চৌগাছার কপোতাক্ষ নদের উপর বেইলি ব্রিজ ঝুকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও চলাচল অব্যাহত আছে

0
569

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছায় কপোতাক্ষ নদের উপর পুরাতন বেইলি ব্রীজটি ঝুকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও মানুষের চলাচল থেমে নেই। ইতোমধ্যে নির্বাহী প্রকৌশলী (স.ও.জ) যশোর ব্রিজটি ঝুকিপূর্ণ চিহিৃত করে দুই পাশে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন। তারপরও পথচারী ও ছোটখাটো যানবাহন চলাচল অব্যাহত  আছে। এলাকাবাসি বলছেন বেইলী ব্রিজের পাশে নির্মিত চৌগাছা সেতুুটি ছোটখাটো যানবাহনের জন্য নয়, বড়বড় যানবাহন চলাচলের জন্য উপযোগী। এ কারনে বেইলি ব্রিজটি ঝুকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও অপেক্ষাকৃত দুর্বল যানবাহন ও সাধারণ পথচারী এই ব্রিজ ব্যবহার করছেন। স্থানীয়রা ঝুকিপূর্ন ব্রিজটি পুনরায় মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করে তোলার জন্য সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সূত্র জানায়, মহাকবি মাইকেল মধুসুধন দত্তের কপোতাক্ষ নদ চৌগাছা উপজেলার বুক চিরে আঁকা বাকা হয়ে বয়ে গেছে। বলাচলে কপোতাক্ষ নদ উপজেলাকে অঘোষিত ভাবে দু’ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে। দেশ স্বাধীনের পর আশির দশকে সে সময়ের সরকার নদের উপর একটি বেইলী ব্রীজ নির্মান করেন। ব্রীজটি নির্মিত হওয়ার ফলে চৌগাছার সার্বিক উন্নয়নে তা অসামন্য অবদান রাখতে শুরু করে। সময়ের ব্যবধানে ওই বেইলি ব্রীজ দিয়ে ভারী যান চলাচলের ব্যাপক ঝুুঁকি  বেড়ে যাই। এক পর্যায়ে এলাকাবাসির দাবির প্রেক্ষিতে নতুন ব্রীজ নির্মানের সিদ্ধান্ত হয়। সাবেক আইসিটি মন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ নতুন ব্রীজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় চৌগাছাবাসির কাংখিত সেই সেতু, যার নামকরণ করা হয় চৌগাছা সেতু। নতুন সেতু নির্মান করা হলেও বেইলি ব্রিজের কদর বিন্দু মাত্র কমেনি। স্থানীয়রা জানান, চৌগাছা সেতু মূল সড়ক থেকে কয়েকগুন উচু করে নির্মান করা হয়েছে। এরফলে ভ্যান, রিকসা, ইজিবাইক, ভটভটে, সাইকেল এমনকি সাধারণ পথচারীরাও নতুন সেতু ব্যবহার করার চেয়ে বেইলি ব্রিজটি বেশি ব্যবহার করতে থাকেন। নতুন সেতু নির্মান করার কারনে পাশের পুরাতন বেইলি ব্রিজটি দীর্ঘ দিন আর মেরামত করা হয়নি। এই অবস্থায় বছরের পর বছর পার হওয়ার কারনে ব্রিজটির উপরের লোহার পাত উঠে সৃষ্টি হয় বড়বড় গর্তের। প্রতিদিনই সেখানে ছোট খাটো দূর্ঘটনা লেগেই থাকতো। এমন এক পরিস্থিতিতে নির্বাহী প্রকৌশলী (স.ও.জ) যশোর ব্রিজটি ঝুকিপূর্ণ চিহিৃত করে দুই পাশে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন পাশাপাশি দুই পাশেই বাঁশ দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেন। কিন্তু সপ্তাহ না যেতেই এলাকাবাসি বাঁশ খুলে ওই ব্রিজ দিয়ে চলাচল অব্যহত রাখেন। স্থানীয় কতিপয় দানশীল ব্যক্তি ব্রিজের উপর থেকে উঠে যাওয়া লোহার পাতকে সোজা করে তা ঝালাই করে কোন মতে চলাচলের উপযোগী করে দিয়েছেন। এখন প্রতিদিনই বেইলি ব্রিজ দিয়ে ছোট খাটো যানবাহন, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ সব ধরনের পথচারী চলাচল করছেন। স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোঃ চঞ্চল বলেন, বেইলি ব্রিজটি এ জনপদের মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ব্রিজটি পুনরায় মেরামত করে ঝুুঁকিমুক্ত করার দাবি জানান তিনি। চা বিক্রেতা ইকবাল হোসেন বলেন, পুরাতন ব্রিজের কারনে সাধারণ পথচারী সহজে নদ পারাপার হতে পারছে। কারণ পাশে নতুন নির্মিত সেতু সড়কের চেয়ে অনেক বেশি উচু। যারকারনে ছোটখাটো বিশেষ করে সাইকেল ভ্যান ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা ওই সেতু সহজে ব্যবহার করতে পারেনা। যার কারনে পুরানো বেইলি ব্রিজটি চলাচলের উপযোগী করা জরুরী। ওষুধ ব্যবসায়ী কালু বিশ্বাস বলেন, ব্রিজটি চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সে সময় কর্তৃপক্ষ ব্রিজটি ঝুকিপূর্ণ বলে তা বন্ধ করে দিয়ে যান। কিন্তু মানুষের কষ্টকে উপলব্ধি করে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি উপরের লোহার পাত সংস্কার করে তা চলাচলের উপযোগী করে দিয়েছেন। এখন মানুষ বেশ শান্তিতে চলাচল করছেন। মৃধাপাড়া মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সোহানা আক্তার, আইভি আক্তার, রিয়া খাতুন জানান, বেইলি ব্রিজটি দ্রুত চলাচলের উপযোগী করা প্রয়োজন। কেননা পাশের সেতু বেশ উচু স্বাচ্ছন্দে ওই সেতু দিয়ে চলাচল করা যায়না। ভ্যান চালক জাকির হোসেন বলেন, খালি ভ্যান নিয়ে নতুন সেতুতে উঠতে পারিনা, আর মালামাল থাকলে তো উঠার কথা মনেও করিনা। তাই পাশের লোহার ব্রিজটি চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানাচ্ছি। এলাকাবাসি বেইলি ব্রিজটি সংস্কার করে পুনরায় চলাচলের উপযোগী করার জন্য সংশ্লিষ্ঠদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here