কেন্দ্রে ভোটার অনুপস্থিতি নিয়ে অস্বস্তিতে আ.লীগ

0
353

খবর৭১ঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ২ মাস পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে উপজেলা নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের পর সবচেয়ে বড় পরিসরে নির্বাচনী উৎসব উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। কিন্তু প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ২১৬টি উপজেলা নির্বাচনে ভোটার অনুপস্থিতি ছিলো দৃষ্টিকটু। ‘কোনো কোনো ভোট কেন্দ্রে সারা দিনেও একটি ভোটও না পড়া’- হয়েছে সংবাদ শিরোনাম। আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ‘ভোট গ্রহণে দায়িত্বরতদের দোলনায় দোল খেয়ে অলস সময় পার’ করার চিত্র।

উপজেলা নির্বাচন হলেও ভোটারদের উপস্থিতি তেমন চোখে পড়ে না। ভোটের দিনে দেখা মিলছে না ভোটারের সেই চিরাচরিত দীর্ঘ লাইন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছে উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে ভোটার বিমুখ।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটারদের অনুপস্থিতি নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্ষমতাসীনদের একাধিক নেতা ভোটারদের ভোট প্রদানে এমন অনাগ্রহে অস্বস্তির কথা প্রকাশ করেছেন। যদিও পরক্ষণেই তাদের দাবি বড় দলগুলোর নির্বাচন বর্জননীতি ভোটারদের ভোটকেন্দ্র বিমুখ করেছে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলছেন, ‘বড় দলগুলো যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই ভোটারদের অনাগ্রহ সৃষ্টি হয়। নির্বাচনে যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকে মানুষ তো আগ্রহ হারাবেই। আমি বিএনপিকে বলবো আপনারা বর্জনের নীতি থেকে ফিরে আসুন। তা না হলে আপনারা মানুষের মন থেকে চিরতরে হারিয়ে যাবেন। আওয়ামী লীগ কখনই বিরোধীদল ছাড়া বাংলাদেশ প্রত্যাশা করে না। আপনারা যদি এখনই ফিরে না আসেন আপনাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে।’

ভোটার অনুপস্থিতি কারণ হিসেবে সরকারের সাবেক এ স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, ‘অনেক জায়গায় কেন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন তা আগে থেকে জনগণ বুঝতে পারছে। খেলায় যদি উত্তেজনা না থাকে শুধু আমি-আপনি কেন কেউ সেটা দেখবে না। এমন পরিস্থিতি এড়াতে বিএনপি গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতিতে ফিরে এসে মাঠের রাজনীতিতে অবস্থান গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

এ বিষয়ে কথা হয় দলটির আরেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিএনপির এমন বর্জনের রাজনীতি দেশের গণতন্ত্রকে কলুষিত করছে। সেনা শাসকের হাতে জন্ম নেয়া বিএনপি গণতন্ত্রে কখনোই বিশ্বাস করেনি। এখন তারা জনগণের কাছে নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ করতেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে অংশ নেয়া থেকে বিরত রয়েছে। এতে করে তারা জনগণের কাছ থেকে সরে যাচ্ছে। পাশাপাশি, নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রয়াস চালাচ্ছে।’

তিনি দাবি করেন, ‘তারা যদি গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতিতে ফিরে না আসে, একটা সময় মুসলিম লীগের মতো তারাও বিলীন হয়ে যাবে।’

পাশাপাশি সরকারের গত ১০ বছরের উন্নয়ন ভোটের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলেছে বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের এই প্রভাবশালী নেতা। তিনি বলেন, ‘দেশ যত উন্নত হবে, মানুষ তত ব্যস্ত হয়ে পড়বে। জাতীয় নির্বাচনের বাইরে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনগুলোতে তারা খুব একটা আগ্রহ দেখাবে না। ইউরোপের দেশগুলোর দিকে আমরা তাকালে দেখতে পাই, সময় বাড়িয়ে অনলাইনে ভোট দেয়ার সুযোগ করে দেওয়ার পরও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন গুলোতে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে না।’

আগামীতে উন্নয়ন ভোটের রাজনীতিতে প্রভাব রাখবে বলে দাবি করেন রাজ্জাক।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন উপ-নির্বাচনে ভোট পড়ে ৩০ শতাংশের কিছু বেশি। মেয়র নির্বাচিত হোন আতিকুল ইসলাম। আর গত বছর ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভোট পড়ে ৮০ শতাংশ। ওই নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো বয়কট করছে বিএনপি-জাতীয় পার্টিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here