শিক্ষা সচিব সিদ্দিক জোবায়েরকে প্রত্যাহার

0
49

দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক উত্তেজনার মধ্যেই মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরকে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব মাহফুজ আলম, যিনি ফেসবুকে এ খবর জানান।

গত সোমবার (২১ জুলাই) রাজধানীর উত্তরা এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের নিকটে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় দেশের সর্বত্র শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে আসে। ওই দুর্ঘটনায় অন্তত ৩১ জন নিহত ও ১৬৫ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষার্থী। এই জাতীয় দুর্ঘটনার পরও ওই দিন এইচএসসি পরীক্ষা চলার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার বিকেলে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার ও সচিবের এই দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঢাকার বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা আড়াইটার দিকে এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের ১ নম্বর গেট ভেঙে প্রবেশ করে। সেখানে তারা সরকারি গাড়ি ভাঙচুর চালানোর পর পুলিশ ও সেনাবাহিনী লাঠিচার্জ, কাঁদুনে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে তাদের সরানোর চেষ্টা করে। সংঘর্ষের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসংখ্য আহত হন।

বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, রাত তিনটায় এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও সেই খবর সকালে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে পৌছায়নি। অনেকেই পরীক্ষার জন্য কেন্দ্রে গিয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হন। এতে তারা শিক্ষাপ্রশাসনের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতা আরোপ করেন এবং শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের পদত্যাগ দাবি করেন।

অবশ্যই, শিক্ষার্থীদের এই দাবির প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জানান, মাইলস্টোন দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য শিগগিরই একটি কমিটি গঠিত হবে যা শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির ওপর ভিত্তি করে কাজ করবে। পাশাপাশি শিক্ষা সচিব সিদ্দিক জোবায়েরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং ন্যায্য যে কোনো দাবি পূরণের জন্য সরকার দায়বদ্ধ থাকবে।

এদিকে, আগামী ২৪ জুলাইয়ের এইচএসসি পরীক্ষা মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির প্রেক্ষিতে স্থগিত থাকবে বলে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার জানান।

সচিবালয়ের সামনের উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা এখনো ক্ষোভে ফুঁসছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা চলেছে। প্রশাসন পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে, তবে পরিস্থিতি এখনও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here