আপিলে জামিন পেলেন নাজমুল হুদা

0
557

খবর ৭১ঃ আপিলে জামিন পেলেন নাজমুল হুদা।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের (বিএনএ) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকে জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে তার মুক্তিতে আপাতত কোনো বাধা থাকলো না।

সোমবার (২১ জানুয়ারি) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ তাকে জামিন দেন।

এর আগে চার বছরের দণ্ডের মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন নাজমুল হুদা। একইসঙ্গে জামিন আবেদনও করেছিলেন তিনি।

আদালতে নাজমুল হুদার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, মনসুরুল হক চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

পরে খুরশীদ আলম খান জানান, তার (নাজমুল হুদা) লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেছেন। একইসঙ্গে জামিনও দিয়েছেন। এখন তার এ আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি জামিনে থাকবেন।

এর আগে ৬ জানুয়ারি সকালে ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-২- এ নাজমুল হুদা আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু বিচারক কে এইচ রুহুল ইমরান তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ১৮ নভেম্বর বিএনপির বহিষ্কৃত স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী নাজমুল হুদা ও তার স্ত্রীর সাজার বহাল রেখে হাইকোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৬৭ পৃষ্ঠার রায়ে গত বছরের ৮ নভেম্বর বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ হুদা দম্পতির আপিল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ‘সরকারের উচ্চপর্যায়ে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি করা হলে তা জাতীয় স্বার্থ, অর্থনীতি ও দেশের ভাবমূর্তির জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।’

রায়ে বলা হয়, দুর্নীতি একটি অভিশাপ। সমাজের সবক্ষেত্রে দুর্নীতি দেখা যায়। দুর্নীতি সমাজের নৈতিক অবস্থা নষ্ট করে এবং সরকারি কর্মচারীর দুর্নীতি কেবল নৈতিক অবস্থাই নষ্ট করে না বরং এটি জাতীয় অর্থনীতি ও জাতীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। সরকারের উচ্চপর্যায়ে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি করা হলে তা জাতীয় স্বার্থ, অর্থনীতি ও দেশের ভাবমূর্তির জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৭ আগস্ট বিচারিক আদালতের রায়ে নাজমুল হুদার সাত বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড এবং তাঁর স্ত্রী সিগমা হুদাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা হাইকোর্টে আপিল করেন। শুনানি শেষে ২০১১ সালের ২০ মার্চ হাইকোর্ট আপিল মঞ্জুর করে সাজার রায় বাতিল ঘোষণা করেন। এতে করে ওই মামলায় খালাস পান নাজমুল হুদা দম্পতি। এর বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। এর শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ হাইকোর্টের খালাসের রায় বাতিল ঘোষণা করে পুনরায় হাইকোর্ট আপিল শুনানি করতে নির্দেশ দেন। এরপর ওই আপিলের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট ওই রায় দেন।

হাইকোর্টের রায়ে নাজমুল হুদার সাজা সাত বছর থেকে কমিয়ে চার বছরের কারাদণ্ড এবং তিন বছরের কারাদণ্ডাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে যে সময়টুকু সিগমা হুদা কারাগারে ছিলেন, তা সাজাভোগ হিসেবে গণ্য হবে বলা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here