নির্বাচন যত বিলম্ব হবে দেশের সমস্যা তত বাড়বে: তারেক রহমান

0
22

‘নির্বাচন যত বিলম্ব হবে দেশের সমস্যা তত বাড়বে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সোমবার বিকালে রাজধানীতে এক মতবিনিময় সভায় দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় জরুরী প্রয়োজনীয়তার তুলে ধরে তিনি এই মন্তব্য করেন। রাজধানীর ফার্মগেইটে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ‘আমার বিএনপি পরিবার’ এর উদ্যোগে চব্বিশের ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আলোকচিত্র সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সাথে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানে দলের ভারপ্রাপ্তে চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে আহত সাংবাদিকদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।
তারেক রহমান বলেন, জনগণের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব ঠিক করবে তারা কাদেরকে দিবে। কাজেই এই বিষয়(নির্বাচন) যত দেরি হবে আমরা মনে করি, বিভিন্নভাবে ধারণা করি, তাতে করে সমস্যা বাড়বে বৈই কমবে না। আমরা জনগণের অধিকার যত দ্রুত জনগনের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারব, জনগণের অধিকার যত দ্রুত এদেশে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবৃ আমি বিশ্বাস করি তত দ্রুত আমরা দেশকে ধবংসের দ্বারপ্রান্তে থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবো। তিনি বলেন, একটি বিষয় এখানে সকলে বলেছেন, যত দেরি হবে নির্বাচনের তত বেশি বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের ঢালপালা বাড়তে থাকবে বিভিন্নভাবে সমাজের মধ্যে, বিভিন্নভাবে কথা-বার্তায়। এখনই বিভিন্ন রকম কথাবার্তা আস্তে আস্তে ছড়াচ্ছে। যারা পালিয়ে গেছে এই দেশ থেকে তারা দেশের মানুষের বিপুল পরিমান সম্পদ লুট করে নিয়ে গেছে। অবশ্যই তারা সেই সম্পদগুলো সেই ষড়যন্ত্রের পেছনে ব্যয় করবে।
তারেক রহমান বলেন, কাজেই দেশকে যদি একটি স্টেবল সিচ্যুয়েশনে ভেতরে আনতে হয়, দেশকে যদি ঐক্যবদ্ধভাবে ধরে রাখতে হয়, দেশকে যদি একটি স্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে ধরে রাখতে হয় তবে দায়িত্ব অবশ্যই জনগনের হাতে ছেড়ে দিতে হবে।
‘দেশের মালিক জনগণই এমন মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, আমরা সকল সময় মনে করি, এদেশের মূল মালিক বাংলাদেশের জনগণ। কাজেই বাংলাদেশের জনগণের সেই অধিকার আছে এই দেশ নিয়ে কি হবে না হবে এই সিদ্ধান্ত নেবার একমাত্র ক্ষমতা বাংলাদেশের মানুষের। সমগ্র পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলতে যা বুঝায় সেটি হচ্ছে নির্বাচন নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণ তাদের মতামত ব্যক্ত করে থাকেন সেটি ই্উনিয়ন পরিষদ হোক, হোক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের মতামত প্রকাশ করে থাকে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তারা কি চায়, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তার জবাব দিয়ে থাকে তারা দেশ সম্পর্কে কি বলতে চায়, রাজনীতিবিদকে তারা কি বলতে চায় সেটাও তারা নির্বাচনের মাধ্যমে বলে থাকে। জনগণের অধিকার যদি জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হয় দেশ কিভাবে কি হবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ জনগণের।
সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, আমরা আড়াই বছর আগে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। এই ৩১ দফার নিয়ে দেশের মানুষের ঘরে ঘরে যাওয়ার চেষ্টা করছি, মানুষকে বলার চেষ্টা করছি কি আমাদের সেই ৩১ দফা। এর মূল কথা বৈষম্যহীন একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ যেই বাংলাদেশের প্রত্যাশা প্রত্যেকটি মানুষের। একটি বাংলাদেশ যেখানে মানুষের রাজনৈতিক অধিকার থাকবে, যেখানে মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থাকবে। কারণ একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা না যায় সব কিছুই নষ্ট হয়ে যাবে। তিনি বলেন, মানুষের কাছে গেলে একটি কথা বেরিয়ে আসে আমরা সব কিছুই বুঝেছি, আমাদের সমস্যার সমাধান কি হবে? যেই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম প্রতিদিন যেভাবে উঠছে-নামছে সেটি মানুষের কষ্টের কারণ হয়ে গেছে। মানুষের জানার ইচ্ছা এ সমস্যার সমাধান কিভাবে করা। আজকে যেভাবে দূর্ঘটনা ঘটে বাসে-গাড়িতে, যে পরিমান মানুষ এসব দূর্ঘটনায় নিহত হয়, যে পরিমান মানুষ বিভিন্নভাবে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এটি একটি অস্বাভাবিক ব্যাপারৃ এই সমস্যার সমাধান হওয়া প্রয়োজন। আজকে দেশের বহু মানুষ সঠিকভাবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে? জনগণের অধিকার আছে তার চিকিৎসার কি হবে, বংশধরদের চিকিৎসার কি হবে? এই অবস্থা থেকে উত্তরণে একটি ‘জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার’ প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নাই বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দেশের অনেক মৌলিক সমস্যা আছে যার একটি ব্যাসিক সমাধানের পরিকল্পনা আমাদের ৩১ দফায় দিয়েছি। আমরা যদি মানুষের সমস্যার সমাধান করতে না পারি তাহলে উচ্চ কক্ষই বলুন, এক ব্যক্তি দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হবে না বলুন, আরও যথাযথ ক্ষমতার ভারসাম্য যতই যাই বলি না কেনো দিন শেষে মানুষের কোনো উপকার হবে না। গত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার আলোকচিত্র সাংবাদিকদের প্রতি সহমর্মিতা এবং সন্মান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুম্মনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ সম্পাদক আশরাফউদ্দিন বকুল, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম মহসিন, সাধারণ সম্পাদক বাবুল তালুকদার, জ্যেষ্ঠ ফটো সাংবাদিক বুলবুল আহমেদ ও তারিফ রহমান প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here