করোনা আতঙ্কে চীনে ১০ লক্ষাধিক উইঘুর মুসলিম

0
437
করোনা আতঙ্কে চীনে ১০ লক্ষাধিক উইঘুর মুসলিম

খবর৭১ঃ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। উত্পত্তিস্থল চীনের হুবেই প্রদেশে মৃত্যুর মিছিলে প্রতিদিনই কেউ না কেউ মারা যাচ্ছে। গতকাল সকালেও সেখানে শতাধিক লোক মারা গেছে। কভিড-১৯ নামে এই রোগে এ পর্যন্ত মারা গেছে ১ হাজার ৩৮৩ জন। বিশ্বব্যাপী এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এদিকে নতুন এই ভাইরাসটি নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে চীনের ১০ লক্ষাধিক উইঘুর মুসলিম। অভিযোগ উঠেছে দেশটির সরকার তাদের সুরক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না। খবর আল জাজিরা ও সিএনএনের।

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে যে সব উইঘুর মুসলিম রয়েছে তারা এখন এই ভাইরাসটি নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। কেননা তারা সেখানে ‘বন্দি’ অবস্থায় রয়েছেন। অনেকের মতে, তাদের এ বন্দিদশা এক ধরনের ‘কোয়ারেন্টাইনের’ মতো।

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রকাশিত তথ্য বলছে, হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করার পর জিনজিয়াং প্রদেশে ৫৫ জনের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে সেখানে মারা যাওয়ার কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে ইতিমধ্যে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহানে এই ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। এরপর থেকে চীনে এটি মহামারি আকার ধারণ করে। ভাইরাসটি চীনের ৩১ প্রাদেশিক পর্যায়ের অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এবং প্রাণহানি বাড়তে থাকায় বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

উইঘুর প্রতিনিধিরা বলছেন, তারা বিতর্কিত এ বন্দিশালায় দ্রুত করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন। আর প্রদেশটিতে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি মারাত্মক একটি ছোঁয়াচে রোগ। হাঁচি, কাশি এমনকি করমর্দনের মাধ্যমেও ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে এ রোগ।

জিনজিয়াং প্রদেশের বিতর্কিত বন্দিশালায় যথেষ্ট নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত ১০ লাখের বেশি উইঘুর মুসলিম। সেখানে জীবাণু বিনাশকারী সাবান ও বিশুদ্ধ পানির পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় এই আশঙ্কা করছেন অনেকেই। কারণ এরই মধ্যে সেখানে বেশ কয়েকজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, গণকারাগারে বন্দিদের আটকে রেখে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।

বিভিন্ন এনজিও ও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘আসলে সেখানে কী হচ্ছে সে সম্পর্কে পৃথিবীর মানুষ খুব কমই জানতে পারছে।’ তবে বেইজিং দাবি করেছে, ক্যাম্পগুলো প্রশিক্ষণাগার। আর সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় এ ধরনের প্রশিক্ষণাগার থাকা জরুরি।

উইঘুর সম্প্রদায়ভুক্ত ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী দিলনুর রেইহান বলেছেন, ‘উইঘুর সম্প্রদায়ের লোকরা কঠিন বিপদের সম্মুখীন। করোনা ভাইরাস প্রাদুভার্বের মধ্যেই আমাদের পরিবারের সদস্যরা সেখানে বসবাস করছে। আমরা জানি না তারা পর্যাপ্ত খাদ্য-পানি পাচ্ছেন কি না বা তাদের যথেষ্ট মাস্ক আছে কি না।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here