ছাতকে বালু-পাথর শ্রমিক সমাবেশে নৌ-পথ অবরোধের ঘোষনা

0
392

হাবিবুর রহমান নাসির ছাতক প্রতিনিধিঃ
ছাতকের গোয়ালগাঁও তিন নদীর মোহনা অতিক্রম করে বালু-পাথর লোড-আনলোড কার্যক্রম বন্ধ না করায় আবারো বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে এখানের কয়েক হাজার শ্রমিক ও ব্যবসায়ী। এ ঘটনা নিয়ে পাথর ও বালু শ্রমিকদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় এখানের বালু ও পাথর ব্যবসা মারাত্মক ক্ষতির সম্মূখীন হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি বালু-পাথর ব্যবসা ও অর্ধলক্ষাধিক শ্রমিকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে গোয়ালগাঁও তিন নদীর মোহনা অতিক্রম করে বালু-পাথর লোড-আনলোড কার্যক্রম বন্ধ করার দাবীতে পুরাতন কাষ্টমস্ রোডে ব্যবসায়ী ও পাথর-বালু শ্রমিকদের এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে ব্যবসায়ী-শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবীর বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নিতে ছাতকের বালু-পাথর সংশ্লিষ্ট ৫টি সংগঠনের পক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকসহ সরকারী কয়েকটি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এর আগেও একই বিষয়ে বালু-পাথর ব্যবসায়ী-শ্রমিকদের একাধিক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিষয়টি ছাতক ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমন্বিতভাবে ঈদ-উল আযহা পরবর্তী সময়ে নিষ্পত্তির আশ্বাস দিলেও এখানো এর কোন সমাধান না হওয়ায় সমাবেশে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। সমাবেশে বক্তারা বলেন, কোম্পানীগঞ্জের কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ২০১০ইং সালে সিলেট সার্কিট হাউজে করা চুক্তি ভঙ্গ করে নৌ-পথে পাথর-বালু লোডিং করে ব্যবসা ক্ষেত্রে বার-বার বিশৃংখলা সৃষ্টি করে যাচ্ছেন। এতে দু’চারজন ব্যবসায়ী লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন অত্র এলাকার সিংহভাগে বালু-পাথর ব্যবসায়ী। ছাতকের ব্যবসায়ীরা বিগত কয়েক যুগ ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বালু-পাথর ও চুনাপাথর সরবরাহ করছেন। শ্রমিকরা নৌ-পথে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারীসহ উৎমা, বিন্দিয়া, শারফিন, ও ধলাই নদী বালু মহালের বালু-পাথর সংগ্রহ ও লোড-আনলোডিংয়ের কাজ করে থাকে। তিন হাজার ফুটের বেশী ক্ষমতা সম্পন্ন কার্গো-বার্জ ও বড় নৌকা গোয়ালগাঁও তিন নদীর মোহনা অতিক্রম না করে লোডিং করার ব্যবসায়ী চুক্তি থাকলেও কতিপয় ব্যবসায়ী তা বার-বার অমান্য করে পাথর ও বালু ব্যবসায় শৃঙ্খলা লংঘন করে যাচ্ছে। বক্তারা গোয়ালগাঁও পয়েন্টে নৌ-পুলিশ মোতায়েনের দাবীও জানান। শুক্রবার বিকেলে শহরের পুরাতন কাষ্টমস্ রোডে পাথর সংশ্লিষ্ট ৫টি সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত পাঁচ সমিতির ঐক্যজোটের সভাপতি আব্দুস সত্তারের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক নাজমুল হাসান জুয়েলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল। বক্তব্য রাখেন, হাজী ফজলু মিয়া চৌধুরী, ব্যবসায়ী ডাঃ আফসার উদ্দিন, ছাতক পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক আবুল হাসান, ছাতক পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি ওদুদ আলম, সাধারন সম্পাদক সামছু মিয়া, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এড.সুফি আলম সুহেল, ছাতক লাইম ষ্টোন ইম্পোটার্স এন্ড সাপ্লায়ার্স গ্র“পের ফাইন্যান্স সেক্রেটারী আলী আমজদ, বালু উত্তোলনকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ন সম্পাদক সামছু মিয়া, নৌকা মালিক সমিতির সভাপতি এবাদুর রহমান, ছাতক লাল পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি নুর মিয়া, লেবার সর্দার সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি তজম্মুল আলী, নৌকা চালক সমবায় সমিতির সভাপতি মকবুল হোসেন প্রমূখ। সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, ইতিমধ্যেই সরকারী ভাবে ছাতক উপজেলায় নৌ-বন্দর হিসেবে ঘোষনা দিয়ে বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী নৌ-বন্দর এলাকায় লোড-আনলোড ব্যবস্থা করতে হবে। তিন নদীর মোহনা অতিক্রম করে বল্কহেড গুলো সরু পথে চলাচল করায় প্রায় ছোট নৌকার সাথে দূর্ঘটনা ঘটছে। ব্যবসায়ী ও হাজার হাজার দিনমজুর শ্রমিকদের জীবিকার স্বার্থে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে নৌ-পথ অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে বলে হুসিয়ারী দেয়া হয়।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here