খালেদা জিয়ার মুক্তিতে বাধা ৪ মামলা

0
329

খবর৭১ঃ নির্জন কারাগারে এক বছর পূর্ণ করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। পুরানো ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোডের পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারের একমাত্র কয়েদী খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের প্রেক্ষিতে কারাগারে প্রেরণ করা হয় তাকে। সেই থেকে তিনি বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন। ‍

৭৩ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর হৃদযন্ত্র, চোখ ও হাঁটুসহ নানা শারীরিক সমস্যা ভুগছেন। কারাগারে খালেদা জিয়া সকালে ঘুম থেকে উঠে পত্রিকা পড়েন, ইবাদত-বন্দেগি ও বই পড়ে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটান। একা চলতে পারেন না। আদালতে বা হাসপাতালে আনতে গেলে হুইল চেয়ারই ভরসা।

তার বিরুদ্ধে করা ৩৬টি মামলার মধ্যে চারটির জামিন এখনও বাকি। যে মামলায় খালেদা জিয়া এক বছর আগে কারাগারে গেছেন, সেই মামলায় গ্রেফতারের দেড় মাসের মাথায় জামিন পেলেও তাঁর মুক্তি মেলেনি। এই মুক্তির পথে বাদ সেধেছে আরও ৩৬ মামলা। একটি মামলায় জামিন হলে, সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে অন্য মামলা। আর এভাবেই কেটে গেছে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে বেগম জিয়ার একটি বছর। তার কারাবাস কি আরো দীর্ঘায়িত হবে, নাকি নাটকীয় কোন পথে তার মুক্তি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে, সে বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত থাকলেও নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জেলে আটক করে রেখেছে। তার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩৭টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলার মধ্যে তিনটি বাদে সব মামলায় তিনি জামিনে আছেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও কুমিল্লার একটি হত্যা মামলায় তার জামিন নেয়া বাকি আছে। এ ছাড়া অন্য মামলায় তিনি জামিনে আছেন।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যানবাহনে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা, সহিংসতা, নাশকতা ও রাষ্ট্রদ্রোহ এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মন্তব্যর অভিযোগে আরও কমপক্ষে ৩০টি মামলা রয়েছে। মামলাগুলো ২০১৪ সালের পর বিভিন্ন সময়ে হয়েছে। মূলত রাষ্ট্রদ্রোহ, হত্যা, ইতিহাস বিকৃতি, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মন্তব্য, জন্মদিন পালনের অভিযোগে এসব মামলা হয়। পুলিশ, সরকারি দলের নেতাকর্মী ও আইনজীবীরা ওসব মামলা করেছেন। তার মধ্যে ২৫টি মামলা হয়েছে ঢাকায়। কুমিল্লায় তিনটি এবং পঞ্চগড় ও নড়াইলে একটি করে মামলা।

তার বিরুদ্ধে দয়েরকৃত মামলাগুলির মধ্যে দুটিতে সাজা দেয়া হয়েছে, ১৬টি অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে রয়েছে। আর বাকি মামলার কোনোটিতে অভিযোগপত্র জমা পড়েছে, কোনোটি তদন্তের পর্যায়ে আছে।

ঢাকার মামলাগুলোর মধ্যে হত্যা ও নাশকতার ১৩ মামলা। মামলাগুলোর মধ্যে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপিসহ ২০ দলের ডাকা হরতাল-অবরোধের সময় বাসে আগুন, ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ, মানুষ হত্যাসহ বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনায় ১০টি মামলায় চার্জশিট দেয় পুলিশ। যার মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানায় ২টি ও দারুস সালাম থানায় ৮টি মামলা। এছাড়া ঢাকার অপর মামলাগুলোর মধ্যে ভুয়া জম্নদিন পালন, ধর্ম ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্যের জন্য মানহানির মামলা এবং ২০১৫ সালে গুলশানে প্রাক্তন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের মিছিলে পেট্রলবোমা হামলার মামলা উল্লেখযোগ্য।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট, নাইকো, গ্যাটকো, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিসহ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে ৭টি। এর মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও নাশকতার দুই মামলায় জামিন পেলেই তিনি কারামুক্ত হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তার নিম্ন আদালতে আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জেলে আটক করে রেখেছে। তার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩৭টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলার মধ্যে তিনটি বাদে সব মামলায় তিনি জামিনে আছেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও কুমিল্লার একটি হত্যা মামলায় তার জামিন নেয়া বাকি আছে। এ ছাড়া অন্য মামলায় তিনি জামিনে আছেন।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here