শীতে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি পূরণে করণীয়

0
231

খবর ৭১: ভিটামিন ডি শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একে সানশাইন ভিটামিনও বলা হয়। এই পুষ্টি উপাদান খাবার থেকে যেমন গ্রহণ করা যায় ঠিক তেমনই সূর্যের আলো থেকেও পাওয়া যায়।

ভিটামিন ডি হাড় সুস্থ রাখতে, উদ্বেগ কমাতে ও সামগ্রিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন ডি’র পর্যাপ্ত মাত্রা শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
এই ভিটামিন ইমিউন ফাংশন উন্নত করে, বিভিন্ন সংক্রমণ ও রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এমনকি হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটায়।

এ ছাড়াও ভিটামিন ডি মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে মেজাজ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণার তথ্য মতে, ওজন কমাতেও সাহায্য করে ভিটামিন ডি। বুঝতেই পারছেন, ভিটামিন ডি শরীরের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
আর এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে শরীরে একধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে শীতে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি বেশি হয়। কারণ এ সময় আবহাওয়া থাকে কুয়াশাচ্ছন্ন। কখনো রোদ ওঠে আবার কখনো আবহাওয়া থাকে ধোঁয়াশাচ্ছন্ন।

তাই এ সময় সূর্য থেকে ভিটামিন ডি গ্রহণের পরিমাণ কমে যায়। এ কারণে সচেতন থাকা জরুরি। তবে কীভাবে বুঝবেন যে আপনার শরীরের ভিটামিন ডি এর পরিমাণ কমে গেছে?

রক্ত পরীক্ষা না করিয়েও শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি আছে কি না তা জানা যায় কয়েকটি লক্ষণ দেখেই। জেনে নিন ভিটামিন ডি কমলে শরীরে কোন কোন লক্ষণ প্রকাশ পায়-
বার্নিং টাং বা বার্নিং মাউথ সিনড্রোম

২০১৭ সালে মায়ো ক্লিনিকের ডিপার্টমেন্ট অব ডার্মাটোলজির এক সমীক্ষা অনুযায়ী, কারও শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি থাকলে তারা ‘বার্নিং টাং বা বার্নিং মাউথ সিনড্রোমে’ ভুগতে পারেন।

এই সিন্ড্রোমে ঠোঁট বা জিহ্বা অথবা মুখের নানান স্থানে পুড়ে যাওয়ার মতো ব্যথা বা জ্বালাভাব থাকে। এছাড়াও অনেকের মধ্যে অন্যান্য লক্ষণও দেখা যায় যেমন- মুখে অসাড়তা, শুষ্কতা ও অপ্রীতিকর স্বাদ। এসব কারণে খাবার খাওয়ার ইচ্ছাও কমতে শুরু করে।

ক্লান্তি ও দুর্বলতা

আপনার শরীর কি সব সময়ই ক্লান্ত ও দুর্বল লাগে? এমনটি হতে পারে ভিটামিন ডি’র অভাবে। পেশেন্ট ইউকের তথ্যমতে, শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি দেখা দিলে পেশিগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে।

এ কারণে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে বা বসা থেকে উঠে দাঁড়াতেও কষ্ট হতে পারে। এ ছাড়াও ধীরে ধীরে হাঁটা বা মাথা ঘোরার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

হাড়ে বা জয়েন্টে ব্যথা

ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুদের ‘রিকেটস’ হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে শিশু দুর্বল হয় ও তার হাড়ের স্বাস্থ্য বিকাশ হয় না। বৈজ্ঞানিকভাবে ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ করতে সাহায্য করে।

যা হাড় গঠন ও শক্তিশালী করে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দুর্বল ও নরম হাড়ের বিকাশ অস্টিওম্যালাসিয়া নামক অবস্থার সঙ্গে যুক্ত। প্রায়ই হাড়ের বা জয়েন্টে ব্যথার কারণ হতে পারে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি।

রক্ত পরীক্ষা

এছাড়া রক্ত পরীক্ষার সাহায্যে ভিটামিন ডি’র অভাব নির্ণয় করা যায়। এক্ষেত্রে দু’ধরনের পরীক্ষা আছে। তবে সবচেয়ে সাধারণ হলো ২৫-হাইড্রোক্সিভিটামিন ডি, যা সংক্ষেপে ২৫(ওএইচ)ডি নামে পরিচিত।

ভিটামিন ডি’র ঘাটতি পূরণে করণীয়

শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি পূরণে নিয়মিত সূযরশ্মির সংস্পর্শে আসুন, তবে অতিরিক্ত নয়। সপ্তাহে ২-৩ বার মুখ, হাত ও পিঠে ১০-১৫ মিনিটের জন্য সূর্যরশ্মি লাগান।

এ সময়ের মধ্যেই শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি শোষণ করতে পারবে। পাশাপাশি ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন।

দৈনিক কতটুকু ভিটামিন ডি গ্রহণ করা উচিত?

>> এক বছরের ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ৪০০ আইইউ (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট)।
>> ৭০ বছর পর্যন্ত বাচ্চা, কিশোর ও প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে ৬০০ আইইউ।
>> ৭১ বছরের উর্ধ্বে ৮০০ আইইউ।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here