গণতান্ত্রিক পন্থায় প্রতিরোধে প্রস্তুত বিএনপি

0
302

খবর৭১:আগামী ৮ ফেব্রয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ফের মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে বিএনপির নেতাকর্মীরা।

মঙ্গলবার বেগম জিয়া আদালত থেকে বাসায় ফেরার সময় রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহের সামনে কদম ফোয়ারার মোড়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় পুলিশের প্রিজন ভ্যান ভেঙে আগেই আটক করা বিএনপির দুই নেতাকে ছাড়িয়ে নেয়ার নেয়া হয়। এতে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে রাজনীতির মাঠ।

এক রাতেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের ছেলে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ ৭১ জনকে আটক করে পুলিশ।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ- কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূলের সক্রিয় নেতাদের ‘টার্গেট’ করে করে নতুন মামলা দেয়া হচ্ছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের। তাদেরকে পুরনো মামলায় ‘অজ্ঞাতনামা’ আসামির স্থানে নাম ঢুকিয়ে গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে।

বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা  জানান, সরকার একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে দেশের বিরোধী দলীয় শক্তিকে নির্মূলে ব্যস্ত। তাদের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের বিরোধী শক্তিকে নির্মূল করা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে হাজার-হাজার মামলা দিয়ে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে।

নতুন করে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান  বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেওয়া সরকারের নতুন কিছু নয়। মামলা-গ্রেফতার ইত্যাদি সরকারের ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে যা হচ্ছে তা অতীত রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।’

হঠাৎ নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে মঙ্গলবারই তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা ধরে রাখতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে বিরোধী দল দমনে ব্যবহার করে বেপরোয়া ক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী জনগণের জানমালের নিরাপত্তাকে যেমন ভূলুন্ঠিত করেছে, তেমনি সুস্থ ধারার রাজনীতিকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে।’

তিনি বলেন, সরকারের হিংস্রতায় মনে হয় তারা দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির অস্তিত্ব বিনাশের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কারাগারে বন্দী করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে আবারো ৫ জানুয়ারির মতো ভোটারবিহীনভাবে অনুষ্ঠিত করার পরিকল্পনা করেছে।

নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান ব্রেকিংনিউজকে বলেন, বিনা ভোটে নির্বাচিত সরকার বিরোধী দলকে ধ্বংসের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে। তবে তাদের সে স্বপ্ন পূরণ হবে না। গণতান্ত্রিক আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হয় না। জনগণের জয় হবেই। হামলা-মামলা করে বিএনপির আন্দালেনকে দমিয়ে রাখা যাবে না।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা একটি ‘ভুয়া মামলায়’ তাঁকে বারবার আদালতে হাজির করা হচ্ছে। এই হাজির করার মধ্য দিয়ে তাঁকে যে হয়রানি করা হচ্ছে এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সেই মামলায় কী রায় হবে, তা নিয়ে গোটা জাতি উদ্বিগ্ন। কারণ গোটা জাতি জানে, একটি ‘ভয়ঙ্কর মিথ্যাচার’ এবং ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মামলায় খালেদা জিয়াকে হয়রানি করে এখন মামলা চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক পন্থায় প্রতিরোধ করতে জাতীয়তাবাদী শক্তি প্রস্তুত।

তিনি বলেন, ‘এই রকম মুহূর্তে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করা সরকারের ভয়ঙ্কর পরিকল্পনার একটি অংশ। এটি সরকারের শেষ মরণ কামড়। এই মরণ কামড় দিয়ে কোন লাভ হবে না। সরকারের সকল অপকর্ম এ দেশের জনগণ ব্যর্থ করে দেবে।’
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here