দোলনকারীরা ঘটনাস্থল ছেড়ে যাবেন না বলে জানান।বেলা সাড়ে ১২টার দিকে যানচলাচল স্বাভাবিক করতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল, জলকামান ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। প্রায় ২ঘন্টা চলে এই গোলাগুলি। পুলিশের টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও শিক্ষার্থীদের ইটপাটকেলের ঢিলে রণক্ষেত্রের সৃষ্টি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা গেটা এলাকায়। এসময় টিয়ারশেলের আঘাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইনসহ প্রায় ৭০জন শিক্ষার্থী আহত হয়। যাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের পর সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনতে পারি নাই। পরে পুলিশ তাদের সরাতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।’ ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার সাঈদুর রহমান বলেন, ‘আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার জন্য আমরা প্রথম থেকেই অনুরোধ জানাচ্ছিলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যখন গাড়ি ভাংচুর শুরু করে তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আমরা কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে বাধ্য হই। এসময় সাধারণ শিক্ষার্র্থীদের ছুড়ে মারা ইট-পাটকেলের আঘাতে ২০জন পুলিশ সদস্য আহত হয়।’এদিকে দুপুর তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম আন্দোলনকারীদের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করতে ঘটনাস্থলে যান। এসময় তিনি বলেন, ‘৫৬ শতাংশ কোটা একটি জাতির জন্য লজ্জাকর। আজকের আন্দোলনে যারা আহত হয়েছে তাদের সকলের চিকিৎসার ব্যয় প্রশাসন বহন করবে।’
এছাড়াও তিনি শিক্ষার্থীদেরকে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবি তুলে ধরার আহবান জানিয়ে রাস্তা অবরোধ কর্মসূচী থেকে সরে আসার আহবান জানান।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আহবানে রাস্তা অবরোধ কর্মসূচী থেকে সরে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে একটি সমাবেশে মিলিত হয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা আগামী তিনদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের মাধ্যমে ধর্মঘট আহবান করেন।
উল্লেখ্য,সরকারী চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবির প্রতি একাত্বতা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের আজ ক্লাস ও পরীক্ষাগ্রহন বন্ধ রেখেছিলো।
খবর ৭১/ এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here