ইউনিফর্ম ছেড়ে ধুতি-পাঞ্জাবি পরছে পুলিশ

0
415

খবর৭১:ইউনিফর্ম পরা পুলিশের বদলে মন্দিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে অন্য কাউকে এ যাবৎ থাকতে দেখেনি কেউ। কিন্তু, সেই পুলিশকর্মীরা গেলেন কোথায়? আর এরাই বা কারা?

পরে জানা যায়, এখন থেকে মন্দিরের ভেতরের দায়িত্ব সামলাবেন সাদা পোশাকের ওই পুলিশকর্মীরাই। এটাই নতুন নিয়ম।

উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বারাণসী রেঞ্জের আইজি দীপক রতন জানান, গোটা মন্দির চত্বরই পুলিশের পরিভাষায় ‘রেড জোন’। সবটার দায়িত্বেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। পরিস্থিতি বিশেষে আমাদের ইউনিফর্ম ছাড়া সাদা পোশাকেও ডিউটি করতে হয়। মন্দিরের ভেতরে তেমন সাদা পোশাকের কর্মী নিয়োগেরই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কিন্তু কেন?

দীপকের দাবি, সারা দিনই বিশ্বনাথ মন্দিরে ভীষণ ভিড় হয়।

যেহেতু জায়গা খুবই কম, তাই সেখানে বাইরের ভিড় যখন আছড়ে পড়ে, সামলানো খুবই মুশকিল হয়ে যায়। ভক্তদের বেশির ভাগই জল, মিষ্টি, দুধ, প্রসাদ ইত্যাদি নিয়ে ভেতরে ঢোকেন। শিবলিঙ্গে সে সব ঢালার ফলে গর্ভগৃহের চাতাল সব সময়েই ভিজে থাকে।
ফলে ইউনিফর্ম পরে থাকা পুলিশকর্মীদের প্যান্ট-জামা গুটিয়ে রাখতে হয়। অনেক সময় ধাক্কাধাক্কিতে তাদের গায়েও সে সব পড়ে যায়। ফলে, ইউনিফর্ম পরে সেখানে কাজ করাটা খুবই সমস্যার। বরং সাদা পোশাকে কাজ করলে সুবিধা হয়।

তার ভাষায়, মন্দিরের ভেতরে তো আর জুতা, মোজা, বেল্ট পরে কাজ করা যায় না। ইউনিফর্ম পরেও ওখানে কাজ করার অনেক অসুবিধা। তাই সাদা পোশাকের ব্যবস্থা।

পুলিশের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সেখানকার পুরোহিতদের একাংশ। দীর্ঘ দিন ধরেই মন্দিরে পুজার কাজ করেন কাশী মিশ্র।

তিনি বলেন, আমরা অনেক দিন ধরেই পুলিশকর্তাদের বলছিলাম, মন্দিরের ভেতরে পুলিশকর্মীরা ধুতি-পাঞ্জাবি পরে কাজ করলে ভাল হয়। ভক্তরাও তাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন। ওরা সেটা মেনেছেন। সোমবার থেকেই মন্দিরের ভেতরে সাদা ধুতি আর হলুদ পাঞ্জাবি পরে কাজ করছেন পুলিশকর্মীরা।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই বারাণসীরই সাংসদ। আবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্যনাথ গোরক্ষনাথ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত। মোদি-যোগির শাসনামলে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এমন রূপান্তরকে অনেকেই দু’হাত তুলে স্বাগত জানাচ্ছেন। কেউ বা আবার মুচকি হাসছেনও।

রেলকর্মী পার্থ চক্রবর্তী বলেন, আমি বাইরে থেকে মন্দির দর্শন করি। ভেতরে দেবদর্শন করি না। কারণ, ওই পুলিশ। আকাচা জামাকাপড় পরে আমার গায়ে হাত দিয়ে বলবে, এগিয়ে যান…কোথাও একটা অশুদ্ধ মনে হতো নিজেকে। এ বার থেকে যাবো।

দশাশ্বমেধ ঘাটের কাছে প্রায় পঞ্চাশ বছরের বাস সেন পরিবারের। ওই পরিবারের রতনবাবু পুলিশের এই ধুতি-পাঞ্জাবি পরার কথা শুনে শুধুই হাসলেন। বললেন, কী বলি বলুন তো! মন্দির কমিটির চাপে প্রশাসন মাথা নোয়ালো বলেই মনে হচ্ছে। আর বাকিটা তো নিরাপত্তার ব্যাপার। তা নিয়ে আমার মতো সাধারণ মানুষের মন্তব্য না করাই ভালো। ফোন রাখার আগে আবারো হাসলেন তিনি।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here