গুজরাটের হাজার হাজার কৃষক কেন স্বেচ্ছামৃত্যু চান

0
646

খবর ৭১:গুজরাটের ভাবনগর জেলার প্রায় হাজার পাঁচেক কৃষক স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি চেয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ সংস্থা ওই কৃষকদের প্রায় ৪০০ বিঘা চাষের জমি দখল করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে তার প্রতিবাদে স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করতে চাইছেন এসব কৃষকরা।

ঘোঘা এলাকার ১২টি গ্রামের ওই জমি প্রায় ২০ বছর আগে অধিগ্রহণ করেছিল সরকার।

কিন্তু কৃষকদের বক্তব্য হচ্ছে, সেই সময়ে যে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছিল, তা বর্তমান বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক কম। -খবর বিবিসি অনলাইনের।

অধিগ্রহণের এত বছর পরে জমির দখল নেয়াটাও বেআইনি বলে কৃষকদের দাবি।

বোডি গ্রামের বাসিন্দা কৃষক নরেন্দ্র সিং গোহিল বলেন, ১৯৯৭ সালে সরকার যখন জমি অধিগ্রহণ করেছিল, তখন মাত্র ৪০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছিল। ওই সময় তারা জমির দখল নেয়নি। এত বছর পরে সেই জমি ছেড়ে দিতে বলা হচ্ছে।

গোহিলের কথায়, জমির দাম এখন বিঘাপ্রতি প্রায় ২১ লাখ টাকা। অথচ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে সরকার জমি নিয়ে নেবে, এটা কোন যুক্তি!

সরকার অবশ্য বলেছে, একবার যে জমির জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়ে গেছে, অধিগ্রহণের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পূর্ণ হয়েছে, তার জন্য নতুন করে ক্ষতিপূরণ দেয়া যায় না।

উপমুখ্যমন্ত্রী নীতিন প্যাটেল জানিয়েছেন, কৃষকদের ১৯৯৭ সালে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে। একই জমির জন্য তারা যদি নতুন দাম চায়, সেটা তো দেয়া সম্ভব না।

তারপরেই কৃষকরা আন্দোলনে নেমেছেন। তারা বলছেন, জমি দিতে পারেন তারা, তবে নতুন করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সরকারকে। জামখারসিয়া গ্রামের কৃষক প্রভিন সিং গোহিল বলেন, জানি না কী করে আমাদের পূর্বপুরুষরা এই জমি সামান্য ক্ষতিপূরণ নিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা তো অন্য কোনও কাজ জানি না। এই জমি চলে গেলে আমরা খাব কি? আত্মহত্যা না করে উপায় কি?

প্রভিন সিং গোহিলের ১৫ বিঘা জমি রয়েছে। তাতে গম, মটর, জোয়ার চাষ হয়। এছাড়াও পশুপালন করে তার পরিবার। বছরে লাখ তিনেক টাকা আয় তাদের।

মেলখার গ্রামের বাসিন্দা যোগরাজ সিং সর্বাইয়া বলেন, তুলো, বাদাম, জোয়ার, বাজরা – ভুট্টা এসব চাষ করি আমরা। লাখ চারেক টাকা আয় হয়। এখন যদি সরকার জমিটা নিয়ে নেয়, তাহলে বাঁচব কী করে?

উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতেই আন্দোলনে নেমেছেন ওই গ্রামগুলোর কৃষকরা। ১২টি গ্রামের ৫ হাজার জন কৃষক জেলা-শাসকের দফতরে জমা দিয়েছেন ইচ্ছামৃত্যুর আবেদন।

আর আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে পুলিশি ধরপাকড়- চলেছে লাঠি, কাঁদানে গ্যাস।

পাঁচ শতাধিক গ্রামবাসীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। মে মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত জারি হয়েছে ১৪৪ ধারায় নিষেধাজ্ঞা।

রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী সৌরভ প্যাটেল বলেন, গত পাঁচ বছর ধরেই ওই প্রকল্পটির জন্য কাজ হচ্ছে। সরকার প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করে ফেলেছে বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির জন্য। এখন কৃষকদের নাম করে আন্দোলন শুরু করেছে কিছু রাজনৈতিক দল।

তবে আমাদের জমির দখল নিতেই হবে, এটা ২০ বছর ধরেই সরকারি জমি বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here