গণতন্ত্র যেন আজ সোনার হরিণ : মোস্তফা

0
366

খবর৭১/এস:
গণতন্ত্র নিয়ে কত গোল্লাছুট খেলাইনা চলছে এদেশে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, গণতন্ত্রের জন্য বহু সংগ্রাম হয়েছে, জীবন দিয়েছে অনেক মানুষ। কত স্মৃতির মিনার নির্মিত হয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্র অধরাই রয়ে গেল। গণতন্ত্র যেন আজ সোনার হরিণ। যাকে দেখা যায় কিন্তু ধরা ছোঁয়া যায় না। গণতন্ত্র সুদূরিকা, ‘সুদূরেই রহে চিরকাল’। ধরা যাবে কি করে? গণতন্ত্র যে কাজীর গরু, কেতাবে আছে গোয়ালে নেই।

বুধবার নয়াপল্টনস্থ যাদু মিয়া মিলনায়তনে ২৫ জানুয়ারী বাকশাল প্রতিষ্ঠা তথা গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানগর আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, এদেশের জন্মলগ্ন থেকেই একদল ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদ ক্ষমতার লোভে এবং ব্যক্তিগত অধিকার প্রতিষ্ঠার মোহে, গণতন্ত্রকে ভাওতাবাজির খেলায় পরিণত করেছে। তাদের দেখানো সোনার হরিণটার পেছনে জনতা ছুটছে, পড়ছে, মরছে, হাত-পা ভাংছে আর নেতাদের নসিব বুলন্দ হচ্ছে। ক্ষমতার গোল্লাছুট খেলায় দেশ যে গোল্লায় যেতে বসেছে, তাতে কুছপরোয়া নেই। তাদের চাই মসনদ আর একদল স্তাবক গোপালভাঁড়।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যার নির্লজ্জতম ঘটনাটি ঘটলো রাষ্ট্রপতি শাসিত একদলীয় শাসন বাকশাল কায়েম করার পর। বাকশাল ছিল রাজতন্ত্রের পরিবর্তিত নাম। বাকশালের মাধ্যমে সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী হলেন শেখ মুজিবুর রহমান। দেশে সমস্ত রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হলো, ৪টি দলীয় পত্রিকা ছাড়া সমস্ত পত্র-পত্রিকা বন্ধ ঘোষিত হলো, বিচার বিভাগের ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হলো। মোট কথা বাকশালের ফলে সংবিধান, সরকার, রাজনৈতিক দল একাকার হয়ে গেল। মানুষের মৌলিক অধিকার বলতে কিছুই অবশিষ্ট রইলো না।

গোলাম মোস্তফা ভুইয়া আরো বলেন, গণতন্ত্র মানে সাংবিধানিক রাজনীতি, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং পরমত সহিষ্ণুতা। গণতন্ত্রের শত্রু অসহিষ্ণুতা, অসাংবিধানিক রাজনীতি এবং আইনের শাসনের প্রতি অবজ্ঞা। গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোদের চর্চা করতে হবে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজ জীবনের সর্বত্র। তবেই আমাদের মধ্যে একটা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বিকাশ লাভ করবে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া তখন সহজতর হবে।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া, সমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করা এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের লালন করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলসমূহের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা সকলেই গণতন্ত্র চান, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চান। কারণ তারা অর্থনৈতিক উন্নয়ন চান, প্রবৃদ্ধি চান, জাতির সার্বিক অগ্রগতি চান। তারা সকলেই দেশপ্রেমিক। তাদের মধ্যে ঐক্যমত ও সমঝোতার এবং পারস্পারিক দায়িত্বশীল আচরণই গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের ভিত্তি রচনা করতে পারে একথা তারা অবশ্যই উপলব্ধি করবেন, এটাই জাতির প্রত্যাশা।

ন্যাপ ঢাকা মহানগর সদস্য সচিব মো. শহীদুননবী ডাবলু’র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন ন্যাপ যুগ্ম মহাসচিব স্বপন কুমার সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি মুহম্মদ মফিজুর রহমান লিটন, ন্যাপ মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, যুবনেতা আবদুল্লাহ আল কাউছারী, ছাত্রনেতা সোলায়মান সোহেল প্রমুখ।

খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here