চৌগাছায় আ’লীগের চিহৃত সন্ত্রাসীদের হামলায় বিএনপি কর্মী কবির হোসেন ঢাকা মেডিকেলে আইসিইউতে ভর্তি

0
371

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধিঃ  যশোরের চৌগাছায় আওয়ামী সন্ত্রাসী হামলায় মারাত্মক আহত বিএনপি কর্মী কবির হোসেনকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিলে চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে ভর্তি নিয়ে গভীর পর্যবেক্ষনে রেখেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আহত কবির হোসেনের শরীরে ১৫ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে। এখনও চরম উদ্বিগ্নে সময় পার করছেন তার পরিবার। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
সূত্র জানায়, উপজেলার ফুলসারা ইউনিয়নের রায়ন গর গ্রামের সোলাইমান হোসেনের ছেলে বিএনপি কর্মী কবির হোসেন (৩০) বুধবার সন্ধায় একই এলাকার আওয়ামীলীগের চিহৃত সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়। ওই রাতেই তাকে প্রথমে চৌগাছা হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা তাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে তার স্বাস্থ্যের উন্নতি না ঘটলে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। ওই রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শারীরীক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হওয়ায় ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে গভীর পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আহত কবির হোসেনের জ্ঞান ফেরেনি বলে জানান তার স্বজনরা। সূত্র জানায়, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে বিএনপি কর্মী কবির হোসেন প্রায় ১০ বছর ধরে ঢাকাতে রাজ মিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। গত বুধবার সকালে সে পরিবারের সাথে দেখা করতে ঢাকা থেকে নিজ গ্রাম রায় নগরে আসেন। এ দিন সন্ধ্যার সময় সে গ্রামের ওয়াজেদ আলীর চায়ের দোকানে বসে গ্রামবাসির সাথে কথা বলছিলেন। এ সময় এলাকার চিহৃত সন্ত্রাসী আওয়ামীলীগের মদদপুষ্ট চারাবাড়ি গ্রামের জয়নালের ছেলে নজরুল ইসলাম ও রায়নগর গ্রামের মৃত আতর আলীর ছেলে আব্দুস সালামের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী মহব্বত আলী, জব্বার হোসেন, ইখলাস আলী, ইসাহক আলী ওরফে ইসা, আমিনুর রহমান, আশরাফ হোসেন, আঃ কাদের ও অন্তরসহ ১০/১২ জন সন্ত্রাসী অতর্কিত তার উপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা হাসুয়া, গাছিদা ও লোহার রড দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত জেনে সেখানে ফেলে রেখে চলে যায়। স্থানীয়রা মারাত্মক আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চৌগাছা এরপর যশোর পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করেন। আহতের স্বনজনরা জানান, ধারালো দায়ের কোপে তার পেট ও বুকের মধ্যে অনেক কিছুই কেটে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত তার শরীরে ১৫ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে, এখনও রক্ত বন্ধ হয়নি, জ্ঞান ফেরেনি। ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসক ইমরান হোসেনের তত্ববধানে আইসিইউতে গভীর পর্যবেক্ষনে তাকে রাখা হয়েছে। আহত কবির হোসেন সুস্থ  হয়ে যেন আবার সকলের মাঝে ফিরে আসতে পারে সে জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন। এলাকাবাসি ও একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা গোটা ফুলসারা ইউনিয়নে এক ধরনের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের টার্গেট বিএনপির নেতাকর্মী ও সমার্থকরা। বিগত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর ভোটার বিহীন নির্বাচনের পরপরই এই বাহিনী ফ্রি স্টাইলে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায়। গত ৫ বছরে এই সব সন্ত্রাসীদের হামলায় অন্তত ২০ জন বিএনপির নেতাকর্মী মারাত্মকত আহত হয়েছেন। দুই জন চলে গেছেন না ফেরার দেশে। আর আহতরা হলেন, আমির হোসেন, আব্দুর রহমান, নান্নু মিয়া, তরিকুল ইসলাম, বাবু মিয়া, মোছাঃ বেগম, আনছার গাজী, হাবিবুর রহমান, আরিফুল ইসলাম, ঠান্ড মিয়া, আবুল কাশেম, কুতুব উদ্দিন, রুহুল আমিন, শমসের গাজী, রোজীনা বেগম প্রমুখ। আহত সকলেই নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে। তবে এখনও তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি। অসহনীয় কষ্ট আর যন্ত্রনা সহ্য করে তারা বেঁচে আছেন। চিহৃত এসব সন্ত্রাসীরা একের পর এক অপরাধ সংগঠিত করলেও তারা রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। অদৃশ্য শক্তির জোরে তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসি  এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষয়ে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আকিকুল ইসলাম বলেন, আহতের পরিবার এখনও কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here