ফেনীতে প্লাবিত অঞ্চলগুলো বিদ্যুৎহীন, যোগাযোগবিচ্ছিন্ন বানভাসিরা

0
60

টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২১টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে সীমান্তবর্তী ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। প্লাবনে দুর্ভোগে পড়েছে হাজারো পরিবার। দুর্ঘটনা এড়াতে ওই দুই উপজেলার প্রায় ৩১ হাজার ২০০ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে অনেক এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দুর্গত জনগণ।

ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট, কিসমত ঘনিয়ামোড়া, উত্তর ও পূর্ব শ্রীপুর, নিলক্ষ্মী, গোসাইপুর, মন্তলা, গাবতলা, কহুমা ও জগতপুর এবং পরশুরামের ধনীকুন্ডা, শালধর ও বেড়াবাড়িয়াসহ বহু এলাকায় মোবাইল ফোনে নেটওয়ার্ক পাচ্ছেন না বাসিন্দারা। ফলে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না—বাড়ছে উদ্বেগ ও আতঙ্ক।

ফুলগাজীর জগতপুর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ পারভেজ বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকলে কিছু উপায় বের করা যায়। কিন্তু মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকলে কেউ কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে না। এতে দেশে-বিদেশে থাকা আত্মীয়রা আরও বেশি আতঙ্কে পড়ে।’

একই এলাকার আমজাদহাটের দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত বছরও একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল। কিন্তু মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো সেই পরিস্থিতি থেকে কোনো শিক্ষা নেয়নি। যদি তারা জেনারেটরের মাধ্যমে টাওয়ার সচল রাখত, মানুষ অনেক সুবিধা পেত। সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় থাকেন প্রবাসীরা।’

ফুলগাজী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম মো. হাবিবুর রহমান জানান, মানুষের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় রেখে উপজেলার ৩০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। ফুলগাজীতে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৩৮ হাজার।

অন্যদিকে পরশুরাম উপজেলার পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মো. সোহেল আকতার বলেন, এখানে ৩৩ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ৬০ শতাংশ বিদ্যুৎহীন রয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় সংযোগ দেওয়া হবে। তবে বিদ্যুৎ লাইনের বিভিন্ন স্থানে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে সংযোগ পুনঃস্থাপন সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।

বিদ্যুৎ নেই, নেটওয়ার্ক নেই—এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছেন যেসব পরিবারে কেউ অসুস্থ, কিংবা যাদের আত্মীয় প্রবাসে। দুর্যোগে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় তারা নিঃসহায় হয়ে পড়েছেন একেবারেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here