আসছে নির্বাচনী প্রকল্পে প্রচার হবে প্রধানমন্ত্রীর ১০ বিশেষ উদ্যোগ

0
299

খবর ৭১:জাতীয় নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েক মাস। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগের সাফল্য প্রচারে একটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার।

‘গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে প্রচার কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক এ প্রকল্পের মধ্য দিয়ে বিশেষ উদ্যোগগুলো প্রচার করা হবে। এগুলো হল- একটি বাড়ি একটি খামার, আশ্রয়ণ, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি, নারীর ক্ষমতায়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, কমিউনিটি ক্লিনিক, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, বিনিয়োগ বিকাশ এবং পরিবেশ সুরক্ষা বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান ও আয় বৃদ্ধি।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৫৯ কোটি ৬৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা ব্যয় হবে। আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হতে পারে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২০

সালের নভেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে গণযোগাযোগ অধিদফতর।

পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ একনেকের জন্য তৈরি করা সারসংক্ষেপে বলেছেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে প্রচার কার্যক্রম শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগ বাস্তবায়ন এবং দেশব্যাপী গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে উদ্বুদ্ধকরণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসডিজি, ভিশন-২০২১ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনে সরকারকে সহযোগিতা করা সম্ভব হবে। সে বিবেচনায় প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য।’

তবে এ প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তাদের মতে, এ ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়ার উদ্দেশ্য নির্বাচন। সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘সরকারি টাকায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্যই এ ধরনের প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। এতে সমতার ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটতে পারে। তাই সবাই যাতে সময়সুযোগ পায় তা নির্বাচন কমিশনকে দেখতে হবে।’

একই ধরনের মন্তব্য করেছেন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ।

তিনি বলেন, এ ধরনের প্রকল্পকে নির্বাচনী প্রকল্প বলা যায়। এটা নির্বাচনী প্রচার ছাড়া কিছুই নয়। কেননা প্রকল্পের অর্জন নিজেই নিজের মাহাত্ম্য প্রকাশ করবে। সেখানে আলাদা করে প্রচারের জন্য প্রকল্প নেয়ার দরকার কি? উন্নয়ন প্রকল্পের অর্জন প্রচারের জন্য কোনো প্রকল্প নেয়ার কথা এই প্রথম শুনলাম, তাও আবার নির্বাচনী বছরে।’

তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ইতিমধ্যে নিুমধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে এবং ২০২১ সাল নাগাদ মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তরের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রাসহ ২০৪১ সালের উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পথে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু এখনও বেশ কিছু ক্ষেত্রে আর্থসামাজিক সমস্যা রয়েছে, যেগুলো অগ্রযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিশাল জনসংখ্যার এ দেশে অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে।

জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ কিশোর-কিশোরী। বিবাহের বয়স খুব ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ১৮ বছর বয়সের আগেই বিবাহের প্রবণতা এখনও বিদ্যমান। এ কারণে বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীদের শিক্ষা গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। দেশের অর্ধেক নারী জনসংখ্যার ১৮ বছরের আগেই বিবাহ হয়ে যায়।

ফলে কিশোরীদের সন্তান জন্মদান হার বিশ্বের উচ্চতম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়া কিশোর জনগোষ্ঠী যৌন সংক্রামক রোগ, এইচআইভি, এইডস ও মাদকাসক্তির ঝুঁকিতে অবস্থান করছে। এ ছাড়া নারীর প্রতি সহিংসতা, জেন্ডার বৈষম্য এবং যৌতুক এখনও গ্রামে গুরুতর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত।

সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এখনও শিশু অধিকারের বিষয়টি যথাযথভাবে বোধগম্য হয়ে ওঠেনি। সেই সঙ্গে দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ বর্তমানে সমাজের প্রতি চ্যালেঞ্জ।

এ প্রেক্ষাপটে সরকার ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীসহ দেশের সব মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, সন্ত্রাস দমন, জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় গঠনমূলক আপসহীন ভূমিকা ও পদক্ষেপ নিয়েছে।

এসব কর্মসূচির মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগে সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এই সফলতায় পরিতৃপ্ত না থেকে উন্নত দেশের রূপান্তরের অগ্রযাত্রায় দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী যারা গ্রামে বাস করে এবং অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি তাদের সম্পৃক্ত করে উন্নয়নকে তাদের কাছে নিয়ে যাওয়া একান্ত প্রয়োজন।

আর এ অগ্রযাত্রায় গণমাধ্যমের পাশাপাশি প্রচারণামূলক কার্যক্রমকে মাঠপর্যায়ে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দেয়ার কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ শীর্ষক আউটরিচ প্রোগ্রাম, চলচ্চিত্র নির্মাণ, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, মহিলা সমাবেশ, সঙ্গীতানুষ্ঠান এবং মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও টেলিভিশনে ক্রয়সহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here