মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা : যশোরের চৌগাছায় দুই ইটভাটা মালিকের খপ্পরে পড়ে একজন সাধারণ ব্যবসায়ী সর্বশান্ত হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অগ্রীম ইট বিক্রির নাম করে ওই ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ভাটা মালিকদ্বয় একাধিকবার অন্তত ২৬ লাখ টাকা গ্রহন করেন। টাকা গ্রহনের পর কোন ইট না দিয়ে তারা শুরু করেন নানা টালবাহানা। বাধ্য হয়ে ওই ব্যবসায়ী তাদের নামে মহামান্য আদালতে মামলা করেন। মামলার পর আসামীরা আত্মগোপনে যাওয়ায় টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে শংসয়। এমতাবস্থায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী তার প্রাপ্য টাকা ফেরত পাওয়ার পাশাপাশি আসামীদের আটকে আইন শৃংখলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সূত্র জানায়, চৌগাছার পুড়াপাড়া বাজারের বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রুজিন আলী। তিনি মহেশপুর উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের মৃত রহমত উল্লার ছেলে। ২০১৪ সালের দিকে তিনি চৌগাছার রাজাপুর মোড়ে অবস্থিত মেসার্স এনআর ব্রিকস এর মালিক মাওঃ আলা উদ্দিনের নিকট ইট কেনার জন্য বিভিন্ন সময়ে ২০ লাখ ৪৩ হাজার ৭শ ৫০ টাকা দেন। প্রায় একই সময় ওই ব্যবসায়ী পুড়াপাড়া বাজার সংলগ্ন মেসার্স এসআর ব্রিকস এর মালিক শফিকুল ইসলাম সেলিমকে ৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা দেন। সেলিম মাওঃ আলা উদ্দিনের নিকট আত্মীয় বলে জানা গেছে। কিন্তু ভাটা মালিকদ্বয় ব্যবসায়ী রুজিন আলীকে কোন ইট এমনকি নগদ টাকাও ফেরত দেয়নি। টাকা প্রদানের পর পরই ভাটা মালিকরা তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। আত্মগোপনে যাওয়ার আগে ভাটামালিকরা ব্যবসায়ী রুজিন আলীকে ব্যাংকের চেক দেন। কিন্তু যে হিসাব নম্বরের চেক প্রদান করেন সেই হিসাবে কোন টাকা না থাকায় এক প্রকার বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ী রুজিন আলী ২০১৪ সালে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মাওঃ আলাউদ্দিনকে আসামী করে চেক ডিসঅনার মামলা করেন। মামলায় একাধিকবার দিন ধার্য্য হলেও প্রতিটি হাজিরায় থাকেন অনুপস্থিত। বিঞ্জ আদালত আসামী মাওঃ আলা উদ্দিনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় তাকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ২০ লাখ ৪৩ হাজার ৭শ ৫০ টাকা জমিরানা করেন। আদালতের প্রতি কোন সম্মান না জানিয়ে তিনি থেকে যান আত্মগোপনে। একপর্যায় গত ৩১ আগষ্ঠ ২০১৪ সালে আসামী বরাবর পত্রিকা মারফত লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন। কিন্তু নোটিশ প্রেরনের পরও তিনি আদালতে হাজির হয়নি এমনকি নোটিশের কোন জবাব দেয়নি বলে অভিযোগ। অনুরুপ ভাবে অপর ভাটা মালিক শফিকুল ইসলাম সেলিমের বিরুদ্ধেও তিনি মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় আসামী শফিকুল ইসলাম সেলিমকে দোষী সাব্যস্ত করে মহামান্য আদালত তাকে ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং চেকে বর্ণিত ৬ লাখ ২৪ হাজার টাকার দ্বিগুন ১২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তার বিরুদ্ধেও লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করা হলেও তিনি কোন সাড়া দেয়নি। ফলে চরম অসহায় হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ী রুজিন আলী। তিনি মাওঃ আলা উদ্দিন ও শফিকুল ইসলাম সেলিমের কাছে দেয়া প্রায় ২৬ লাখ টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষয়ে মাওঃ আলা উদ্দিনের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ব্যবসায়ী রুজিন আলীর সাথে যোগাযোগ রাখছি, অতিদ্রুতই টাকা ফেরত দিতে পারব বলে আশা করছি।
খবর ৭১/ ই: