পাঞ্জশিরে মাসুদ বাহিনীর পতন যেভাবে

0
190

খবর৭১ঃ তালেবান সমগ্র আফগানিস্তানের দখল নিলেও পাঞ্জশির প্রদেশে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন আহমদ মাসুদ বাহিনী। তার সঙ্গে ছিলেন আফগানিস্তানের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ ও সাবেক প্রতিরক্ষমন্ত্রী বিসমিল্লাহ খান।

সোমবারের আগ পর্যন্ত পাঞ্জশির ছিল অজেয়। ১৯৮০ এর দশকে বিদেশি বাহিনী পাঞ্জশির দখল করতে পারেনি। ১৯৯০ এর দশকে তালেবান আফগানিস্তান শাসন করলেও পাঞ্জশির নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। এই অঞ্চলে সোভিয়েত বাহিনী ও তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন মাসুদের বাবা শাহ আহমদ মাসুদ। তাকে পাঞ্জশিরের সিংহ হিসেবে অভিহিত করা হয়। ২০০১ সালে আল কায়েদার গুপ্ত হামলায় তিনি নিহত হন।

পাঞ্জশিরে আহমদ মাসুদের বিদ্রোহ ঘোষণার পর অঞ্চলটির ভাগ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় বিভিন্ন সমীকরণ কষা হচ্ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, তালেবান সহজে পাঞ্জশির দখল করতে পারবে না।

কিন্তু রোববার রাতে পাঞ্জশিরের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। সোমবার সকালে তালেবানের মুখপাত্র জাবিনুল্লাহ মুজাহিদ পাঞ্জশির বিজয়ের ঘোষণা দেন। প্রদেশটি দখলের পর তালেবান যোদ্ধারা গভর্নর ভবনের সামনে ছবিও তোলেন।

পাঞ্জশির দখলের পর প্রশ্ন উঠেছে, কেন মাসুদ বাহিনী আরও শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারল না এবং কোন কৌশল প্রয়োগ করে তালেবান পাঞ্জশির দখল করেছে।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, তালেবান পাঞ্জশিরের টেলিফোন লাইন এবং ইন্টারনেট কেটে দেয়। এ কারণে বিদ্রোহী যোদ্ধারা যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেনি। একটি ফ্রন্ট থেকে আরেকটি ফ্রন্টের যোদ্ধারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন, তারা কোনো তথ্য পাচ্ছিলেন না।

পাঞ্জশিরে তালেবানের হাতে বিদ্রোহী বাহিনীর মুখপাত্র ও আহমদ মাসুদের বন্ধু ফাহিম দাস্তি নিহত হলেও আহমদ মাসুদ এখন কোথায় আছেন এবং কী অবস্থায় আছেন সে সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তালেবান পাঞ্জশির বিজয় ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক অডিও বার্তায় আহমদ মাসুদ তার বাহিনীর লোকদের যুদ্ধ চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেন। মাসুদ অভিযোগ করেন, তালেবান বিদেশি শক্তির সহায়তায় পাঞ্জশির দখল করেছে। বিদেশি শক্তি বলতে তিনি পাকিস্তানকে বুঝিয়েছেন।

১৯ মিনিটের ওই অডিও বার্তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিন্দা করে আহমেদ মাসুদ বলেন, তালেবানকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বৈধতা দিচ্ছে। এ কারণে তালেবানের সামরিক ও রাজনৈতিক আত্মবিশ্বাস বাড়ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, তালেবান পূর্বের তুলনায় এবার অনেক শক্তিশালী। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই তারা উঠেপড়ে লেগেছে। এছাড়া তালেবানের দখলে ব্যাপক পরিমাণে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বাধুনিক সমরাস্ত্র রয়েছে। এসব কারণে পাঞ্জশির দখল তাদের জন্য খুব বেশি কঠিন ছিল না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here