কানায় কানায় পূর্ণ বাগেরহাটের ৮৬ আশ্রয়কেন্দ্রে

0
436

খবর৭১ঃ ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলায়। প্রচণ্ড ঝড়-বাতাসে আতঙ্কিত হয়ে শরণখোলা উপজেলাবাসী আশ্রয় কেন্দ্রমুখী হচ্ছে। উপজেলার ৮৬টি আশ্রয়কেন্দ্র সন্ধ্যার সাথে সাথেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

তবে অনেকেই জায়গা পাচ্ছে না আশ্রয় কেন্দ্রে। কেউ কেউ বৃষ্টির মধ্যে দুই-তিনটি আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা না পেয়ে অন্য আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে। কেউ কেউ অবশ্য প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনের ভবনেও আশ্রয় নিয়েছে পরিবারের শিশু-বৃদ্ধদের।
এ অবস্থায় শিশু, অসুস্থ ও প্রতিবন্ধীরা সমস্যায় পড়ছে বেশি। বাড়ির পাশের আশ্রয় কেন্দ্রে জায়গা না পেলে দূরের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। সর্বোপরি আতঙ্ক বিরাজ করছে এ দুই উপজেলাবাসীর মনে।
এরই মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
শরণখোলা উপজেলার খুড়িয়াখালী গ্রামের ইদ্রিস গাজী বলেন, বাড়ির পাশের চালিতাবুনিয়া, বকুলতলা ও শোনাতলা আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছি। কোথাও তিল রাখার জায়গা নেই। অবশেষে অনেক দূর হেঁটে তাফালবাড়ি আশ্রয় কেন্দ্রের সিঁড়ির নিচে আশ্রয় নিয়েছি।
খুড়িয়াখালী গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, সাত কিলোমিটার হেঁটে নলবুনিয়া আশ্রয় কেন্দ্রে এসে ঠাঁই হয়েছে।
খুড়িয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেয়া নাজমা বেগম বলেন, সাইক্লোন শেল্টারে ওঠার পরপরই মুশলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তিল ধারণের ঠাঁই নেই এখানে। এতলোক আসবে আশ্রয়কেন্দ্রে তা বুঝতে পারিনি। অনেকেই জায়গা না পেয়ে অন্য দিকে চলে গেছে।

রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছাদুজ্জামান মিলন বলেন, আশ্রয়কেন্দ্র গুলো পূর্ণ হয়ে গেছে। আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ ভবনও খুলে দেয়া হয়েছে বিপদগ্রস্ত মানুষের জন্য। আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছি। যাতে সাধারণ মানুষের কম ক্ষতি হয়।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার সরকার বলেন, অন্যান্য ঝড়ের থেকে এবছর মানুষ বেশি সচেতন। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও স্কুল কলেজের ভবনে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। থানার পাশে একটি কমিউনিটি সেন্টার আছে সেখানেও অনেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এরপরও আমরা চেষ্টা করছি যাতে উপজেলার সবাই নিরাপদ স্থানে অবস্থান নিতে পারে।
পুলিশ সুপার পঙ্কজচন্দ্র রায় বলেন, মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে। আমাদের থানা ভবনগুলোতেও মানুষকে নিরাপদে রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পুলিশ সদস্যের বিপদগ্রস্ত মানুষকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
শরণখোলা উপজেলা সদর থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহিন হোসেন বলেন, বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সরকারি স্বেচ্ছাসেবকরা মনিটরিং করছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। রাত ৮টা পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে সাধারণ মানুষের ক্ষয়ক্ষতি কম হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here