বাংলাদেশের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ শ্রীলঙ্কার

0
84

স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশি বোলারদের ওপর ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে শুরু করেছিলেন শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার। তবে নিয়মিত বিরতিতে বেশ কয়েকটি উইকেট তুলে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিল টাইগার পেসাররা। কিন্তু কুশল মেন্ডিস ও সাদেরা সামারাবিক্রমার ব্যাটিং নৈপুণ্যে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পেয়েছে এশিয়া কাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) কলম্বোর আর. প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান তুলেছে শ্রীলঙ্কা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯৩ রান করেন সামাবিক্রমা, মেন্ডিস করেন ৫০ রান। বাংলাদেশের হয়ে ৫৭ রানে ৩ উইকেট শিকার করে সেরা বোলার হাসান মাহমুদ।

এদিন বাচা-মরার লড়াইয়ের ম্যাচে টস জিতে লঙ্কানদের প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠান বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বোলিংয়ে এসে প্রথম ওভারেই পাথুম নিশাঙ্কাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন পেসার তাসকিন আহমেদ। তবে আম্পায়ারের সেই সিদ্ধান্ত রিভিউ নিয়ে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান ডানহাতি এই ব্যাটার।

এরপর আগ্রাসী মেজাজে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ব্যাট চালাচ্ছিলেন লঙ্কান ওপেনাররা। তবে ষষ্ঠ ওভারে এসে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন হাসান মাহমুদ। ডানহাতি এই পেসারের বলে উইকেটের পিছনে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন দিমুথ করুনারত্নে। বিদায়ের আগে ১৭ বলে ১৮ রান করেন তিনি।

এরপর ক্রিজে আসেন কুশল মেন্ডিস। নিশাঙ্কাকে নিয়ে দলীয় শতকও ছাড়িয়ে যান তিনি। এর মধ্যে ১৯তম ওভারে হাসানের বলে নিশাঙ্কার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় প্রথম স্লিপ ও উইকেটকিপারের মাঝামাঝি অঞ্চলে, সেখানে ডানদিকে ডাইভ দিয়েও তালুবন্দি করতে পারেননি মুশফিক। ফলে নিশাঙ্কা জীবন পান ব্যক্তিগত ৩৬ রানে।

তবে সেই জীবন পেয়েও নিশাঙ্কা শেষ পর্যন্ত ফিরেছেন হাফ সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে। শরিফুলের স্লোয়ারে তার পায়ে বল আঘাত হানলে আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু পল উইলসনের দেওয়া এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত নিয়েও ইনিংস বাঁচাতে পারেননি তিনি। ৭৪ রানের জুটি অবশেষে ভাঙেন শরিফুল। নিশাঙ্কা থেমেছেন ৬০ বলে ৪০ রান করে।

নিশাঙ্কা আক্ষেপ নিয়ে ফিরলেও ফিফটির মাইলফলক ছুঁয়েছেন কুশল মেন্ডিস। তবে এরপর আর বেশি দূর এগোতে পারেননি। শরিফুলের খাটো লেন্থের বলে আপার কাট করতে গিয়ে থার্ডম্যানে ধরা পড়েন। এর আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৭৩ বলে ৫০ রান। দুই সেট ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়ে বাংলাদেশকেও ম্যাচে ফেরান শরিফুল।

চারিথ আসালঙ্কা উইকেটে আসার পরই শরিফুলকে সরিয়ে তাসকিনকে আক্রমণে আনেন সাকিব। অধিনায়কের সেই পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন করলেন ডানহাতি এই পেসার। তাসকিনের স্লোয়ারে তুলে মারতে চেয়েছিলেন আসালঙ্কা। কিন্তু টাইমিং হয়নি। মিড অনে থাকা সাকিব তার ডানদিকে ছুটে নিয়েছেন ভালো ক্যাচ। আসালাঙ্কা থেমেছেন ২৩ বলে ১০ রান করে।

আসালাঙ্কা দ্রুত ফেরার পর ধানাঞ্জয়া ডি সিলভার কাঁধে অনেক দায়িত্ব ছিল। তবে তিনিও সামাবিক্রমাকে সঙ্গ দিতে পারেননি। ৩৭তম ওভারের প্রথম বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে গুড লেন্থে করেছিলেন হাসান। সেখানে কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ বলে ৬ রান।

এরপর দাসুন শানাকাকে সঙ্গে নিয়ে ভালোই লড়াই করেছেন সামাবিক্রমা। ষষ্ঠ উইকেটে তাদের জুটিতে বড় সংগ্রহের দিকেই এগোচ্ছিল শ্রীলঙ্কা। ২৪ রান করা শানাকাকে বোল্ড করে ৬০ রানের সেই জুটি ভাঙেন হাসান। তাতে আরও একবার ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় টাইগাররা। বাংলাদেশের সঙ্গে আগের ম্যাচেও হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন সামাবিক্রমা। এবার আরও একবার বাংলাদেশকে পেয়ে জ্বলে ওঠলেন তিনি। দারুণ কিছু শট খেলে হাফ সেঞ্চুরি ছুঁতে খরচ করেছেন মাত্র ৪৫ বল। সেঞ্চুরিটাও পেতে পারতেন। তার কপালে ছিল না বলেই হয়নি! ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে তিনি নামের পাশে যোগ করেছেন ৭২ বলে ৯৩ রান।

বাংলাদেশের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন পেসাররা। হাসান মাহমুদ ও তাসকিন আহমেদ ৩টি করে উইকেট পেয়েছেন। আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম নেন ২টি উইকেট। তাছাড়া সাকিব-নাসুম উইকেট শূন্য থাকলেও মিতব্যায়ী বোলিং করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here