গলাচিপায় গণধর্ষণের অভিযোগে ইউপি সদস্য গ্রেফতার

0
445

রাকিব হাসান পটুয়াখালী প্রতিনিধি :
পটুয়াখালীর গলাচিপা থানায় পৃথক দু’টি ধর্ষণের মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন পানপট্টি ইউনিয়নের গৃহবধু এবং অন্যজন চরকাজল ইউনিয়নের ২০বছরের তরুনী। গৃহবধূ গণধর্ষণ মামলায় পানপট্টি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলামকে (৩২) গ্রেফতার করেছে গলাচিপা থানা পুলিশ। মামলা দু’টির অপর আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ধর্ষিতদের ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

থানা পুলিশ ও ধর্ষিতদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের তুলারাম গ্রামের ২৮ বছরের ওই গৃহবধূকে তার স্বামী দীর্ঘ দিন ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। গৃহবধূ এর প্রতিকার চেয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলামের কাছে বিচার দেয়। মেম্বার প্রতিকারের আশ্বাস দিয়ে ওই গ্রহবধূর বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে এবং বিভিন্ন সময়ে কু-প্রস্তাব দেয়। গৃহবধূ কুপ্রস্তাব প্রত্যাখান করে।

ঘটনার দিন গত ১৩ মার্চ রাতে ওই গৃহবধূ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে যায়। এ সময় আগে থেকে সেখানে মেম্বার রফিকুল ইসলাম ও সঙ্গী স্থানীয় ধলু গাজীর ছেলে মোঃ আক্কাছকে (৩০) নিয়ে ওৎ পেতেছিল। গৃহবধূকে একা পেয়ে রফিক ও আক্কাছ জোর করে পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে তুলে নিয়ে যায় এবং গৃহবধূকে উপর্যুপরী গণধর্ষণ করে। গৃহবধূকে কামড়ে আচড়ে ধর্ষকরা রক্তাক্ত জখম করে। এক পর্যায়ে গৃহবধূর ডাক চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ধর্ষিত ওই গৃহবধূ চিকিৎসা শেষে স্থানীয় থানায় মামলা করতে চাইলে পুলিশ তা গ্রহণ না করে ফিরিয়ে দেয়। অবশেষে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে গত ২০ মার্চ পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে দু’জনকে আসামি করে গণধর্ষণের মামলা দায়ের করে। আদালতের বিচারক ওইদিনই গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জকে অভিযোগকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ ও তদন্ত সহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস. আই. ইব্রাহিম মোল্লা সাগরকন্যাকে জানান, আদালতের আদেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতে থানায় মামলা রেকর্ড শেষে আসামি মেম্বার রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে এবং অপর আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

অপর ধর্ষণের মামলাটিও পুলিশ একই সময়ে রেকর্ড করেছে। এ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, চরকাজল ইউনিয়নের চর বড় শিবা গ্রামের ২০ বছরের তরুণীর সঙ্গে চরবিশ্বাস কে আলী কলেজে এইচএসসি পড়ার সময়ে চরবিশ্বাস গ্রামের সহপাঠি বাবুল মৃধার ছেলে মাসুম মৃধার (২১) ঘনিষ্ঠতা হয়। মাসুম মৃধা বিভিন্ন সময়ে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে সহপাঠি ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। এক সময়ে মাসুম মৃধা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। নিরুপায় হয়ে তরুণী শেষপর্যন্ত থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করে।

এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই. মোঃ নজরুল ইসলাম প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ধর্ষক মাসুম মৃধা বর্তমানে ঢাকায় রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে, দু’টি পৃথক ঘটনার ভিকটিমদের ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here