মোংলা বন্দরের চ্যানেলে ডুবন্ত জাহাজের ধাক্কায় ডুবতে শুরু করেছে অয়েল ট্যাংকার

0
227

স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট : বঙ্গোপসাগরে সুন্দরবন উপকূলে বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ডের কাছে মোংলা বন্দরের চ্যানেলের ১৫ নম্বর বয়া এলাকায় শনিবার সকালে ডুবন্ত জাহাজের র‌্যাকে সাথে ধাক্কা লেগে ১৫০০ ফার্নেস অয়েল বোঝাই ‘এমটি মনোয়ারা’ নামের একটি তেলের ট্যাংকার ফেটে ডুবতে শুরু করেছে। দূর্ঘটনাকবলিত তেলের ট্যাংকার থেকে এসওএস (সেভ এন্ড সোল) বার্তা পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গেছে সুন্দরবনের হিরন পয়েন্টে পাইলট ষ্টেশনের কোস্টগার্ডের জাহাজ শহীদ মুনসুর আলী ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ওয়েল স্পিল রেসপন্স ভেসেল। দূর্ঘটনাকবলিত তেলের ট্যাংকার থেকে তেল সমুদ্রসহ বন্দর চ্যানেল ও সুন্দরবনে ছড়িয়ে পড়েছে কি না তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এই তেলের ট্যাংকারটি চট্টগ্রাম থেকে ফার্নেস অয়েল নিয়ে মোংলা বন্দর চ্যানেল দিয়ে খুলনার দৌলতপুরে যমুনা অয়েল ডিপোতে যাচ্ছিল। কোস্টগার্ড ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ উদ্ধার অভিযান চালালেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তেলের ট্যাংকারটি উদ্ধার করা যায়নি। আবুল কালাম অয়েল সাপ্ল্য়াার লিমিটেড কোম্পানীর এই ট্যাংকারটির মালিক চট্টগ্রামের আবুল কালাম নামের এক ব্যবসায়ির বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে মোংলা বন্দরের জনসংযোগ বিভাগ।
এরআগে ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনের শেলা নদীতে ৩ লাখ ৫৭ হাজার লিটার ফার্নেস অয়েল বোঝাই একটি তেলের ট্যাংকার ডুবোচরে ধাক্কা খেয়ে তলা ফেটে ডুবে যায়। ওই সময়ে ফার্নেস অয়েল পানিতে ছড়িয়ে পড়লে গভীর সংকটে পড়ে সুন্দরবনে জীববৈচিত্র্য। ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড সুন্দরবনের প্রানপ্রকৃতি রক্ষায় জাতিসংঘের ইউনেস্কোর বিশেষজ্ঞদের ছুটে আসতে হয় সুন্দরবনে। সুন্দরবনের হিরন পয়েন্ট ও বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ডের কাছে ১৫০০ ফার্নেস অয়েল বোঝাই ‘এমটি মনোয়ারা’ নামের একটি তেলের ট্যাংকার ফেটে ডুবতে শুরু খবরে আবারো উদ্বেয় ও উকন্ঠা দেখা দিয়েছে। এবিয়য়ে সুন্দরবন নিয়ে কাজ করা পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাইন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম তার উদ্বেয় ও উকন্ঠা কথা জানিয়ে সুন্দরবনের মধ্যদিয়ে ফার্নেস অয়েলসহ এই ম্যানগ্রোভ বনের জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর সব ধরনের পন্য পরিবহনে অয়েল ট্যাংকার ও লাইটার জাহাজ চলাচল বন্ধের দাবী জানান। এটা করা না হলে সুন্দরবনের প্রানপ্রকৃতি বারবার ক্ষতিগ্রস্থ হবে। অস্তিস্ত সংকটে পড়বে সুন্দরবন। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে ডুবতে থাকা এই ফার্নেস অয়েল বোঝাই তেরের ট্যাংকারটি উদ্ধারে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও তেলের ট্যাংকারটির মালিকের প্রতি আহবান জানান।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মো. মাকরুজ্জামান মুন্সি জানান, শনিবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের সময়ে আইল্যান্ডের কাছে মোংলা বন্দরের ১৫ নম্বর বয়া এলাকায় মুল চ্যানেলে বাইরে গিয়ে ডুবন্ত জাহাজের র‌্যাকে সাথে ধাক্কা লেগে ধাক্কা লেগে তেলের ট্যাংকারটির বালাচ ট্যাংক ফেটে যায়। এর পরপরই দূর্ঘটনাকবলিত তেলের ট্যাংকার থেকে বার্তা পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গেছে সুন্দরবনের হিরন পয়েন্টে পাইলট ষ্টেশনের কোস্টগার্ডের জাহাজ শহীদ মুনসুর আলী ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ওয়েল স্পিল রেসপন্স ভেসেল। ঘটনাস্থলে যাওয়া বন্দরের ওয়েল স্পিল রেসপন্স ভেসেল থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর দূর্ঘটনা কবলিত তেলের ট্যাংকার থেকে তেল নিঃসরণ হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করবে। এরপর সে অনুযায়ী তেলের ট্যাংকারে মজুদকৃত তেল অন্য তেলের ট্যাংকারে স্থানান্তরের ব্যবস্থা নিয়ে দূর্ঘটনাকবলিত তেলের ট্যাংকার উদ্ধার করা হবে জানায় মোংলা বন্দর। কোস্টগার্ড ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ উদ্ধার অভিযান চালালেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তেলের ট্যাংকারটি উদ্ধার করা যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন বন্দরের এই কর্মকর্তা।
এদিকে সন্ধ্যায় মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে ১৭ ডিসেম্বর সকালে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা দূর্ঘটনাকবলিত ফার্নেস অয়েল বোঝাই ট্যাংকারটির ১৬ জন ক্রু নিরাপদ রয়েছে। কোস্টগার্ড জাহাজ বিসিজিএস মনসুর আলীসহ বিসিজি আউটপোস্ট দুবলা ও বিসিজি স্টেশান কোকিলমনি থেকে আরো ২টি উদ্ধারকারী দল, বোট ও সাবমার্সিবল পাম্পসহ ঘটনাস্থলের উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। কোস্টগার্ড সদস্যেরা জাহাজটির সম্মুখে সাবমার্সিবল পাম্পের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে পানি অপসারন চলছে। ট্যাংকার হতে ফার্নেস অয়েল আনলোডের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি উপযুক্ত খালি ট্যাংকার প্রেরণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here