মোল্লাহাটে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নতুন জীবন পেল ৭০ অতিথি পাখি

0
272

বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোল্লাহাটে শিকারিদের হাত থেকে উদ্ধার করে ৭০ টি অতিথি পাখি অবমুক্ত করেছে উপজেলা প্রশাসন। সোমবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে মোল্লাহাট উপজেলা পরিষদ চত্বরের পুকুর ঘাটে কালকুচ, হাসপাখি, কাইনসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৪০টি পাখি অবমুক্ত করা হয়। এর আগে ভোরে মোল্লাহাট উপজেলার কোদালিয়া বিলে অভিযান চালিয়ে শিকারিদের হাত থেকে ৪০টি পাখি উদ্ধার করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ওয়াহিদ হোসেন ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) অনিন্দ্য মন্ডল। এসময় পাখি ধরা ফাঁদ, সাউন্ডবক্স, ব্যাটারি, পাখির ডাক রেকর্ড করা সিডিসহ দুইজনকে আটক করে উপজেলা প্রশাসন। এর আগেও বিভিন্ন সময় কোদালিয়া ও মেহেরপুর বিল থেকে অন্তত ৩০টি পাখি উদ্ধার করে অবমুক্ত করেছে উপজেলা প্রশাসন।
আটককৃতরা হলেন, মোল্লাহাট উপজেলার আড়ুয়াডিহি গ্রামের বিষ্ণনাথ বারইয়ের ছেলে রিপন বারই(৩৮) এবং একই গ্রামের বলাই রায়ের ছেলে সরত রায় (৩৬)। পরবর্তীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে রিপন বারইকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং সরত রায়কে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) অনিন্দ্য মন্ডল। অবমুক্ত পাখির মধ্যে কাইন, কালকুচ, হাসপাখি, বক ও ডুমখুর রয়েছে।
পাখি অবমুক্তের সময়, মোল্লাহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুল আলম ছানা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ওয়াহিদ হোসেন, সহকারি কমিশনার (ভূমি) অনিন্দ্য মন্ডল, ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
মোল্লাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ওয়াহিদ হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোদালিয়া বিলে অভিযান চালিয়ে ৪০টি পাখি ও পাখি ধরার ফাঁদ, সাউন্ডবক্স, ব্যাটারীসহ দুইজনকে আটক করেছি৷ আটককৃতদের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা ও জেল দেওয়া হয়েছে। অতিথি পাখি ও বন্য প্রাণী রক্ষায় ভবিষ্যতেও এধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান ইউএনও।
পাখি শিকারের কৌশল সম্পর্কে ইউএনও মো. ওয়াহিদ হোসেন বলেন, নাইলেনের সুতোর তৈরি ফাঁদ দিয়ে তারা পাখি শিকার করে থাকে। বড়শিতে জীবিত মাছ গেথেও পাখি স্বীকার করে তারা। বর্তমানে পাখি শিকারের জন্য অভিনব কৌশল অবলম্বন আবিস্কার করেছে শিকারীরা। ইন্টারনেট থেকে পাখির ডাক ডাউনলোড করে, পেনড্রাইভে নিয়ে ভোররাত থেকে বিলের মধ্যে বাজাতে থাকে শিকারিরা। সাউন্ডবক্সের পাশে ফাঁদ পাতা থাকে। সাউন্ডবক্সে ডাক শুনে পাখি খুজতে এসে ফাঁদে আটকে যায় অতিথি পাখিরা। এই কৌশলে অন্যসব পদ্ধতির থেকে বেশি পাখি পাওয়া যায়।
মোল্লাহাট উপজেলার কোদালিয়া, মেহেরপুরসহ কয়েকটি বিলে সারাবছরই অতিথি পাখিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি থাকে। উপজেলার কিছু দুষ্ট লোক এসব পাখি শিকার করে মোল্লাহাট, চিতলমারী, বাগেরহাট, খুলনাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here